ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

অন্যের ঘরে উঁকি, জুতার মালা পরিয়ে গ্রাম ঘুরিয়ে শাস্তি

শাহীন রহমান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৪২, ২৮ এপ্রিল ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
অন্যের ঘরে উঁকি, জুতার মালা পরিয়ে গ্রাম ঘুরিয়ে শাস্তি

পাবনা প্রতিনিধি : পাবনার চাটমোহর উপজেলায় জানালা দিয়ে অন্যের ঘরে উঁকি দেয়ার অপরাধে এক ব্যক্তির গলায় জুতা ও ঝাড়ুর মালা পরিয়ে গ্রাম ঘুরানো হয়েছে।

শনিবার বিকেলে উপজেলার ছাইকোলা কারিগরপাড়া গ্রামে সালিশে এই শাস্তির রায় দেয়া হয়। রোববার বিষয়টি জানাজানি হয়।

ঘটনার মোবাইল ফোনে ধারণকৃত ভিডিও ফেসবুকসহ স্যোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। এ ধরনের শাস্তিতে অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পেশায় দর্জি ও ফ্লেক্সিলোড ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম শুক্রবার রাতে তার প্রতিবেশী দিনমজুর নাজিম উদ্দিনের শোবার ঘরের জানালা দিয়ে উঁকি দেয়। এ সময় নাজিমের স্ত্রী ঘরে একাই ছিল। উঁকি দেয়ার বিষয়টি প্রতিবেশী এক গৃহবধূ দেখে ফেলে এবং এর প্রতিবাদ করলে রবিউল তার গলা চেপে ধরে। পরে ওই মহিলার চিৎকারে লোকজন এগিয়ে এলে রবিউল পালিয়ে যায়।

এ ঘটনার পর দিনমজুর নাজিম গ্রামের মুরব্বিদের কাছে অভিযোগ দিলে শনিবার বিকেলে সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে সালিশ বসে। সালিশে উঁকি দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করায় রবিউলকে জুতা ও ঝাড়ুর মালা পরিয়ে গ্রাম ঘোরানোর রায় হয়।  

এরপর ছাইকোলা ইউনিয়ন পরিষদের চৌকিদার তৈয়ব হোসেন রবিউল ইসলামকে দিয়ে শাস্তি কার্যকর করেন। ঘটনার সময় বেশ কয়েকজন মোবাইলে তা ভিডিও করে পরে ফেসবুকে শেয়ার করলে ভাইরাল হয়ে যায়।  

বিষয়টি জানতে চেয়ে রোববার দুপুরে রবিউল ইসলামের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তিনি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

এ ব্যাপারে সাবেক ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর দুইপক্ষকে নিয়ে বসেছিলেন। সালিশে রবিউল অপরাধ স্বীকার করায় গ্রামের প্রধানরা তাকে জুতার মালা পরিয়ে পাড়া ঘোরাতে রায় দেন।

পুলিশকে না জানিয়ে বিচার-সালিশ করে এমন রায় দেয়া এবং ভিডিও করার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘আমি একা এই রায় দেইনি। সবাই মিলে রায় দিয়েছেন। আর কারা ভিডিও করেছেন, এটা আমার জানা নেই।’’

চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেখ মো. নাসির উদ্দিন বলেন, কেউ তাকে এমন বিষয়ে জানায়নি বা কোনো অভিযোগ পাননি।

চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সরকার অসীম কুমার জানান, গ্রামের মুরব্বিরা বিষয়টি গ্রাম আদালত বা থানার মাধ্যমে সুরাহা করতে পারতেন। তিনি বিষয়টি শোনার পর থানার ওসিকে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।



রাইজিংবিডি/পাবনা/২৮ এপ্রিল ২০১৯/শাহীন রহমান/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়