ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

‘রোহিঙ্গাদের আগমনে পরিবেশের ওপর মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব পড়েছে’

সাইফ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৪:৪৪, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘রোহিঙ্গাদের আগমনে পরিবেশের ওপর মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব পড়েছে’

রাইজিংবিডি ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মিয়ানমার থেকে বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা আগমনের ফলে বাংলাদেশের বন ও পরিবেশের ওপর মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব পড়েছে। এর ফলে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিযোজনের ওপর মারাত্মক চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি বলেন, মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা আসার ফলে বাংলাদেশ বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। মানবিক কারণে আমরা কক্সবাজারে ১ হাজার ৭৮৩ হেক্টর বনভূমির ওপর তাদেরকে আশ্রয় দিয়েছি।

মঙ্গলবার প্যারিসে ওয়ান প্ল্যানেট সামিটে উচ্চপর্যায়ের সভায় এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সংকট আমাদের বন ও পরিবেশের ওপর মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব সৃষ্টি করেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতিকর প্রভাবের কারণে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম, যদিও এই ঝুঁকির জন্য আমরা দায়ী নই। তিনি বলেন, আমরা সীমিত সম্পদ নিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের পরিণতি প্রশমন ও অভিযোজন করে যাচ্ছি।

শেখ হাসিনা বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্য আয়ের দেশে পরিণত করার লক্ষ্যে প্রণীত টেকসই উন্নয়ন কৌশলের মূলস্রোতে জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যু অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তিনি বলেন, একটি উন্নয়নশীল দেশ হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা মোকাবিলায় জিডিপির এক শতাংশ ব্যয় করে আসছে।

সকল অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং পরিবেশ কর্মকাণ্ডে ওয়াটার সাসটেইনেবিলিটি ইস্যুকে অগ্রাধিকার দেওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশের অঙ্গীকারের কথা উল্লেখ করেন তিনি।

এ শীর্ষ সম্মেলনে বিশ্ব নেতাসহ বেসরকারি সংগঠন, ফাউন্ডেশন এবং সরকারি ও বেসরকারি খাতের প্রায় ২ হাজার প্রতিনিধি অংশ নিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়নে তার অঙ্গীকারের কথা পুনরায় উল্লেখ করেন এবং জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি বাস্তবায়নে ইতিমধ্যে ব্যাপক প্রকল্প গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্য ও বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন রক্ষায় ৫০ দশমিক ৭৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে একটি বিশাল প্রকল্প বর্তমানে চলমান রয়েছে।

তিনি বলেন, উপকূলীয় এলাকার জনগণকে ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, ভাঙন এবং লবণাক্ত পানি থেকে রক্ষায় সবুজ বেস্টনি সৃষ্টি করা হয়েছে। প্রায় ৬৭ হাজার হেক্টর জমি এসব এলাকায় বনায়নের জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার আগামী ৫ বছরে বাংলাদেশে বনায়ন ২ শতাংশ বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় কর্মসূচি গ্রহণ করবে। ফলে বিদ্যমান বনভূমি ২২ শতাংশ থেকে প্রায় ২৪ শতাংশে উন্নীত হবে।

তিনি বলেন, পার্টনারদের সমর্থনসহ আমাদের নিজস্ব সম্পদ দিয়ে এই টার্গেট পূরণে আমরা প্রচেষ্টা জোরদার করব।

শেখ হাসিনা জলবায়ু ন্যায়বিচারের প্রতি অঙ্গীকারপূরণ এবং ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালনের জন্য উন্নত দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, একমাত্র দায়িত্ব ভাগাভাগির মাধ্যমে আমরা বিশ্বকে নিরাপদ করতে পারি। আমাদের সম্মিলিত অঙ্গীকার ও স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধিতে অবদান রাখবে।

তথ্যসূত্র : বাসস

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৩ ডিসেম্বর ২০১৭/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়