ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

‘বিএনপির নাকে খত নয়, সরকার বাধ্য হবে’

এসকে রেজা পারভেজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:২০, ৭ ডিসেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘বিএনপির নাকে খত নয়, সরকার বাধ্য হবে’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : নাকে খত দিয়ে বিএনপির নির্বাচনে আগমন নয় বরং এই সরকার সকল দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন দিতে বাধ্য হবে বলে মন্তব্য করেছে বিএনপি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় এই মন্তব্য করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল এই মন্তব্য করে বলেন, ‘নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়া একটি রাজনৈতিক দলের অধিকার, এটি কারো পৈত্রিক সম্পত্তি নয়। বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষিতে নাকে খত দিয়ে বিএনপির নির্বাচনে যাওয়ার প্রশ্নই উঠতে পারে না।’

এর আগে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেন খালেদা জিয়া। ওই বৈঠকের বিস্তারিত জানাতেই সংবাদ সম্মেলনে আসেন বিএনপি মহাসচিব।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বর্তমানে যারা সরকারে আছেন, তাদেরকে বাধ্য হতে হবে সব রাজনৈতিক দলগুলো যেন নির্বাচনে আসে তার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করতে। এটা শুধু বিএনপির কথা নয়, এটা দেশের জনগণের কথা।’

কম্বোডিয়া সফর সম্পর্কে জানাতে বৃহস্পতিবার গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘বিএনপি নাকে খত দিয়ে আগামী নির্বাচনে আসবে।’

এর প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আপনারা নিশ্চয় লক্ষ্য করেছেন যে, আজকের সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের কাছ থেকে এই প্রশ্ন এসেছে যে, এটা (নির্বাচন) সবচেয়ে বড় সংকট হয়ে দেখা দিয়েছে। সব দলের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান করা। নিরপেক্ষ একটা সরকারের অধীনে নির্বাচন করা- এই প্রশ্নটা জাতির সামনে বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। এখন ঔদ্ধত্য ও দাম্ভিকতা দিয়ে তো দেশ শাসন চলবে না। দেশকে এগিয়ে নেওয়া যাবে না, গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া যাবে না।’

তিনি বলেন, ‘যে কথাটা আমরা বার বার বলেছি, আমরা সংঘাত চাই না, আমরা অস্থিতিশীলতা চাই না। এবার নির্বাচনে যাতে সত্যিকার অর্থে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর সম্ভব হয়, গণতন্ত্রকে এখানে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়া সম্ভব হয়, জনগণের অধিকার যেন প্রতিষ্ঠিত হয়, সেটাই আমরা চাচ্ছি, জনগণ সেটা চাচ্ছে।

যদি প্রধানমন্ত্রী দায়িত্বশীল নেত্রী হন, তাহলে অবশ্যই তাকে এদিকেই চিন্তা করতে হবে এবং জনগণের মনের আশা-আকাক্সক্ষা বুঝতে হবে। সেভাবেই তাকে কাজ করতে হবে।’

বিএনপির সঙ্গে কোনো সংলাপে রাজি নন- সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এটা তার (প্রধানমন্ত্রী) দায়। আজকে নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করা এবং সব দলগুলোকে নির্বাচনে নিয়ে আসা যিনি সরকারের প্রধান তার দায়। নির্বাচন করবেন কি করবেন না, নির্বাচন হবে কি হবে না এটার দায়িত্ব তাকেই বহন করতে হবে।’

বিএনপি চেয়ারপারসনকে ক্ষমা চাইতে হবে বলে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্যেরও সমালোচনা করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ক্ষমা চাওয়ার ব্যাপারে তিনি যেটা বলেছেন, এটা জনগণের কাছে হাস্যকর মনে হবে। আওয়ামী লীগ দ্বিতীয় দফায় ২০১৪ সালে বিনা নির্বাচনে সরকার গঠন করার পরে জনগণের ওপরে অত্যাচার-নির্যাতন-নিপীড়ন করেছে ও করে চলেছে এবং সম্পূর্ণ গণবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। সে ক্ষেত্রে ক্ষমা কাকে চাইতে হবে সেটা জনগণই বিচার করবে। সে জন্য দেশনেত্রী (খালেদা জিয়া) আগেই বলে দিয়েছেন যে, তার উপরে, তার দলের উপরে এবং দেশের মানুষের উপরে যে নির্যাতন চলছে, সে বিষয়টিতে তিনি তার ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে ক্ষমা করে দিয়েছেন।’

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুল কাইয়ুম উপস্থিত ছিলেন।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৭ ডিসেম্বর ২০১৭/রেজা/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়