ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

সোলার পাওয়ার প্ল্যান্টের বিদ্যুৎ এখন জাতীয় গ্রিডে

সাইফ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:১৩, ১০ ডিসেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সোলার পাওয়ার প্ল্যান্টের বিদ্যুৎ এখন জাতীয় গ্রিডে

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের প্রথম সোলার পাওয়ার প্ল্যান্টের বিদ্যুৎ এখন জাতীয় গ্রিডে যোগ হচ্ছে। জামালপুরের সরিষাবাড়ীর সিমলা বাজারে স্থাপিত এই সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্রটি তিন মেগাওয়াট ক্ষমতার।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার ঢাকায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন।

এর পাশাপাশি তিনি সুনামগঞ্জের সাল্লায় ৪০০ কিলোওয়াট ক্ষমতার একটি ফটোভোল্টাইক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, চট্টগ্রামের শিকলবাহায় ২২৫ মেগাওয়াট ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার দুটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদ্বোধন করেছেন। একই সঙ্গে দশ উপজেলার শতভাগ বিদ্যুতায়ন কার্যক্রমেরও উদ্বোধন করেছেন তিনি।

সরিষাবাড়ীতে দেশের প্রথম সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণ করা হয়েছে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে। ‘এনগ্রিন সরিষাবাড়ী সোলার প্ল্যান্ট লিমিটেড’ নামের এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য জমি দিয়েছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড।

এতে বিনিয়োগ করেছে জার্মানির আইএফই এরিকসেন এজি, বাংলাদেশের কনকর্ড প্রগতি কনসোর্টিয়াম লিমিটেড ও জুপিটার এনার্জি লিমিটেড। আট একর জমিতে সাড়ে ১১ হাজার সোলার প্যানেল ব্যবহার করে গড়ে তোলা হয়েছে তিন মেগাওয়াটের এই সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র।

আগামী এক বছরের মধ্যে এরকম আরও পাঁচটি কেন্দ্র থেকে ৩৩২ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।

সুনামগঞ্জের সাল্লায় ৪০০ কিলোওয়াট ক্ষমতার ফটোভোল্টাইক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ব্যবহার করা হয়েছে দুই হাজার ৩২২টি সোলার প্যানেল। এই কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সুবিধা পাবে হাওরের ৪০০ পরিবার।

চট্টগ্রামের পটিয়ায় শিকলবাহায় ২২৫ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে গ্যাস টারবাইনে ১৫০ এবং স্টিম টারবাইনে ৭৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ তৈরি হবে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমনুরার ঝিলিম বাজারে চালু হওয়া নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে আসবে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ।

বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব আহমেদ কায়কাউস অনুষ্ঠানে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে দেশের বিদ্যুৎ খাতের অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরেন।

তিনি জানান, ২০০৯ সালের শুরুতে আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে, বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা তখন ছিল ৪ হাজার ৯৪২ মেগাওয়াট। সে সময় গ্রাহক ছিল এক কোটি আট লাখ। বর্তমানে উৎপাদন ক্ষমতা বেড়ে ১৬ হাজার ১৪৯ মেগাওয়াট এবং গ্রাহক সংখ্যা ২ কোটি ৭০ লাখে পৌঁছেছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০১ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত আট বছরে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি না পাওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে বলেন, “বিদ্যুৎ উৎপাদনে দেশ পিছিয়ে গিয়েছিল। বিদ্যুতের সমস্যা সমাধানে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এ সরকার দায়িত্ব নেওয়ার সময় ২০০৯ সালের শুরুতে দেশে ২৭টি বিদ্যুৎকেন্দ্র ছিল। এখন ১১২টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘উন্নয়নে বিদ্যুৎ উৎপাদন একান্ত অপরিহার্য। আমাদের প্রচেষ্টা ছিল; কত দ্রুত বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারি।’ তিনি বলেন, ‘সারাদেশে ৪৫ লাখ সোলার প্যানেল আজ উৎপাদনে চলে এসেছে। বিজয়ের মাসে আমরা এই সুযোগ করে দিতে পারলাম।

তিনি বলেন, ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছিল বলেই জনগণের জন্য কাজ করার সুযোগ পাচ্ছি। আমরা চাই, মানুষ যেন উন্নত জীবন পায়। সেজন্যই আমাদের এই প্রচেষ্টা।

উদ্বোধনের আনুষ্ঠানিকতার পর প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট জেলাগুলোর কর্মকর্তা এবং স্থানীয় নাগরিকদের সঙ্গেও ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলেন।

অন্যদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, মুখ্য সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, বাংলাদেশে সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত  আবদুল্লাহ এইচ এম আল-মুতাইরি এবং বাংলাদেশে কুয়েতের রাষ্ট্রদূত আদেল মোহাম্মদ এএইচ হায়াৎ উপস্থিত ছিলেন।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১০ ডিসেম্বর ২০১৭/সাইফ/এনএ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়