ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ভবিষ্যতের সংবাদমাধ্যম, সংবাদমাধ্যমের ভবিষ্যৎ || মিনার মনসুর

মিনার মনসুর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:৫৯, ২৬ এপ্রিল ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ভবিষ্যতের সংবাদমাধ্যম, সংবাদমাধ্যমের ভবিষ্যৎ || মিনার মনসুর

শুরুতেই সবিনয়ে বলে রাখি, আমি বিশেষজ্ঞ নই। এমনকি সংবাদমাধ্যমের ভবিষ্যৎ কিংবা ভবিষ্যতের সংবাদমাধ্যম নিয়ে কথা বলার জন্যে যে ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়া দরকার- তাও আমার নেই। কিন্তু দীর্ঘ প্রায় চার দশক প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মুদ্রিত সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত থাকার সুবাদে একটি ভাবনা আমাকে তাড়িত করছে নিরন্তর। বন্ধু ও সহকর্মীদের সঙ্গে ঘরোয়া আড্ডায় দ্বিধান্বিতভাবে আমার সেই অগোছালো ভাবনা তুলেও ধরেছি বিভিন্ন সময়ে। কিন্তু এ নিয়ে লিখব ভাবিনি কিংবা আরও স্পষ্ট করে বলা যায়, লেখার জন্যে ভাবনার যে মোটামুটি সুশৃঙ্খল ও স্বচ্ছ একটি অবয়ব দরকার- সেটা এখনো নিজের মধ্যে তৈরি হয়ে ওঠেনি। তারপরও যে তাকে ধরতে উদ্যত হয়েছি- তার পেছনে দুটি কারণ কাজ করেছে। প্রথমত, সুলেখক ও শুভানুধ্যায়ী প্রিয়ভাজন তাপস রায়ের তাড়না; এবং দ্বিতীয়ত, ভাবনাটির একটি স্কেচ বা রেখাচিত্র অন্তত প্রস্তাবনা আকারে আগ্রহী পাঠকের সামনে তুলে ধরে তাদেরও খানিকটা উসকে দেওয়া। ভাবনার বলটি গড়াতে থাক, ক্ষতি কী!




একটি বিষয় ইতোমধ্যে স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, মুদ্রিত সংবাদপত্রের জমিদারসুলভ মেদবহুল ঢিলেঢালা অলস অবয়বটি আর থাকছে না। ধারণা করা হয়েছিল যে, তুলনামূলকভাবে অগ্রসর অনলাইন সংবাদমাধ্যমই তার আসন দখলে নেবে ক্রমে। কয়েক দশক আগে অবশ্য কেউ কেউ এর চেয়েও কঠিন ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন মুদ্রিত সংবাদপত্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে। অনলাইন সংবাদমাধ্যম এলো; তাও প্রায় এক-দেড় দশক পার হতে চললো। কিন্তু যেমনটি ভাবা হয়েছিল- ‘তিনি এলেন, দেখলেন, জয় করলেন’-তেমনটি কিন্তু ঘটলো না বাস্তবে। দৃশ্যত মনে হলো, মুদ্রিত সংবাদপত্র বহাল তবিয়তেই আছেন। এর পরেই বানের জলের মতো ধেয়ে আসলো ইলেকট্রনিক মাধ্যম। শত শত দেশি-বিদেশি স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল মাকড়সার মতো নিখুঁত জাল পাতলো আমাদের মস্তিষ্ক ও মনোজগতের চারপাশে। কার আগে কে গ্রাহকের কাছে কত আকর্ষণীয়ভাবে সংবাদ পৌঁছে দিতে পারে- শুরু হলো সেই প্রতিযোগিতা। সেইসঙ্গে চটকদার বিনোদনমূলক ও আনুষঙ্গিক নানা উপাদান তো আছেই।
পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তের যেকোনো খবর মুহূর্তের মধ্যে আমরা পেয়ে যাচ্ছি ঘরে বসেই। না, পুরোপুরি ঠিক বলা হলো না। এখন আমাদের হাতের মুঠোয় যে স্মার্টফোনটি ধরা আছে তার মাধ্যমে যেকোনো সময় যেকোনো স্থানে বসেই বা চলন্ত অবস্থায় আমরা সেই খবর জেনে যাচ্ছি। ‘ব্রেকিং নিউজ’ তো আছেই, সেই সঙ্গে চলছে লাগাতার ‘লাইভ’ সম্প্রচারও। এই যখন অবস্থা তখন মানুষ কেন টাকা খরচ করে তার মূল্যবান সময় ব্যয় করে মুদ্রিত সংবাদপত্র পাঠ করবেন-যার খবরগুলো ন্যূনতম ছয় থেকে ২৪ ঘণ্টা আগেই বাসি হয়ে গেছে! সঙ্গত কারণেই ধরে নেওয়া হলো যে, এবার নিশ্চিতভাবে মুদ্রিত সংবাদপত্রের দিন শেষ। স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলগুলোই হবে একালের গণমাধ্যমের নতুন নায়ক। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে টিভি চ্যানেলগুলোর দোর্দণ্ড প্রতাপের মধ্যেও কীভাবে যেন সংবাদপত্রগুলো এখনো দৃশ্যত টিকে আছে।
অনলাইন সংবাদমাধ্যম ও টিভি চ্যানেলগুলোর তুমুল কলরবের মধ্যেই নীরবে যে প্রবল পরাক্রান্ত তৃতীয় শক্তিটির আবির্ভাব ঘটলো তার নাম সামাজিক মাধ্যম। সেও একা নয়, তার সঙ্গেও রয়েছে বিস্তর চৌকস ও সুদক্ষ সৈন্যসামন্ত। রীতিমত একটা বিপ্লবই ঘটিয়ে দিল তারা। যুগ যুগ ধরে চলে আসা সংবাদমাধ্যমের যে ধারণা ও কাঠামো-সবই কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে গেল তার নিভৃত অভ্যুত্থানে। সংবাদমাধ্যম যে একটি প্রতিষ্ঠান এবং সেখানে যে দৃশ্যমান দুটি পক্ষ থাকে-প্রতিষ্ঠান ও ভোক্তাসাধারণ-তার সীমারেখাটি উড়ে গেল ফুৎকারে। প্রতিষ্ঠান জন্মলগ্ন থেকে যাদের তার ‘কাস্টমার’ তথা আমজনতা বলে জানতো এবং গাঁটের পয়সা খরচ করে সংবাদ বা সংবাদপত্র ক্রয় করার মধ্যে যার ভূমিকা সীমাবদ্ধ ছিল, সামাজিক মাধ্যমের কল্যাণে তারাও রাতারাতি উঠে এলেন আলোকোজ্জ্বল মঞ্চে। তারা নিজেরাই এখন সাংবাদিক, সম্পাদকও তারাই।
নানা ধরনের স্বার্থের সমীকরণে মূলধারার সংবাদমাধ্যমগুলো যে খবর চেপে রাখতে চায় কিংবা তাতে মেশাতে চায় নিজস্ব মত বা স্বার্থের রং, সেই খবরও অবিকৃতভাবে মুহূর্তে প্রচার হয়ে যাচ্ছে বিশ্বব্যাপী। শুধু তাই নয়, রাষ্ট্র বা অপরাপর ক্ষমতাশালী প্রতিষ্ঠানগুলো যে-মতটিকে ধামাচাপা দিতে চায়, সেই মত আরও তীব্র আরও শক্তিশালী রূপ নিয়ে আছড়ে পড়ছে জনসমুদ্রের কূলে কূলে। এমনকি বিশ্বের একনম্বর ক্ষমতাধর দেশটির সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তিটিও অবিরাম আক্রমণ ও আক্রোশের তরবারি চালিয়েও রুদ্ধ করতে পারছে না তার মুক্ত পদচারণা। আরও মজার ব্যাপার হলো, মূলধারার গণমাধ্যমবিরোধী লড়াইয়ে তিনি নিজে যে হাতিয়ারটি ব্যবহার করছেন সেটিও কিন্তু এই সামাজিক মাধ্যম। সঙ্গত কারণেই আবারও প্রশ্ন উঠলো, এবার তাহলে মুদ্রিত সংবাদপত্রের দফারফা হবে। শেষ পেরেকটি বিদ্ধ হবে তার কফিনে। কিন্তু বিস্ময়করভাবে এই ত্রিমুখী আক্রমণের মধ্যেও মুদ্রিত সংবাদপত্র এখনো কীভাবে যেন টিকিয়ে রেখেছে তার অস্তিত্ব। কিন্তু কতদিন?


বিস্ময়করভাবে মুদ্রিত সংবাদপত্র টিকে থাকবে কি থাকবে না আর থাকলেও কতদিন- সেই প্রশ্নকেও ছাপিয়ে উঠেছে তার প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর বর্তমান বিপর্যস্ত অবস্থা। যে অনলাইন সংবাদমাধ্যমকে মুদ্রিত সংবাদমাধ্যমের বিকল্প ভাবা হচ্ছিল সে নিজেই এখন সংকটাপন্ন। আমি পছন্দ করতাম এমন একাধিক অনলাইন সংবাদমাধ্যম ইতোমধ্যে হয় বন্ধ হয়ে গেছে, অথবা লাইফসাপোর্টে আছে। এমনকী সুপ্রতিষ্ঠিত স্বনামখ্যাত ও সুসম্পাদিত একটি অনলাইন সংবাদমাধ্যম তার কর্মীদের বেতনভাতা দিতে পারছে না বেশ কিছুদিন থেকে। সংস্থাটিতে কর্মরত একাধিক ঊর্ধ্বতন সাংবাদিকের মুখ থেকে না শুনলে আমি হয়ত খবরটি বিশ্বাসই করতাম না। ভেবেছিলাম টিভি চ্যানেলগুলোর অবস্থাই সম্ভবত সবচেয়ে রমরমা। বিশেষ করে তাদের কর্মীদের প্রাপ্ত  প্রায় অবিশ্বাস্য বেতনভাতার বিবরণ এবং কারো কারো লাইফস্টাইল দেখে সেরকমই মনে হতো। আমার সংবাদপত্রের সহকর্মীদের কেউ কেউ এই ভেবে দীর্ঘশ্বাসও ফেলতেন যে কেন তারা টিভি চ্যানেলে চলে গেলেন না সময়মতো। কিন্তু এখন শুনি সেখানেও মড়ক লেগেছে। তার মেকআপচর্চিত অবয়বের নিচে নিভৃতে জমে ওঠেছে মাসের পর মাস বেতনবঞ্চিত কর্মীদের অশ্রু ও ক্ষোভের পাহাড়। সেইসব খবর এখন আর ঢেকে রাখা সম্ভব হচ্ছে না কিছুতেই।




প্রতিদ্বন্দ্বীদের এই বিপন্নদশা কি তবে মুদ্রিত সংবাদপত্রের সোনালি অতীতের পুনরুজ্জীবনের ইঙ্গিত বহন করছে? আমি সংবাদপত্রের বাইরের লোক হলে নিশ্চিতভাবে সানন্দে তাতে সায় দিতাম। আনন্দিত হতাম এই ভেবে যে, যাক মুদ্রিত সংবাদপত্র এ যাত্রা বড় ধরনের একটি বিপদ থেকে রক্ষা পেল। কিন্তু আমি যেহেতু গত দেড় দশকেরও বেশি সময় ধরে প্রত্যক্ষভাবে মুদ্রিত সংবাদপত্রের সঙ্গে জড়িয়ে আছি, তাই আমি মোটেও উল্লসিত হতে পারছি না। কারণ আমি জানি, সংবাদপত্র দৃশ্যত প্রায় অক্ষত অবয়ব নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলেও কমপক্ষে দুটি বড় ধরনের হার্ট অ্যাটাকের ঝড় বয়ে গেছে তার ওপর দিয়ে। আরেকটি ঝড় এখন বয়ে যাচ্ছে। তবে এটা সত্য যে প্রতিদ্বন্দ্বীরা তাকে যতটা না কাবু করেছে, তার চেয়ে বেশি কাবু করেছে তার মেদসর্বস্ব আয়েসী অবয়ব ও কাঠামো-বর্তমান বাস্তবতায় যা শ্বেতহস্তীর মতো ব্যয়বহুল হয়ে দাঁড়িয়েছে। অথচ তার বিপরীতে বাজার ও ভোক্তার ওপর তার সেই একচ্ছত্র আধিপত্য আর নেই। একদিকে বিজ্ঞাপনের বাজারে তার দৃশ্য-অদৃশ্য প্রতিদ্বন্দ্বী অনেক-যাদের বড় অংশই তার চেয়ে চৌকস ও স্মার্ট; অন্যদিকে ভোক্তা তথা পাঠকের সংখ্যা দ্রুত হ্রাসমান। তরুণ বলি আর গৃহবধূই বলি-সংবাদপত্র পড়ার মতো সময় এখন কারোই নেই। ব্যবসায়ী ও পেশাজীবীরা আরও ব্যস্ত। দৈনন্দিন বা অত্যাবশ্যক সংবাদ- এমনকি বিনোদনের জন্যেও তারা এখন সংবাদপত্রের চেয়ে হাতের মুঠোবন্দী স্মার্টফোনটির ওপরই অধিক নির্ভরশীল। আগামী দিনগুলোতে এই নির্ভরশীলতা নিশ্চিতভাবে আরও বাড়বে। অতএব, মুদ্রিত সংবাদপত্রের স্বরূপে প্রত্যাবর্তন বা পুনরুজ্জীবন সুদূরপরাহত শুধু নয়, অসম্ভবই বলা চলে।


সব সংবাদমাধ্যমই কমবেশি বিপদে আছে সত্য, তবে তার মধ্যে মুদ্রিত সংবাদপত্রের অবস্থাই সবচেয়ে সংকটাপন্ন বলে আমি মনে করি। সে হয়ত একেবারে মারা যাবে না, তবে জরাগ্রস্ত দীর্ঘায়ু মানুষের মতো তার অবস্থাও দিন দিন খারাপ হতে থাকবে। বাড়বে পরনির্ভরতা। বাড়বে তার আয়-ব্যয়ের মধ্যকার ফারাক। আয় কমবে, ব্যয় বাড়বে। সেই অবস্থা সামাল দেওয়ার সহজ ও একমাত্র বিশ্বস্বীকৃত পন্থা হিসেবে সব সংবাদপত্রেই কর্মী ছাঁটাই হবে ব্যাপকভাবে। যারা টিকে যাবেন নির্দয়ভাবে কমানো হবে তাদের বেতন-ভাতা। আর এর অনিবার্য প্রতিক্রিয়া হিসেবে সংবাদপত্রে বিদ্যমান মেধাশূন্যতা আরও প্রকট হবে। বাড়বে নীতিহীনতা ও অসাধুতা। অনিবার্যভাবে মান হবে নিম্নগামী। ফলে সংবাদপত্রের প্রতি গ্রাহকদের আকর্ষণ আরও কমে যাবে। দু’একটি সংবাদপত্র দক্ষতার সঙ্গে এ পরিস্থিতি আরও কিছুদিন ঠেকিয়ে রাখতে সক্ষম হলেও, বেশিরভাগ সংবাদপত্রই মুখ থুবড়ে পড়বে বলে আমার ধারণা।


এমন একটি কথা প্রচলিত আছে যে যেখানে সংকট, সেখানেই উদ্ধার। তারা একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। কথাটি একেবারে অমূলক নয়। দূরদর্শী মেধাবী মানুষেরা চিরকালই সংকটের মধ্যেই সম্ভাবনার মুক্তো আবিষ্কার করেছেন। অন্যভাবে বলা যায়, সংকটকেই তারা সম্ভাবনায় রূপান্তরিত করেছেন তাদের উদ্ভাবনী ক্ষমতা দিয়ে। আমার বদ্ধমূল ধারণা, বর্তমানে আমাদের মিডিয়া জগতে যে গভীর সংকট চলছে, তা নিশ্চিতভাবে একটি নতুন সম্ভাবনারও ইঙ্গিতবহ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তা-ই হয়। কে না জানেন যে, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন নয়মাসের ঘোর অন্ধকারের গর্ভেই জন্ম নিয়েছিল আমাদের চিরআরাধ্য স্বাধীনতার সূর্য। আমার মনে হয়, নতুন একটি সংবাদমাধ্যমের জন্মক্ষণ আসন্ন। কেমন হবে ভবিষ্যতের সেই সংবাদমাধ্যমটি তা এখনই নিশ্চিতভাবে বলা না গেলেও, এটুকু অন্তত বলতে পারি যে, বিদ্যমান মুদ্রিত সংবাদপত্র, অনলাইন সংবাদমাধ্যম ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মিশেলে গড়ে উঠবে তার অবয়ব। তার আকার-আকৃতি ও মালিকানার ধরনও হবে ভিন্ন। সকল অর্থেই সে হবে স্লিম ও স্মার্ট। হবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো অত্যাধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর, সহজলভ্য ও ব্যয়সাশ্রয়ী। সর্বোপরি, এই সংবাদমাধ্যমের অবিচ্ছেদ্য অংশ তথা অন্যতম চালিকাশক্তি হবে ভোক্তাসাধারণ। ভবিষ্যতে এ নিয়ে আরও বিশদভাবে লেখার ইচ্ছে আছে। আপাতত শুধু এটুকু বলে রাখি যে ভবিষ্যতের এই সংবাদমাধ্যমটির নাম ‘স্মার্ট মিডিয়া’ হলে আমি অবাক হবো না।

ধানমন্ডি: ২৬ এপ্রিল ২০১৯
লেখক: কবি ও সাংবাদিক



 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৬ এপ্রিল ২০১৯/তারা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়