ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

বুয়েটের ছাত্রীদের উল্টো দোষারোপ ঠিক হয়নি: হাইকোর্ট

মেহেদী হাসান ডালিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:১৮, ২৪ জানুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বুয়েটের ছাত্রীদের উল্টো দোষারোপ ঠিক হয়নি: হাইকোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক : তিন ছাত্রীকে ইভটিজিং করার অভিযোগ তদন্তকারী বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) তিন শিক্ষককে হাইকোর্ট বলেছেন, আমাদের সমাজে যেখানে ধর্ষণের শিকার হলেও নারীরা তা বলতে বা প্রকাশ করতে চান না। সেখানে তিন ছাত্রী ইভটিজিংয়ের অভিযোগ করল। অথচ সন্দেহের বশবর্তী হয়ে উল্টো তাদেরকেই দোষারোপ করলেন। এটা ঠিক হয়নি। আপনারা ফৌজদারি আদালতের মতো সন্দেহের বশবর্তী হয়ে এটা করতে পারেন না।

বুধবার বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি একেএম সাহিদুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ  এ অভিমত প্রকাশ করেন।

আদালতে হাজির হয়ে ওই তিন শিক্ষক পরবর্তী তারিখে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করলেও আদালত তা গ্রহণ করেননি। তিন শিক্ষককে আগামী ৩১ জানুয়ারি আদালতে ফের হাজির থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যে তিন শিক্ষককে হাজির থাকতে বলা হয়েছে তারা হলেন- তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক তড়িৎ ও ইলেক্ট্রনিক কৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. কামরুল আহসান, কমিটির সদস্য যন্ত্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মাকসুদ হেলালী ও পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. রওশন মমতাজ।

তিন ছাত্রীর করা পৃথক তিনটি রিট আবেদনের শুনানি চলছে এ আদালতে। তিন শিক্ষকের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ ও ব্যারিস্টার আমিনুল হক। রিট আবেদনকারী পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার এবিএম আলতাফ হোসেন। বুয়েটের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট সৌরভ কর্মকার।

আদালত শিক্ষকদের উদ্দেশে বলেন, কোন বিবেচনায় আপনারা অভিযোগকারী তিন ছাত্রীকে দোষারোপ করলেন? তাদের তো (তিন ছাত্রী) ভবিষ্যৎ আছে। সামাজিক অবস্থা আপনারা বিবেচনা করলেন না।

২০১৫ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বুয়েটের এক ছাত্রের বিরুদ্ধে তিন ছাত্রী ইভটিজিংয়ের অভিযোগ আনে। এ অভিযোগ পাওয়ার পর বুয়েট কর্তৃপক্ষ তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। এরই মধ্যে তিন ছাত্রী অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেয়। এ অবস্থায় এ কমিটি তদন্ত শেষে ওই বছরের ৩ জুন প্রতিবেদন দেয়। প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ওই বছর তিন ছাত্রীকে শাস্তি দেয় বুয়েট কর্তৃপক্ষ। তাদের তিন টার্মের একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বহিষ্কার করা হয়। একইসঙ্গে আজীবনের জন্য আবাসিক হল থেকে বহিষ্কার করা হয়।   এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ওই বছরই রিট আবেদন করেন সংশ্লিষ্ট তিন ছাত্রী।

রিট আবেদনে বলা হয়, চাপের মুখে তারা অভিযোগ প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছে। এ রিট আবেদনে হাইকোর্ট শাস্তি স্থগিত করে এবং রুল জারি করেন। এরই মধ্যে এ রুলের ওপর উভয়পক্ষের আইনজীবীরা শুনানি করেন। এরপর   আদালত মামলার নথি (বুয়েটের তদন্ত প্রতিবেদন) পর্যালোচনা করে দেখেন, তদন্ত প্রতিবেদনে ইভটিজিংয়ের অভিযোগের সত্যতা রয়েছে। এটা দেখার পর আদালত গত ১৮ জানুয়ারি তদন্ত কমিটির তিন শিক্ষককে তলব করেন।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৪ জানুয়ারি ২০১৮/মেহেদী/মুশফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়