ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

রেইনট্রির ধর্ষণ মামলায় সাক্ষ্য হয়নি

মামুন খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:০৯, ৬ আগস্ট ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
রেইনট্রির ধর্ষণ মামলায় সাক্ষ্য হয়নি

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর বনানীর রেইনট্রি হোটেলে দুই তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় আপন জুয়েলার্সের কর্ণধার দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদসহ পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি।

রোববার মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ধার্য ছিল। সাক্ষ্য দিতে মামলার বাদী আদালতে হাজির হন।

কিন্তু আসামিপক্ষের আইনজীবীরা মামলার অভিযোগ গঠনের আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাবেন। এজন্য তারা সাক্ষ্যগ্রহণ পেছানোর সময়ের আবেদন করেন।

শুনানি শেষে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক সফিউল আজম আসামিপক্ষের সময় আবেদন মঞ্জুর করে আগামী ১০ সেপ্টেম্বর সাক্ষ্যগ্রহণের পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন।

আসামিপক্ষে সময়ের আবেদন করেন কাজী নজিবুল্লাহ হিরু, আব্দুর রহমান হাওলাদার, এম এ বি এম খায়রুল ইসলাম (লিটন)।

শুনানিকালে আপন জুয়েলার্সের কর্ণধার দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদসহ পাঁচ আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়।

এর আগে গত ১৩ জুলাই একই আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। গত ১৯ জুন একই ট্রাইব্যুনাল আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন।

এর আগে গত ১২ জুন মামলাটি বিচারের জন্য প্রস্তুত হওয়ায় সিএমএম আদালত থেকে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এ বদলি করা হয়।

তারও আগে গত ৭ জুন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনের (ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার) পরিদর্শক ইসমত আরা এমি পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্রটি আদালতে দাখিল করেন।

অভিযোগপত্রে আসামি সাফাত আহমেদ ও নাঈম আশরাফ ওরফে এইচ এম হালিমের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) ধারায় ধর্ষণের অভিযোগ করা হয়েছে।

অপর আসামি সাফাত আহমেদের বন্ধু সাদমান সাকিফ, দেহরক্ষী রহমত আলী ও গাড়িচালক বিল্লাল হোসনের বিরুদ্ধে ওই আইনের ৩০ ধারায় ধর্ষণে সহযোগিতার অভিযোগ করা হয়েছে।

মামলার পাঁচ আসামিই বর্তমানে কারাগারে আছেন। আসামিদের মধ্যে রহমত আলী ছাড়া অপর আসামিরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, গত ২৮ মার্চ রাত ৯টা থেকে পরদিন সকাল ১০টা পর্যন্ত আসামিরা মামলার বাদী এবং তার বান্ধবী ও বন্ধুকে আটকে রাখে। অস্ত্র দেখিয়ে ভয়-ভীতি প্রদর্শন ও অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে। বাদী ও তার বান্ধবীকে জোর করে একটি কক্ষে নিয়ে যায় আসামিরা। বাদীকে সাফাত আহমেদ ও তার বান্ধবীকে নাঈম আশরাফ একাধিকবার ধর্ষণ করে। আসামি সাদমান সাকিফকে দুই বছর ধরে চেনেন মামলার বাদী। তার মাধ্যমেই ঘটনার ১০-১৫ দিন আগে সাফাতের সঙ্গে দুই ছাত্রীর পরিচয় হয়।

এজাহারে আরো বলা হয়েছে, ওই দুই ছাত্রী সাফাতের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে যান। সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল ও দেহরক্ষী তাদের বনানীর ২৭ নম্বর রোডে রেইনট্রি হোটেলে নিয়ে যায়। হোটেলে যাওয়ার আগে বাদী ও তার বান্ধবী জানতেন না যে সেখানে পার্টি হবে। তাদের বলা হয়েছিল, এটা একটা বড় অনুষ্ঠান, অনেক লোকজন থাকবে। অনুষ্ঠান হবে হোটেলের ছাদে। সেখানে যাওয়ার পর তারা কোনো ভদ্রলোককে দেখেননি। সেখানে আরো দুই তরুণী ছিল। বাদী ও তার বান্ধবী দেখেন সাফাত ও নাঈম ওই দুই তরুণীকে ছাদ থেকে নিচে নিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় বাদীর বন্ধু ও আরেক বান্ধবী ছাদে আসেন। পরিবেশ ভালো না লাগায় তারা চলে যেতে চান। এ সময় আসামিরা তাদের গাড়ির চাবি শাহরিয়ারের কাছ থেকে নিয়ে নেন। তাকে খুব মারধর করেন। ধর্ষণ করার সময় সাফাত গাড়িচালককে ভিডিওচিত্র ধারণ করতে বলেন। বাদীকে নাঈম আশরাফ মারধর করেন।

এরপর বাদী ও বান্ধবীর বাসায় রহমত আলীকে পাঠানো হয় তথ্য সংগ্রহের জন্য। তারা এতে ভয় পান। লোকলজ্জার ভয় এবং মানসিক অসুস্থতা কাটিয়ে উঠে পরে আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে আলোচনা করে তারা মামলার সিদ্ধান্ত নেন। এ কারণে মামলা দায়ের করতে বিলম্ব হয়।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৬ আগস্ট ২০১৭/মামুন খান/মুশফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়