ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

যতদিন পানি থাকবে ততদিন সহায়তা : মায়া

আসাদ আল মাহমুদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:২৫, ২৩ এপ্রিল ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
যতদিন পানি থাকবে ততদিন সহায়তা : মায়া

নিজস্ব প্রতিবেদক : বন্যাকবলিত চার জেলার তিন লাখ ৩০ হাজার পরিবারকে ৩৩-৩৫ লাখ মেট্রিক টন চাল ও ৫০ কোটি টাকা ত্রাণ সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া।

রোববার দুপুরে সচিবালয়ে হাওরের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক শেষে তিনি এ ঘোষণা দেন।

মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, বন্যাকবলিত চার জেলার জন্য ১০০ দিনের কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। এ সময়ে তিন লাখ ৩০ হাজার পরিবারকে ৩৩-৩৫ লাখ মেট্রিক টন চাল ও ৫০ কোটি টাকা ত্রাণ দেওয়া হবে। তবে এ সময়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে যতদিন পানি থাকবে ততদিন তাদের সহায়তা দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, বন্যাকবলিত এলাকার মানুষদের সহায়তা আগামীকাল (সোমবার) থেকে কর্মসূচি শুরু হবে। পরবর্তী ১০০ দিনের জন্য প্রত্যেক পরিবারকে মাসে ৩০ কেজি চাল এবং নগদ ৫০০ টাকা দেওয়া হবে। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের আহ্বান জানান।

সরকারের পক্ষ থেকে মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে বন্যকবলিত এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে জানিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী বলেন, সমস্যা চিহ্নিত করা হয়েছে। এখন পর্যায়ক্রমে সব সমস্যা সমাধান করা হবে।

তিনি বলেন, সমস্যা সমাধানের জন্য দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবকে প্রধান করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর (পানিসম্পদ, খাদ্য, স্থানীয় সরকার, অর্থ, মৎস্য, তথ্য মন্ত্রণালয়) প্রতিনিধি নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে তারা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ও বন্যার কারণ নির্ধারণ করে তদন্ত প্রতিবেদন দেবে। এ সময়ে বন্যাকবলিত এলাকার মানুষকে খাদ্যসহ অন্যান্য সহায়তা দেওয়া হবে। যতদিন পর্যন্ত পানি না সরবে, মানুষ ঘরে ফিরে না যাবে, যতদিন পর্যন্ত পরবর্তী ফসল না উঠবে ততদিন পর্যন্ত এ সহায়তা দেওয়া হবে।

তিনি  বলেন,  দেশে খাদ্যের অভাব নেই। একজন মানুষও না খেয়ে মরবে না। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ আমরা এভাবেই বাস্তবায়ন করব। এক্ষেত্রে আপনাদের সাহায্য চাই। মানুষ আতঙ্কিত হয় এমন সংবাদ প্রকাশ করবেন না। এ দুর্যোগ শুধু সরকার বা আওয়ামী লীগের একার নয়, এ দুর্যোগ সমগ্র জাতির। এক্ষেত্রে সবার দায়িত্ব রয়েছে।

তিনি বলেন, অকাল বন্যায় দেশের ছয়টি জেলা প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কিশোরগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, সিলেট এবং নেত্রকোনা জেলার কৃষকরা। এই চার জেলার কৃষকরা সর্বস্বান্ত হয়েছেন। যারা বোরো ধানের ওপর নির্ভরশীল। আর সেই ধানের ৮৬ শতাংশ নষ্ট হয়েছে।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, আপনি অসুস্থ, তাই হয়তো হাওর এলাকায় যেতে পারবেন না। তবে আপনার দলের মোটাসোটা নেতাদের পাঠিয়ে এলাকার খোঁজ-খবর নেন। মানুষের কল্যাণে কাজ করতে নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দেন। 

প্লাবিত এলাকাগুলোকে বন্যাদুর্গত এলাকা ঘোষণা করা হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুর্গত এলাকা ঘোষণার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। তবে মানুষ কষ্টে আছে। সেই কষ্ট লাঘবের চেষ্টা করছি আমরা।

এ সময় কৃষি সচিব বলেন,  প্রায় দুই লাখ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। যেখান থেকে ছয় লাখ মেট্রিক টন চাল পাওয়া যেত। তবে এতে আমাদের খাদ্য ঘাটতি হবে না, কারণ দেশের অন্য অঞ্চলে খাদ্য উৎপাদন বেশি হয়েছে। এছাড়া আউশ এবং আমন চাষে আমরা কৃষকদের প্রণোদনা দেব। ফলে দেশে খাদ্যে কোনো ঘাটতি থাকবে না।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব বলেন,   বাঁধ ভেঙে বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হওয়ায় মোট এক হাজার ২৭৬ মেট্রিক টন মাছ নষ্ট হয়েছে এবং তিন হাজার ৮৪৪টি হাঁস মারা গেছে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৩ এপ্রিল ২০১৭/আসাদ/মুশফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়