ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

সফল হতে যখন যা করবেন (প্রথম পর্ব)

এস এম গল্প ইকবাল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:২৯, ২৫ মে ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সফল হতে যখন যা করবেন (প্রথম পর্ব)

প্রতীকী ছবি

এস এম গল্প ইকবাল : সফল শব্দটি শুনতে যতটা কোমল মনে হয়, আসলে সফলতার পথ ততটা মসৃণ নয়। আজকে যারা সফল, তারা অনেক বন্ধুর পথ পাড়ি দিয়ে সফলতা নামক সোনার হরিণের দেখা পেয়েছেন। আপনিও সফল হতে পারেন, যদি অন্তরে কিছু মন্ত্র পুষে উপযুক্ত সময়ে ব্যবহার করেন। আপনার স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রাখুন, পিছিয়ে যাবেন না এবং সফলতার মন্ত্রগুলো প্রয়োগ করতে চেষ্টা করুন। নিজের ওপর আস্থা রাখুন- একদিন সফল হবো, হবো, হবো। সফল হওয়ার জন্য ১৪ মন্ত্র নিয়ে দুই পর্বের প্রতিবেদনের আজ থাকছে প্রথম পর্ব।

* যখন রাগ হয়...
যদি আপনার রাগে ফেটে পড়ার প্রবণতা থাকে, তাহলে আপনার রাগের উপসর্গ শনাক্ত করুন। আপনার হার্ট রেট দ্রুত হতে পারে অথবা আপনার শরীর টাইট অনুভব হতে পারে। যদি বুঝতে পারেন যে এসব উপসর্গ আসছে, তাহলে থামুন ও গভীর শ্বাস নিন। গভীর শ্বাস মস্তিষ্ককে শান্ত হতে সংকেত পাঠায়। এবার ঠান্ডা মাথায় পুরো পরিস্থিতি শুরু থেকে স্মরণ করুন। যদি আপনার ভুল হয়ে থাকে, তাহলে ভুলভ্রান্তি জীবনেরই একটি অংশ মেনে নিয়ে নিজেকে শোধরানোর চেষ্টা করুন। যদি আপনার রাগের উৎপত্তি কারো ভুল বা আচরণের কারণে হয়ে থাকে, তাহলে তাকে ক্ষমা করে দেওয়ার চেষ্টা করুন- ভাবুন যে সেও একটা মানুষ, তারও ভুল হতে পারে।

* যখন সমস্যায় পড়েন...
যখন সমস্যা দেখা দেয়, তখন আমাদের সহজাত প্রবৃত্তি হচ্ছে নিজেকে রক্ষার মোডে নিয়ে যাওয়া এবং অন্যকে দোষারোপ করা। কিন্তু অন্যকে দোষারোপ করলেই সমস্যা থেকে বের হওয়া যায় না, বরং সমস্যাটি আরো বড় আকারে রূপ নিতে পারে। সমস্যাটি সমাধানের প্রচেষ্টাকে প্রাধান্য দেওয়া উচিত, যে কারণেই সমস্যাটির সূত্রপাত হয়ে থাকুক না কেন। সমস্যা সমাধানের পর নিজেকে আরো প্রস্তুত করুন ও উপায় খুঁজুন যেন ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে। আপনার সমস্যার প্রতি আপনিই ভালো সাড়া দিতে পারবেন, তাই যথাসম্ভব নিজের সমস্যা নিজেই সমাধান করুন। সমস্যার প্রকৃতির ওপর ভিত্তি করে প্রয়োজনে অন্যের সাহায্য নিন।

* যখন বিরক্তি আসে...
আমাদের জীবনে এক বা একাধিক লোকের আবির্ভাব ঘটতে পারে, যাদের কাজ বা জীবনের লক্ষ্য বিরক্তির উদ্রেক করতে পারে। কিন্তু আপনার বিরক্তি প্রকাশ করতে যাবেন না, এর পরিবর্তে ভাবুন যে এ লোকটি আমার শিক্ষক। নেতিবাচক শক্তিকে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগে রূপান্তর করুন। কারো দ্বারা বিরক্তির উদ্রেক হতে পারে আপনার ধৈর্য্যের পরীক্ষা অথবা এটি হতে পারে যোগাযোগ দক্ষতা উন্নয়নের উপায়। আপনারা দুজন রাতারাতি সর্বোত্তম বন্ধু হতে পারবেন না, কিন্তু আপনার সহনশীলতা আপনাদের সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটাবে।

* যখন কাউকে অ্যাসাইনমেন্ট দেন...
যদি আপনি ইমার্জেন্সি রেসপন্ডার অথবা মিলিটারি অফিসার না হয়ে থাকেন, তাহলে কোনো কাজ করতে আপনার কর্মচারী বা সহকর্মীদেরকে আদেশ দেয়ার প্রয়োজন নেই। এর পরিবর্তে বলুন, ‘আপনার এটা করা প্রয়োজন’ অথবা জিজ্ঞেস করুন, ‘আপনি কি এ কাজটি করতে আগ্রহী?’ আপনি কিভাবে বলছেন তার ওপর ভিত্তি করে কোনো কর্মচারী বা সহকর্মীর কাজ করার স্পৃহা বাড়তে পারে বা কমতে পারে। আপনি যখন কাউকে কোনো কাজ করতে পারবে কিনা জিজ্ঞেস করবেন, তখন তার মধ্যে কাজটি ভালোভাবে করার জন্য তাড়না সৃষ্টি হবে।

* যখন কোনোকিছু ঠিকঠাকভাবে হতে থাকে...
বিজ্ঞান বলছে যে, প্রশংসায় সফলতার হার বা মাত্রা বৃদ্ধি পায়। যখন আমরা আমাদের কাজের স্বীকৃতি পাই, তখন মস্তিষ্কে ডোপামিন নামক হরমোন নিঃসরিত হয়, যা আমাদেরকে গর্ব অনুভব করতে সহায়তা করে। তাই পরিকল্পনা মতো অথবা সঠিকভাবে কাজ সম্পন্ন হলে বা হতে থাকলে নিজেকে বাহবা দিন বা কর্মচারী-সহকর্মীর প্রশংসা করুন। আপনার কর্মচারী বা শিশু যে কাজটি ভালোভাবে করেছে বা করছে তার ওপর ভিত্তি করে প্রশংসা করুন, শুধুমাত্র ‘ভালো হয়েছে’ বললেই হয় না। কাজের স্বীকৃতি বা প্রশংসা মনোবল কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয়, যার ইতিবাচক প্রভাব পরবর্তী কাজের ওপর পড়ে।

* যখন অনেকগুলো কাজ থাকে...
নিখুঁতভাবে কাজ করতে পারলে কার না ভালো লাগে। এতে মন প্রফুল্ল হয়ে ওঠে। কিন্তু সমস্যা হলো আপনার অনেকগুলো কাজ রয়েছে এবং আপনি মনে করেন যে এ কাজগুলো আপনি ছাড়া আর কেউ সঠিকভাবে করতে পারবে না। এদিকে হাতে সময়ও বেশি নেই। এক্ষেত্রে আপনার মানসিকতায় পরিবর্তন আনতে হবে হবে যে কোনো একটি কাজ ভালোভাবে সম্পন্ন করতে পারে এমন অনেক লোক রয়েছে। প্রথমে খুঁজে বের করুন যে আপনি কোন কাজটি সবচেয়ে ভালোভাবে করতে পারবেন এবং সেটাই করুন। অন্য কাজগুলো অন্যান্য লোকের দায়িত্বে দিয়ে দিন। লেখক এম. জে. রায়ান বলেন, ‘আপনার মেধা, সময় ও মনোযোগ হলো সীমিত পুঁজি।’ তাই আপনার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজটিতে বেশি সময় দিন ও অন্য কাজগুলো করিয়ে নিন।

* যদি কোনো কাজে দক্ষতা না থাকে...
দুশ্চিন্তা আপনার সমস্যার সমাধান করবে না অথবা কাজের গতি বাড়াবে না। যদি কোনো কাজে আপনার দক্ষতার ঘাটতি থাকে, তাহলে আউটসোর্স করুন অর্থাৎ কাজটি আপনার টিমের বাইরের লোক দ্বারা করিয়ে নিন। আপনাকে দুশ্চিন্তায় ফেলে এমন পরিস্থিতি (যেমন- ডেডলাইন চলে যাওয়া অথবা ক্লায়েন্ট হারানো) এড়াতে আউটসোর্স কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। আপনি যে সমস্যায় আটকে আছেন, আউটসোর্স তার সমাধান সহজেই দিতে পারে।

(আগামী পর্বে সমাপ্য)

তথ্যসূত্র : রিডার্স ডাইজেস্ট



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৫ মে ২০১৯/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়