ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

অগ্রিম টিকিটে আগ্রহ নেই লঞ্চ যাত্রীদের

এম এ রহমান মাসুম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:২৯, ২০ আগস্ট ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
অগ্রিম টিকিটে আগ্রহ নেই লঞ্চ যাত্রীদের

নিজস্ব প্রতিবেদক : পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে শুরু হয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন লঞ্চের অগ্রিম টিকিট বিক্রি। তবে টিকিট পাওয়া গেলেও নির্ধারিত ৩২টি টিকিট কাউন্টারে নেই লঞ্চযাত্রীদের ভিড়।

রোববার সকাল থেকে ঈদ উপলক্ষে সব টিকিট কাউন্টারগুলো খোলা রাখা হয়েছে। যেখানে পাওয়া যাচ্ছে দক্ষিণবঙ্গের সব জেলা ও উপজেলার ৪৭টি রুটের লঞ্চের অগ্রিম টিকিট।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিটিএ) যুগ্ম পরিচালক (ট্রাফিক) জয়ানাল আবেদিন রাইজিংবিডিকে বলেন, ঘরমুখী যাত্রীদের জন্য আজ থেকে অগ্রিম টিকিট ছাড়া হয়েছে। তাদের ভোগান্তির কথা মাথায় রেখে ঈদ উপলক্ষে সদরঘাট থেকে বিশেষ টিকেট কাউন্টারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আজ ৩২টি কাউন্টার চালু রয়েছে। যাত্রী নিরাপত্তায় রয়েছে সিসি ক্যামেরা ও বিশেষ টিমসহ সার্বিক প্রস্তুতি।

তিনি বলেন, টিকিট কাউন্টার চালু হলেও লঞ্চযাত্রীদের টিকিট সংগ্রহের ক্ষেত্রে আগ্রহ কম দেখা যাচ্ছে। কাউন্টারগুলোতে কোনো ভিড়ই নেই। হয়ত কয়েকদিন পর ভিড় বাড়তে পারে। টিকিটের ক্ষেত্রে কোনো অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে না।

ফিটনেস বিহীন লঞ্চ চলাচলের বিষয়ে তিনি বলেন, ফিটনেবিহীন কোনো লঞ্চ চলাচল করে না। সদরঘাট থেকে এরূপ কোনো লঞ্চ যেতে পারে না। এর বাইরেও যদি কোনো লঞ্চ চলাচল করে তার জন্য আমাদের বিশেষ মনিটরিং টিম থাকবে।

প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে রাজধানী ছাড়বে অন্তত কয়েক লাখ মানুষ। নদীমাতৃক বাংলাদেশে দক্ষিণাঞ্চলের অধিকাংশ মানুষ আরামে যাত্রার জন্য লঞ্চযোগে রাজধানী ত্যাগ করে। বাস ও ট্রেনের মতোই নদী পথের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে বরাবরের মতো এবারও বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

ঢাকা থেকে বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা, ভোলা, ঝালকাঠী, মাদারীপুর, চাঁদপুর, খুলনা, মোংলা বন্দর, কাউখালী, চরখালী, হাতিয়া, মোড়ল গঞ্জ, লালমোহন, হুলারহাট, ভান্ডারিয়া, ইচলী, দৌলতখাঁ, বোরহান উদ্দিন এবং সুরেশ্বরসহ বেশকিছু অঞ্চলে ওই লঞ্চগুলো যাতায়াত করে। লঞ্চগুলো সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হয়।

লঞ্চে ভাড়ার বিষয়ে বিআইডব্লিউটিসি সূত্র জানায়, আসন ব্যবস্থাপনা অনুসারে ছোট-বড় লঞ্চসমূহে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। বড় আকারের লঞ্চগুলোতে ডুপ্লেক্স ও ভিআইপি কেবিনের ভাড়া ৩ হাজার টাকা থেকে ৬ হাজার টাকা। যেখানে দুটা বেড, এসি, রেফ্রিজারেটর, টিভি, ডাইনিং সুবিধা রয়েছে।

দুই বেড সুবিধায় ডাবল কেবিনের ভাড়া ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা, এক বেডের সুবিধায় সিঙ্গেল কেবিন ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা, সোফা-কাম-বেডের ক্ষেত্রে ৫০০ থেকে থেকে ৭০০ টাকা ভাড়া নেওয়া হয়। এখানেও এসি কিংবা ফ্যান ও টিভির সুবিধা রয়েছে।

এ ছাড়া লঞ্চের ডেকেও (লঞ্চের খোলা স্থান) যাত্রা করা যায়। বড় অনেক লঞ্চে কার্পেট দেওয়া রয়েছে। তবে চাদর বালিশ যাত্রীকে সঙ্গে বহন করতে হয়। এখানে ভাড়া ২০০ থেকে ২৫০ টাকা।

বিআইডব্লিইটিসি সূত্র জানায়, ঢাকার সদরঘাট থেকে লঞ্চগুলো সাধারণত সকাল ৬টা থেকে শুরু করে রাত ১২টা পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন এলাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। সদরঘাটে ১৩টি পন্টুন দিয়ে যাত্রী লঞ্চে উঠা-নামা করে। এর সঙ্গে আরো দুইটি পন্টুন যোগ করা হয়েছে।

সদরঘাট থেকে বিভাগীয় শহর বরিশালের যাত্রীবাহী লঞ্চগুলো আকার আকৃতিতে বেশ বড় ও আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত। এর বাইরে পটুয়াখালী, ঝালকাঠী, পিরোজপুর, ভোলা ও বরগুনার লঞ্চগুলো বরিশালের লঞ্চগুলোর তুলনায় ছোট। এ সকল দূরযাত্রার লঞ্চগুলোর অধিকাংশই আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন।

বরিশালগামী বড় লঞ্চগুলো প্রায় দেড় হাজার যাত্রী ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন। এগুলো তিন থেকে চারতলা পর্যন্ত হয়ে থাকে। ১ হাজার ৮০০ বর্গফুট থেকে ৩ হাজার বর্গফুট আয়তনের লঞ্চগুলো ২৫০ থেকে দেড় হাজার যাত্রী বহন করতে পারে। লঞ্চগুলোতে ভিআইপি কেবিন, ডাবল কেবিন, সিঙ্গেল কেবিন, সাইড বেঞ্চ, ফ্লোর এবং ডেকে যাত্রীদের বহনের ব্যবস্থা থাকে।

অন্যদিকে মাঝারি লঞ্চগুলো দুই থেকে আড়াইতলা হয়ে থাকে। ৫০০ থেকে ৮৫০ যাত্রী ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন এই লঞ্চগুলোতে আধুনিক বড় আকৃতির লঞ্চগুলোর তুলনায় সুযোগসুবিধা কিছুটা কম। যা পটুয়াখালী, ভোলা, লালপুর, বরগুনা, ভান্ডারিয়া ও দক্ষিণাঞ্চলের সকল জায়গায় এই লঞ্চগুলো যাতায়াত করে।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/২০ আগস্ট ২০১৭/এম এ রহমান/এসএন

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়