ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

গরুর মাংস আমদানি বন্ধের উদ্যোগ নেওয়া হবে

মোহাম্মদ নঈমুদ্দীন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:২১, ১৭ জানুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
গরুর মাংস আমদানি বন্ধের উদ্যোগ নেওয়া হবে

সচিবালয় প্রতিবেদক : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ বলেছেন, নীতিমালা সংশোধন করে ভারত থেকে গরুর মাংস আমদানি বন্ধ করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, আমরা গরুর মাংস আমদানির বিপক্ষে। মাংস আমদানি বন্ধের সুপারিশ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে আমরা জানিয়েছি।

বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে মৎস ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী এ কথা জানান। ২০ থেকে ২৫ জানুয়ারি সারা দেশে দ্বিতীয়বারের মতো প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ-২০১৮ উদযাপন উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে প্রতি বছর ৬৯ লাখ মেট্রিকটন মাংসের চাহিদা রয়েছে। আমাদের ইতিমধ্যেই উৎপাদন ৭১ লাখ মেট্রিকটন। তাই ভারত থেকে মাংস আমদানির প্রয়োজন নেই। গতকাল বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তিনিও মাংস না আনার পক্ষে। সরকারিভাবে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ যে, আমরা মাংস আমদানি করব না। তারপরও মাংস আনলে আমার খামারিরা মারা পড়বে। এই শিল্পটা ধ্বংস হয়ে যাবে।’

‘যেহেতু আমরা (মাংস আমদানি) চাচ্ছি না এবং এতে (মাংস আমদানিতে) যদি আইনে বাধা না থাকে, তবে সেটা প্রতিরোধ করতে হবে, আইন পরিবর্তন করতে হবে। সুযোগ থাকলে সেই সুযোগ রোধ করার ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রয়োজনে নীতিমালা সংশোধন করে আমদানি বন্ধের উদ্যোগ নেওয়া হবে-বলেও জানান মন্ত্রী।

মাংসের দাম কমেছে জানিয়ে নারায়ণ চন্দ্র চন্দ বলেন, বাজারে মাংসের দাম কমে এসেছে। আমরা চাই আরো কমিয়ে আনতে। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে উৎপাদন ব্যয় কমাতে চাই আমরা। সে ব্যাপারে কার্যকরি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উৎপাদন ব্যয় কমে গেলে মাংসের দামও কমে যাবে। আমরা চাই, জনগণ যাতে স্বল্প ও ন্যায্যমূল্যে মাংস খেতে পারে পাশাপাশি খামারিরা টিকে থাকতে পারে। সেই ব্যবস্থাই আমরা নিচ্ছি।

উন্নত জাতের গরু উৎপাদনে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ব্রাহমা জাতের গরু আমাদের দেশে আনা হয়েছে, আমাদের দেশে বাচ্চা হয়ে ২ বছরে ৮০০ কেজিতে পৌঁছেছে। এই জাতের গরুতে এক টন (এক হাজার কেজি) পর্যন্ত মাংস হয়। মাংসের চাহিদা পূরণের জন্য অধিক ওজনের গরুগুলোর দিকে আমরা নজর দিচ্ছি।’

তিনি বলেন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ভিশন হচ্ছে  সবার জন্য নিরাপদ, পর্যাপ্ত ও মানসম্মত প্রাণিজ আমিষ নিশ্চিত করণ। এই ভিশন বাস্তবায়ন করতে নিরাপদ প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পুরণে গবাদিপশু, হাঁস, মুরগি, ও দুগ্ধ উৎপাদন বৃদ্ধিসহ সংরক্ষণ, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও জাত উন্নয়ন, আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি করে দারিদ্র্য দূরীকরণ ও নারীর ক্ষমতায়নে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

মাংসের দাম কমানোর সক্রিয়  উদ্যোগ আছে কী না-জানতে চাইলে প্রাণিসম্পদমন্ত্রী বলেন, ‘এটা শুধু এককভাবে আমাদের মন্ত্রণালয়ের ওপর নির্ভর করবে না। এর সঙ্গে বাণিজ্য ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জড়িত। এর ভিত্তিতে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা করে আমরা পদক্ষেপ নেব।’

ভেটেরিনারি হাসপাতালে পশুর চিকিৎসা সঠিকভাবে পায় না-এমন অভিযোগের জবাবে তিনি বলেন, মাঠ পর্যায়ে আমাদের কর্মকর্তারা সেবামুখী। আমি নিজেই গিয়ে তার চিত্র দেখতে পেয়েছি। কিন্তু আমাদের লোকবলের সংকট রয়েছে। জনবল বাড়ানো দরকার।’

এ সময় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব মাকসুদুল হাসান খান, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মো. আইনুল হকসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

মন্ত্রণালয়ের সচিব মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব মাকসুদুল হাসান খান বলেন, ‘আমদানি নীতির বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আমাদের মতামত চেয়েছে, আমরা বলেছি, মাংস আমদানি করার দরকার নেই।’

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মো. আইনুল হক বলেন, ‘বেশি দামে মাংস খাচ্ছি এটা বড় বিষয় নয়। এটা আমাদের সামাজিক দায়িত্ব। এখন সাড়ে ৫ লাখ লোক গবাদিপশু পালন করছে। এই বাজারটা নষ্ট করে ফেললে আমাদের সমাজটা কোন অবস্থায় পড়বে, এটা একটা চিন্তা।’

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৭ জানুয়ারি ২০১৮/নঈমুদ্দীন/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়