ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

প্রতিদিন ২০ ওভার বোলিং করছি : লিখন

আমিনুল ইসলাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:০৭, ৬ মে ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
প্রতিদিন ২০ ওভার বোলিং করছি : লিখন

ক্রীড়া প্রতিবেদক : ধূমকেতু হয়ে এসেছিলেন তিনি। অল্প বয়সেই হইচই ফেলে দিয়েছেন। কিন্তু আস্তে আস্তে পাদপ্রদীপের আলো থেকে দূরে চলে গেলেন। জাতীয় দল থেকে বাদ পড়লেন। এমনকী ঘরোয়া ক্রিকেটেও খেলার সুযোগ পাচ্ছেন না তিনি। বলছি জুবায়ের হোসেন লিখনের কথা। এই লেগ স্পিনার নিজেকে ফিরে পেতে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। প্রতিদিন ২০ ওভার করে বল করছেন। রানিং করছেন, জিম করছেন। ওজন কমিয়ে আগের চেয়ে ফিট হয়েছেন। আজ রোববার তার চাওয়া, ভুল, শুধরানোর সুযোগ, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন তিনি। তারই চুম্বক অংশ তুলে ধরা হল :

প্রশ্ন : আবার অনুশীলনে ফিরেছেন, কী কী করছেন?
লিখন :
এক মাসের বেশি হচ্ছে আমি কাজ করতেছি। রানিং করছি, জিম করছি। প্রতিদিন তো বোলিং থাকছেই। এখন অনুশীলন অনেক ভাল হচ্ছে। আগে এতটা ফিট ছিলাম না। এখন বডিও ফিট হয়েছে অনেকটা, ওজনও কমছে। অনুশীলন সুবিধা পাচ্ছি। শুক্রবার দিনও আমাকে উইকেট দেওয়া হয়। সব কিছু মিলিয়ে ভালো হচ্ছে।

প্রশ্ন : বোর্ড থেকে সুবিধা পাচ্ছেন কেমন? আর বোলিংয়ের জায়গা থেকে আত্মবিশ্বাস কতোটা বেড়েছে?
লিখন :
বোর্ড কিন্তু সব খেলোয়াড়দের ফ্যাসিলিটি দেয় না। আমাকে সবরকম সুবিধা দিচ্ছে। আমি গত বছর ঘরোয়া লিগেও খেলিনি। আমাকে এইচপিতে রাখছে। বোর্ডের প্রতি আমি অনেক কৃতজ্ঞ যে তারা আমাকে অনেক হেল্প করছে। আমার প্রতি তাদের যে প্রত্যাশা আমিও চেষ্টা করব সেটার মান রাখতে।

 



প্রশ্ন : প্রতিদিন কি পরিমাণ বোলিং করছেন এখন?
লিখন :
প্রতিদিন মিনিমাম ২০ ওভারের মতো বোলিং করি শাহীন (হুমায়ুন কবির) ভাইকে নিয়া। শাহীন ভাই যেভাবে বলছে সেভাবে অনুশীলন করে যাচ্ছি। বোলিংয়ের গতি, একুরেসি এখন অনেক ভালো হচ্ছে।

প্রশ্ন : বোলিংয়ে স্বাচ্ছন্দবোধ করছেন কিনা?
লিখন :
আসলে আমিও ফিল করি, সবাই বলেও আমার মধ্যে ভালো কিছু করার গুনটা আছে। যদি কঠোর পরিশ্রম করি, চেষ্টা করি ভালো কিছু দিতে পারব। আমার মূল যে সমস্যাটা আত্মবিশ্বাস একটু ঘাটতি থাকে। যেহেতু ঘরোয়া লিগে খেলিনি। যদি আত্মবিশ্বাসটা ফিরে পাই। আগে যেটা হত ম্যাচ খেলা কম হত, এখন ছোট বড় যেখানেই পাই ম্যাচ খেলতেছি।

প্রশ্ন : রিস্ট স্পিনার ভালো করছে সারা পৃথিবীতে, এই জায়গায় আক্ষেপ আছে কিনা?
লিখন :
সব জায়গায় আসলে লেগ স্পিনার আছে, ভালোও করতেছে। আমারও আক্ষেপ লাগে যে আমিও তো কিছু দিতে পারতাম। তবে সময় আসলে শেষ হয়ে যায়নি। যদি আমি চেষ্টা করি আমি অবশ্যই পারব ইনশাল্লাহ। যদি সুযোগ আসে চেষ্টা করব দলের জন্য, দেশের জন্য ভালো কিছু করার।

 

প্রশ্ন : টি-টোয়েন্টিতে সেরা পাঁচে সবাই লেগ স্পিনার। সব মিলিয়ে লেগ স্পিনারদের জয়জয়কার। এই জায়গায় থাকতে না পারার কোনো আক্ষেপ কাজ করে কী?
লিখন :
আমার মধ্যে যদি ওইরকম প্রতিভা না থাকত তাহলে এত দ্রুত জাতীয় দলে খেলার সুযোগ হতো না।  যারা আছেন কোচ, নির্বাচক সবাই বুঝেশুনেই কিন্তু আমাকে নিয়েছিলেন। প্রতিভা ছিল তবু হয়তোবা আমার ঘাটতি ছিল। হয়তো পরিশ্রম কম করতাম। তখন পরিণত ছিলাম না। অনেকজন বলার পরেও করতাম না অনেক কিছু। এখন বুঝতে পারছি যে আমার কি ভুলগুলো ছিল। দল থেকে বাদ পড়ার পর বুঝেছি। খারাপ সময় না এলে আসলে মানুষ ভালোটা বুঝে না। খারাপ সময় এসেছে, ভুলগুলো বুঝেছি। আমার সুযোগ আসলে চেষ্টা করব ভুলগুলো না করতে।

প্রশ্ন : ঘরোয়া ক্রিকেটে চান্স না পাওয়ার কারণ হিসেবে কোনটাকে দেখছেন?
লিখন :
এখানে তো আমার হাত নাই। হয়ত আমার কোন ভুল আছে যে কারণে আমাকে ঘরোয়া লিগে খেলাচ্ছে না। হয়ত টিম কম্বিনেশনের কারণে হোক বা যে কারণেই হোক আমার উপর ভরসা করতে পারছে না। আমি কাউকে দোষ দেব না। হয়ত আমারই ভুল।

প্রশ্ন : সিনিয়র ক্রিকেটারদের সহযোগিতা কেমন পাচ্ছেন?
লিখন :
সিনিয়র ক্রিকেটারদের সঙ্গে আমি খুব কৃতজ্ঞ। সব সময় আমাকে সাপোর্ট করছে। মাশরাফি ভাই, রিয়াদ ভাই, সাকিব ভাই, তামিম ভাই কখনো আমাকে নেতিবাচক কিছু বলেননি। সব সময় ভালো কথা বলছেন। হয়ত আমারই কোথাও ভুল ছিল। তারা যেভাবে বরাবর সাপোর্ট করছেন, আশা করি তেমনটা করে যাবেন।

 



প্রশ্ন : এতোদিনে যা কাজ করলেন তাতে নিজের উপর কতটা আত্মবিশ্বাসী?
লিখন :
আমি আত্মবিশ্বাসী। আসলে খুবই ভালো হচ্ছে। আমি যদি ম্যাচ খেলি দুই তিনটা আমার আত্মবিশ্বাস পুরো আবার ফিরে আসবে। যেখানে পারি ম্যাচ খেলতেছি এবং ভালো করতেছি। আমার বোলিং যারা দেখছে, যারা ব্যাট করছে সবাই বলছে গতি, একুরেসি সব ভালো হচ্ছে।

প্রশ্ন : আমাদের ক্লাব পর্যায়ে লেগ স্পিনার না খেলানোর সংস্কৃতিটা কি চেঞ্জ হওয়া উচিত?
লিখন :
এটা ওদের ব্যাপার। এত টাকা দিয়ে ক্লাব করে। আমি খারাপ করব আর আমাকে নেবে এটা তো হয় না। আমাকে ভালো কিছু করতে হবে। বোর্ড থেকে সব সাহায্য করে। ঘরোয়া লিগে আমি হয়তো খেলতে পারিনি। যেমন এবার বিপিএলে ম্যাককালাম দেখে বলছে- ‘তুমি কয় উইকেট পেয়েছো’। আমি যখন বললাম আমি কোন দলে নাই তখন টম মুডিও অনেক কিছু জিজ্ঞেস করলেন (অবাক হলন)। আমাদের মোহামেডানে বিপুল শর্মা বলছিল—তুমি যদি ইন্ডিয়াতে থাকতা আইপিএলে আরামে খেলতা। ও নিজ থেকেই, শাহীন ভাইরে বলছে, আমারেও বলছে। তোমার অনেক চাহিদা থাকত। এসব কথা আসলে আমাকে আত্মবিশ্বাস দেয়।

প্রশ্ন : বিসিবি যেভাবে সুযোগ দিচ্ছে তাতে আপনার কি মনে হয় প্রাথমিক দলে আসবেন?
লিখন :
এটা তো আসলে উনাদের ব্যাপার। আমি তো কঠোর পরিশ্রম করছি। আশা তো করি। বোর্ড থেকে আমাকে সাপোর্ট করছে। আমি মনে করি তারা যেটা করবে আমার ভালোর জন্য করবে। সুযোগ আসতে পারে, নাও পারে। যেটা করছি উন্নতি হচ্ছে। চেষ্টা করব যা করছি সেটা করে যাওয়া এবং সুযোগ আসলে সেটা কাজে লাগানো।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/৬ মে ২০১৮/আমিনুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়