ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

রানা প্লাজা : স্থায়ী পুনর্বাসনের দাবি আহতদের

আহমদ নূর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:০৩, ২৪ এপ্রিল ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
রানা প্লাজা : স্থায়ী পুনর্বাসনের দাবি আহতদের

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাভার থেকে : সাভারের রানা প্লাজা ধসে আহত শ্রমিকরা তাদের স্থায়ী পুনর্বাসনের দাবি জানিয়েছেন।

সোমবার রানা প্লাজার সামনে ওই ঘটনায় আহত শ্রমিকরা এ দাবি জানান।

শ্রমিকদের দাবি, ওই দুর্ঘটনায় বেশিরভাগ শ্রমিক তাদের কর্মক্ষমতা হারিয়েছে। এতে তারা কোথাও কাজ করার সুযোগ পাচ্ছে না। ফলে তারা এবং তাদের পরিবার অভাব-অনটনে দিনযাপন করছে।

সোমবার রানা প্লাজা ধসের ঘটনা পাঁচ বছরে পা দিয়েছে। চার বছর আগে অর্থাৎ ২০১৩ সালের এই দিনে দেশের সবচেয়ে বড় কারখানা দুর্ঘটনায় ১ হাজার ১৩৬ জন শ্রমিক নিহত এবং ২ হাজার ৪৩৮ জন শ্রমিক আহত হন। যারা আহত হয়েছেন তাদের বেশিরভাগই পঙ্গুত্ববরণ করেছেন।

মাহমুদুল হাসান রানা প্লাজার দ্বিতীয় তলার একটি পোশাক করাখানায় কাজ করতেন। ভয়াবহ সেই দুর্ঘটনায় তিনি তার ডান পা হারিয়েছেন। মেরুদণ্ডে পাওয়া আঘাতের কারণে সোজা হয়ে দাঁড়াতেও তার সমস্যা হয়।

সেই দিনের স্মৃতি স্মরণ করে রাইজিংবিডিকে মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘দুর্ঘটনার পর সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের কিছু সহায়তা দেওয়া হলো। কিন্তু এই সহায়তায় কি আমাদের জীবন চলবে? সেই টাকা তো চিকিৎসা বাবৎ খরচ হয়ে গেছে। পঙ্গু হওয়ার কারণে কেউ চাকরিতেও নিচ্ছে না। যেন ইউজলেস হয়ে গেছি। এখন জীবন চালানোই কষ্টের হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই সরকারের কাছে দাবি জানাব, তারা যেন আমাদের স্থায়ীভাবে পুনর্বাসন করেন।’

তিনি বলেন, ‘চোখের সামনে অনেককে মরতে যেতে দেখেছি। তাদের কথা মনে পড়লে এখনো নিজের কান্না ধরে রাখতে পারি না। তবে যারা মারা গেছেন তারা একটি দিক থেকে ভাল আছেন। পৃথিবীর কোনো কষ্ট আর তাদের স্পর্শ করতে পারবে না। আর আমি বেঁচে গিয়ে কষ্টে আছি। সহকর্মীদের হারানোর যন্ত্রণা আর নিজের সঙ্গে প্রতিদিন লড়াই করে আমি ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। বেকার জীবন যেন এক অভিশাপ। সেটা নিয়ে বেঁচে আছি। এখন সমাজ পরিবার কারো কাছে কোনো মূল্য নেই আমার বা আমার মতো সেই দিনে আহত সহকর্মীদের।’

মাহমুদুল হাসানের মতো স্থায়ী পুনর্বাসনের দাবি জানাচ্ছেন রানা প্লাজা ধসে আহত অন্যন্য শ্রমিক। রংপুরের মুরশেদা বেগম জানান, ওই ঘটনায় তিনি সরকারের কাছ থেকে এখনো কোনো সহায়তা পাননি। গত চার বছর ধরে অনেক চেষ্টা করেও কোথাও কাজ জোগাড় করতে পারেননি। যেখানেই চাকরির জন্য গিয়েছেন সেখান থেকে তাকে বিদায় করে দেওয়া হয়েছে। কারণ তিনি আর আগের মতো পরিশ্রম করতে পারেন না।

তিনি বলেন, ‘ওই দিন বেঁচে গেছি, কিন্তু এখন সুন্দরভাবে জীবনযাপন করতে পারছি না। কোথাও কাজ করতে পারছি না। এখন সরকার যদি আমাদের পুনর্বাসন করে তাহলে জীবনের শেষ সময়টুকু শান্তিতে কাটাতে পারব।’

 

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৪ এপ্রিল ২০১৭/নূর/সাইফুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়