ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

ছাত্রলীগকে কুড়িগ্রামে পাঠাও : অজয়

আহমদ নূর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৪৮, ২০ আগস্ট ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ছাত্রলীগকে কুড়িগ্রামে পাঠাও : অজয়

নিজস্ব প্রতিবেদক : অন্যের ত্রাণ সংগ্রহে বাধা না দিয়ে সরকারের তহবিল থেকে বন্যাদুর্গতদের ত্রাণ বিতরণে মনোনিবেশ করতে ছাত্রলীগের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন অধ্যাপক অজয় রায়।

রোববার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান।

‘হামলা-মামলায় গণজাগরণের গতিরোধের চেষ্টা : পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও আমাদের বক্তব্য’ শীর্ষক এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে গণজাগরণ মঞ্চ।

অজয় রায় বলেন, ‘ইমরান যখন চাঁদা (ত্রাণ) তুলতে গেলেন, তখন হামলার শিকার হলেন। হামলাকারীরা সরকারি দলের সমর্থক। হামলার সময় তারা বললেন, তোরা প্লাবন পাইলি কই? বন্যা তোরা বানাইছস। আমি তাদের তথাকথিত ছাত্রলীগ বলব। তাদের এমন কাজ থেকে বিরত থেকে ত্রাণ বিতরণে মনোনিবেশ করা উচিত। এ কাজে তাদের তো রাস্তায় দাঁড়িয়ে ত্রাণ সংগ্রহ করতে হবে না। তারা প্রধানমন্ত্রীর কাছে চাইলে সরকারি ভাণ্ডার থেকে চাল, কাপড় নিয়ে যেতে পারবে। মানুষের মধ্যে বিতরণ করতে পারবে। এতে প্রধানমন্ত্রীও খুশি হবেন।’

ছাত্রলীগের নীতিনির্ধারকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘ওদের (ছাত্রলীগ) নিয়ন্ত্রণ করে কারা? ওদের সৎ কাজে কেন লাগানো হচ্ছে না। ওদের কুড়িগ্রামে পাঠাও। সৎ কাজে লাগাতে সরকারি ভাণ্ডার থেকে চাল/কাপড় দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় পাঠান।’ 

আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের বক্তব্য পরস্পরবিরোধী উল্লেখ করে মানবাধিকার কর্মী খুশি কবির বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বন্যাদুর্গতদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করতে উত্তরাঞ্চলে গেছেন। অথচ বন্যার্তদের জন্য ১৭ আগস্ট যখন গণজাগরণ মঞ্চ ত্রাণ সংগ্রহ করছে, তখন তার দলের ছাত্রসংগঠনের নেতারা হামলা করেন। সে সময় তারা বলেন, বন্যা কই পাইছিস? দেশে কোনো বন্যা নাই, তোরাই বন্যার গল্প বানাইছিস।’

তিনি বলেন, ‘কোথাও কোনো দুর্যোগ হলে দেশের অন্যান্য প্রান্ত থেকে মানুষ আসবে। সাহায্য-সহযোগিতা করবে- এটাই সব সময় চলে আসছে। কিন্তু সরকারি দলের কর্মীরা সেটা চান না। তারা একাই ক্রেডিট নিতে চান। তারা ছাড়া অন্য কেউ যেন ত্রাণ সংগ্রহ ও দিতে না পারে, সেজন্য হামলাও চালান। এটি একটি অশুভ লক্ষণ।’

খুশি কবির আরো বলেন, ‘ইতিহাস বলে, দেশে কোনোদিন স্বৈরশাসক টিকে থাকতে পারেনি। কোনোদিন পারবেও না। অথচ ১৯৭১ সালে যে রাজনৈতিক দলের নেতার ডাকে গণতন্ত্রের জন্য মানুষ যুদ্ধ করেছিল, তারা আজ দলীয় ক্যাডার দিয়ে স্বৈরাচারীর মতো ঘটনাগুলোকে প্রশ্রয় দিচ্ছে।’

লিখিত বক্তব্যে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার বলেন, ‘গণমাধ্যমে প্রচারিত সংবাদ সূত্রে দেশের ৩০ জেলায় ৬০ লাখের বেশি মানুষ আজ বন্যাকবলিত। তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও জরুরি চিকিৎসার অভাব সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগে ফেলে দিয়েছে। গৃহপালিত পশুপাখির মৃত্যু ও বন্যার পানিতে বিস্তীর্ণ ফসলী জমি তলিয়ে যাওয়ায় দীর্ঘমেয়াদী  অভাব ও দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা রয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘গণজাগরণ মঞ্চ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ-সঙ্কটকালে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছে। সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস, খুন-ধর্ষণের প্রতিবাদে মঞ্চ বারবার মানুষের কাছে ছুটে গেছে। এবারও ভয়াবহ বন্যায় ত্রাণ কার্যক্রম চালাতে ‘বানভাসি মানুষের পাশে তারুণ্য : বাঁচাও মানুষ’ শীর্ষক কর্মসূচি ঘোষণা করে ত্রাণ সংগ্রহ করা হচ্ছিল। গত ১৭ আগস্ট ত্রাণ তৎপরতা জোরদারে শাহবাগে মানববন্ধন শেষে পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আমরা ত্রাণ সংগ্রহ  করছিলাম। এ সময় একদল উচ্ছৃঙ্খল যুবক মঞ্চের কর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এতে পাঁচ জন আহত হন। পরদিনও তারা আমাদের ওপর হামলা চালায়।’

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইমরান এইচ সরকার বলেন, ‘সরকার আমাদের ওপর বিরাগভাজন হচ্ছে কেন, আমরা তা জানি না। তবে দেশের যেখানে কোনো অন্যায় অবিচার হবে সেখানে গণজাগরণ মঞ্চ যাবে। মানুষের পাশে দাঁড়াবে।’

এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন ছাত্র ইউনিয়নের সভপতি জিলানী শুভ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি ইমরান হাবিব রুমন প্রমুখ।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২০ আগস্ট ২০১৭/নূর/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়