ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে হাওরে দুর্দশা’

মোহাম্মদ নঈমুদ্দীন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:৩৮, ২৩ এপ্রিল ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে হাওরে দুর্দশা’

সচিবালয় প্রতিবেদক : পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেছেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে আগাম অতিবৃষ্টিতে হাওর অঞ্চলে দুর্দশার সৃষ্টি হয়েছে।’

রোববার সচিবালয়ে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে এবার স্বাভাবিক সময়ের আগে বৃষ্টি হয়েছে এবং অতিবৃষ্টি হয়েছে। অতিবৃষ্টির কারণে সৃষ্ট পাহাড়ি ঢল নেমে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হয়েছে। আমাদের ৬.৫ মিটার পর্যন্ত বাঁধ দেওয়া আছে। সাধারণত এর ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয় না। এবার ৮.১ মিটার উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হওয়ায় হাওর অঞ্চলে পানি ছড়িয়ে পড়েছে। এ ছাড়া, পানির স্রোতে কিছু কিছু বাঁধ ভেঙেও গেছে।’

এ ক্ষেত্রে পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতি ছিল কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ডের আসলে কিছু করার ছিল না। তবে আমরা খতিয়ে দেখছি, বাঁধ নির্মাণে কোনো অনিয়ম হয়েছিল কি না। যদি কোনো অনিয়মের খবর পাওয়া যায়, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’

বানের পানির সঙ্গে ভারতের ইউরেনিয়াম ও অন্যান্য ক্ষতিকর রাসায়নিক চলে এসে জীববৈচিত্র্যে প্রভাব ফেলছে, এ বিষয়ে ভারতীয় কিছু সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদনও প্রকাশ হয়েছে। সে দিক বিবেচনা করে ভারতের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে কি না, জানতে চাইলে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ‘ভারতের বিরুদ্ধে এ মুহূর্তে ব্যবস্থা নেওয়ার কিছু নেই। বানের পানিতে ইউরেনিয়াম ও অন্যান্য রাসায়নিক আছে কি না, তা পরীক্ষা করে দেখতে কাজ করছে আমাদের পরমাণু শক্তি কমিশনের একটি দল। তাদের প্রতিবেদন হাতে পেলে এ ব্যাপারে কিছু বলা যাবে।’

অনুষ্ঠানে সিলেটের সাম্প্রতিক সময়ের বন্যাকে ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘এবারের মতো ব্যাপক আকারের বন্যা কখনো হয়নি। এই বন্যা কোনোভাবেই বাঁধ ঠেকাতে পারবে না। কারণ, বাঁধের উচ্চতা হচ্ছে সাড়ে ৬ মিটার। আর পানির উচ্চতা হচ্ছে ৮ দশমিক ১ মিটার। সুতরাং বাঁধ কোনোভাবেই এই পানি প্রোটেক্ট করতে পারবে না। গত চার দিনে হাওর এলাকার পানি প্রকট আকারে বাড়ছে। আমরা চাইলেও এই বন্যা এড়াতে পারতাম না।’

গত বছরের বাঁধ নির্মাণে অনিয়মের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘গত বছর বাঁধ নির্মাণের কাজ বুঝিয়ে না দেওয়ায় অর্ধেক বিল পরিশোধ করা হয়নি।’

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সারা দেশে ৮২০টি বাঁধ সংস্কারের জন্য চিহ্নিত হয়েছে। এর মধ্যে ৫২০টি বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাধারণ মানুষের দ্বারা।

মন্ত্রী বলেন, ‘অনেক সময় কৃষকরা নৌকায় করে ধান নিয়ে যাওয়ার সময় বাঁধ কেটে ফেলেন। এটাও একটা সমস্যা। ৪০টি নদীর মুখে বাঁধ থাকে, যেগুলো ভেঙে দিতে হয়। ২৭০টি জায়গায় ক্ষতিগ্রস্ত নদী ঠিক করতে হয়। বাঁধের এই ক্ষতি আমরাও করি এবং করতে বাধ্য হই।’



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৩ এপ্রিল ২০১৭/নঈমুদ্দীন/হাসান/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়