ঢাকা     বুধবার   ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৪ ১৪৩১

‘বড় বন্যা হলেও মোকাবিলায় প্রস্তুত সরকার’

মোহাম্মদ নঈমুদ্দীন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:১১, ১৪ আগস্ট ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘বড় বন্যা হলেও মোকাবিলায় প্রস্তুত সরকার’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : বড় বন্যা হলেও তা মোকাবিলায় সরকারের পূর্ণ প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া।

তিনি বলেন, বর্তমান যে পরিস্থিতি তাতে ঢাকার নিম্নাঞ্চলসহ দেশের আরও বেশ ‍কিছু জেলায় নতুন করে বন্যার আশঙ্কা আছে। তবে বড় বন্যা হলেও তা মোকাবিলায় সরকার প্রস্তুত রয়েছে।

বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সোমবার রাজধানীর মহাখালীর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

বন্যার সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, বন্যায় এ পর্যন্ত ২০ জেলার ৫৬টি উপজেলা প্লাবিত হয়েছে। এসব উপজেলায় ইতোমধ্যে ৫৬২টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৪৯৫০টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সংখ্যা ১২৮৭৬৯টি। এ সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। এখন পর্যন্ত ২৭টি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

তিনি জানান, বন্যাপ্রবণ জেলাসমূহের জন্য ১০৬৩০ মেট্রিক টন চাল, ৩ কোটি ১০ লাখ টাকা ও ৬০ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে বন্যাপ্লাবিত জেলাসমূহে কয়েকদিনে ১২০০ মেট্রিক টন চাল ও ৬০ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী মজুদ রয়েছে।

সরকার সফলতার সঙ্গে দেশের বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে জানিয়ে মায়া বলেন, বন্যা মোকাবিলায় সরকার ঘরে বসে নেই। জেলা প্রশাসকদের চাহিদামতো প্রয়োজনীয় খাদ্যশস্য ও আর্থিক বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। যখন যেখানে যা দরকার তাই দেওয়া হচ্ছে। বানভাসি মানুষদের পাশে রয়েছি আমরা। দলের নেতাকর্মী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। একটি লোকও যাতে খাবারের কারণে কষ্ট না পায় সে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

দেশের বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী সার্বক্ষণিক তদারকি করছেন জানিয়ে ত্রাণমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রত্যেকটি জেলার বন্যা পরিস্থিতি নজরে রাখছেন, প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন। মন্ত্রণালয় তারই নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছে।’

তিনি বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট বিভাগের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। বন্যাপ্লাবিত জেলাসমূহের সব আশ্রয়কেন্দ্র খোলা রাখার জন্য জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা প্রত্যেকটি জেলার বন্যা পরিস্থিতি সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে। প্রতিটি জেলায় মন্ত্রণালয় থেকে সিনিয়র পর্যায়ের কর্মকর্তা সংযুক্ত করা হয়েছে। জেলা পর্যায়ে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলা করা হচ্ছে।

বন্যা পরিস্থিতিতে পর্যাপ্ত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা হয়েছে জানিয়ে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, বন্যায়ে হতাহতদের চিকিৎসার জন্য প্রত্যেক জেলায় পর্যাপ্ত মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে।

তিনি মেডিক্যাল টিমদের অনুরোধ করেন তারা যেন প্রতিদিন বন্যাকবলিত এলাকার আশ্রয়কেন্দ্রগুলো নিয়মিত পরিদর্শন করে সেবাকার্য চালিয়ে যান।

জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, বন্যাপ্লাবিত এলাকার টিউবওয়েলগুলো উঁচু করে দিন, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ান। পানিবাহিত রোগ থেকে দুর্গত মানুষদের রক্ষা করেন।

যেসব বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে সেগুলো দ্রুত মেরামত করতে এবং আর কোনো বেড়িবাঁধ যাতে নতুন করে না ভাঙে সেজন্য সংশ্লিষ্টদের সতর্ক দৃষ্টি রাখার আহ্বান তিনি।

মন্ত্রী বলেন, উজানের দেশ চীন, ভারত, নেপাল ও ভুটানে এ বছর স্মরণকালের মারাত্মক বন্যা হয়েছে। আর উজানের দেশসমূহে বন্যা হলে ভাটির দেশ হিসেবে উজানের প্রভাব বাংলাদেশে পড়ছে- এটাই স্বাভাবিক। এ অবস্থায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হবে বিষয়টি মাথায় রেখে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।’ তিনি যার যা আছে তাই নিয়ে অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।

সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব গোলাম মোস্তফা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রিয়াজ আহমেদ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৪ আগস্ট ২০১৭/নঈমুদ্দীন/মুশফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়