ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

কর্মকর্তাদের প্রতি দুদক চেয়ারম‌্যানের অসন্তোষ

এম এ রহমান মাসুম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৩৭, ৭ ডিসেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
কর্মকর্তাদের প্রতি দুদক চেয়ারম‌্যানের অসন্তোষ

নিজস্ব প্রতিবেদক : দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ, অনুসন্ধান ও তদন্ত নিয়ে কর্মকর্তাদের প্রতি ‘অসন্তোষ’ প্রকাশ করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।

বৃহস্পতিবার কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে জার্মান উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা-জিআইজেড ও দুদকের যৌথ উদ্যোগে কমিশনের পাঁচ বছর মেয়াদি কৌলশগত কর্মপরিকল্পনার প্রথম বছরের কার্যক্রম ও ২০১৮ সালের কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণে মতবিনিময় সভায় ইকবাল মাহমুদ এ অসন্তোষ প্রকাশ করেন।

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘২০১৭ সালে কিছু ইতিবাচক কার্যক্রম বাস্তবায়িত হয়েছে, যেমন- সশস্ত্র পুলিশ ইউনিট, হাজতখানা, হটলাইন ১০৬, গোয়েন্দা ইউনিট গঠন। কিন্ত অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ, অভিযোগের অনুসন্ধান, তদন্ত ও প্রসিকিউশনের কর্মকর্তাদের নৈপূণ্য, দক্ষতা এবং একাগ্রতার তীব্র অভাব পরিলক্ষিত হয়েছে এবং সার্বিকভাবে আমাদের হতাশ করেছে।’

সভায় কমিশনের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে প্রশ্ন রেখে ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘কমিশনের কর্মকর্তাদের কর্মতৎপরতা কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় থাকলে কীভাবে দুদকের মামলার আসামিরা আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে মুক্তভাবে ঘুরে বেড়ায়? কেন তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে না?’

তিনি বলেন, ‘অভিযান পরিচালনার জন্য গাড়ি, সশস্ত্র পুলিশ সবই রয়েছে, কেবল উদ্যোগের অভাবেই আসামিরা ঘুরে বেড়ায়। এর দায়িত্ব কারা নেবে? অবশ্যই কর্মকর্তাদের নিতে হবে।’

আগামী বছর আরো উদ্দীপনা নিয়ে কর্মকর্তাদের কাজ করার আহ্বান জানিয়ে ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘সবাই মনে রাখবেন আগামী বছর হয়ত কমিশন এ জাতীয় শৈথিল্য প্রশয় দেবে না।’

দুদকের গোয়েন্দা শাখার বিষয়ে দুদক চেয়ারম‌্যান বলেন, ‘কমিশনের ভেতরে এবং বাইরের সরকারি এবং বেসরকারি সকল সংস্থায় নিবিড় গোয়েন্দা কার্যক্রম চালানোর জন্য একটি বিশেষ “সার্ভিলেন্স টিম” গঠন করা হবে। এই টিমের সদস্য কারা থাকবেন তা কমিশনের প্রধান নির্বাহী হিসেবে কেবল চেয়ারম্যান জানবেন এবং এই “সার্ভিলেন্স টিম” কমিশনের প্রধান নির্বাহীর নিকট প্রতিবেদন দেবে। এসব প্রতিবেদনে যেসব দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তার নাম থাকবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

তিনি বলেন, ‘দুদকসহ সরকারি-বেসরকারি সংস্থায় যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির কুখ্যাতি রয়েছে তাদেরকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে।’

২০১৮ সালে কোচিং বাণিজ্য, প্রশ্নপত্র ফাঁসসহ শিক্ষা ক্ষেত্রে দুর্নীতি প্রতিরোধে কমিশন “সর্বোচ্চ গুরুত্ব” দেবে বলে জানান প্রাক্তন সচিব ইকবাল মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘কতিপয় শিক্ষক-কর্মকর্তার অনৈতিক কার্যক্রমের কাছে দেশের শিক্ষা জিম্মি থাকতে পারে না। তাদের কারণেই দেশ গড়ার কারিগর শিক্ষকদের মর্যাদা ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে। আমরা সম্মিলিতভাবে শিক্ষকদের হারানো মর্যাদা ফিরিয়ে আনতে চাই।’

দুদকের মানিলন্ডারিং মামলার দীর্ঘসূত্রিতায় উদ্বেগ প্রকাশ করে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘পারস্পরিক আইনি সহায়তা অনুরোধ (এমএলএআর) বিষয়টির জটিলতায় অনেক আন্তঃদেশীয় মানি লন্ডারিং তদন্ত নিষ্পত্তি করা যাচ্ছে না। এটা এখন বৈশ্বিক সমস্যায় পরিণত হয়েছে।’

এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে দুদকের নিয়মিত যোগযোগের জন্য মানি লন্ডারিং অনুবিভাগের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন তিনি।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে দুদক কমিশনার এ এফ এম আমিনুল ইসলাম, সচিব  মো. শামসুল আরেফিন, মহাপরিচালক মো. জাফর ইকবাল, মো. মঈদুল ইসলাম, মো. আসাদুজ্জামান, মো. আতিকুর রহমান, মো. মোস্তাফিজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৭ ডিসেম্বর ২০১৭/এম এ রহমান/সাইফুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়