ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে খাদ্যশস্য আমদানির সিদ্ধান্ত

সাইফ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:০১, ১৩ আগস্ট ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে খাদ্যশস্য আমদানির সিদ্ধান্ত

ডেস্ক রিপোর্ট : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকার সতর্কতামূলক কর্মকাণ্ডের অংশ হিসেবে বিদেশ থেকে খাদ্যশস্য আমদানির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।

তিনি বলেন, ‘বন্যার কারণে ইতিমধ্যেই বিস্তীর্ণ জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। আগামীতে বন্যা আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে, তাই দেশে পর্যাপ্ত খাদ্য মজুদ থাকার পরও যে কোনো বিরূপ পরিস্থিতি মোকাবিলার পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে সরকার খাদ্যশস্য আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

রোববার সকালে প্রধানমন্ত্রীর তেজগাঁওস্থ কার্যালয়ে জাতীয় পুষ্টি পরিষদের (এনসিসি) প্রথম সভায় সভাপতির ভাষণে এ কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী খাদ্য নিরাপত্তার পাশাপাশি জনগণের পুষ্টি নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, তার সরকার দেশের জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। এখন, পুষ্টি নিশ্চিত করাই প্রধান লক্ষ্য। ‘পুষ্টির সাথে অনেক কিছু সম্পৃক্ত’-উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুষ্টির বিষয়ে শহর অঞ্চলে সচেতনতা সৃষ্টি হলেও গ্রামাঞ্চলে জনগণের মধ্যে আরো সচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজন রয়েছে, যাতে মানুষ সুষম খাদ্য গ্রহণ করে।

এ সময় জলাশয়ে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘খাদ্যাভ্যাসের উন্নত করতে হবে এবং সময় মতো খেতে হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর রাষ্ট্রপতি হিসাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালের ২৩ এপ্রিল ‘বাংলাদেশে জাতীয় পুষ্টি পরিষদ’ গঠনের আদেশ স্বাক্ষর করেন।

তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর ১৯৯৭ সালে প্রথম জাতীয় পুষ্টি কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয় এবং তার সভাপতিত্বে ১৯৯৮ সালের ১১ আগস্ট বাংলাদেশে জাতীয় পুষ্টি পরিষদের বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৫ সালের সরকার জাতীয় পুষ্টি নীতি অনুমোদন করে। এই নীতি প্রণয়নের সাথে সাথে তা বাস্তবায়নের প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসাবে ২০১৬ সালের শুরুতেই দ্বিতীয় জাতীয় পুষ্টি কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ শুরু হয়।

বৈঠকের শুরুতেই জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধুকে স্মারণ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতা যে শুধু স্বাধীনতাই দিয়ে গেছেন, তা নয়। তিনি সবকিছু দিয়ে গেছেন। নয় মাসে সংবিধান দিয়ে গেছেন।’

এ সময়, সংবিধানের ১৮ অনুচ্ছেদ উদ্ধৃত করেন প্রধানমন্ত্রী।

সংবিধানের ১৮ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘জনগণের পুষ্টির স্তর-উন্নয়ন ও জনস্বাস্থ্যের উন্নতি সাধনকে রাষ্ট্র অন্যতম প্রাথমিক কর্তব্য বলিয়া গণ্য করিবেন এবং বিশেষত; আরোগ্যের প্রয়োজন কিংবা আইনের দ্বারা নির্দিষ্ট প্রয়োজন ব্যতীত মদ্য ও অন্যান্য মাদক পানীয় এবং স্বাস্থ্যহানিকর ভেষজের ব্যবহার নিষিদ্ধকরণের জন্য রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি প্রদেশ ছিল। ২৪ বছরের সংগ্রাম ও মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। একটি প্রদেশকে রাষ্ট্রিয় কাঠামোয় উন্নীত করে জাতির পিতা আমাদের সবকিছুই দিয়ে গেছেন।’

বাংলাদেশের জনগণের জীবনমানের উন্নয়নকে সরকারের প্রধান লক্ষ হিসাবে উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, ‘যে উন্নয়নটা সাড়ে তিন বছরে জাতির পিতা করেছিলেন, ১৫ আগস্টের পর বাংলাদেশ আর সামনের দিকে এগোতে পারে নাই।’

একটি দেশের উন্নয়ন শাসকদলের নীতির ওপর নির্ভরশীল উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৫ আগস্টের পর যারা ক্ষমতায় এসেছিল; তারা দেশটাকে পরনির্ভরশীল করে রাখতে চেয়েছিল।’

আওয়ামী লীগ যখনই সরকার গঠন করেছে, তখনই পূর্ববর্তী সরকারের কাছে থেকে খাদ্য ঘাটতি পাওয়ার কথা বলেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালের বিএনপি যখন ক্ষমতা হস্তান্তর করে, তখন দেশে খাদ্য ঘাটতি ছিল ৪০ লাখ মেট্রিকটন। অন্যদিকে, ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ ২৬ লাখ মেট্রিকটন খাদ্য উদ্বৃত্ত রেখে ক্ষমতা হস্তান্তর করে আওয়ামী লীগ। ২০০৯ সালের আওয়ামী লীগ যখন সরকার গঠন করে তখনও দেশে খাদ্য ঘাটতি ছিল ৩০ লাখ মেট্রিকটন।

বৈঠকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালিক এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকীসহ সংশ্লিষ্ট সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।

তথ্যসূত্র : বাসস



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৩ আগস্ট ২০১৭/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়