ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

পুনরায় স্বীকারোক্তিতে তারেকের নাম যুক্তিসঙ্গত নয়

মামুন খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:১৭, ২২ জানুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
পুনরায় স্বীকারোক্তিতে তারেকের নাম যুক্তিসঙ্গত নয়

নিজস্ব প্রতিবেদক : ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় মুফতি আব্দুল হান্নানের প্রথম স্বীকারোক্তি, যেখানে তিনি তারেক রহমানের নাম বলেননি তাই পুনরায় স্বীকারোক্তিতে তার নাম আসা যুক্তিসঙ্গত নয়।

সোমবার পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে স্থাপিত অস্থায়ী ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এ বর্তমানে যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত স্টেট ডিফেন্স আইনজীবী একেএম আখতার হোসেন এদিন প্রায় ঘণ্টাব্যাপী  আংশিক যুক্তি উপস্থাপনে একথা বলেন।

এদিন বেলা সোয়া ১২টার দিকে বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন এজলাসে উঠলে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম শুরু হয়।

শুরুতে কারাগারে থাকা আসামি মাওলানা আব্দুল হান্নান ওরফে সাব্বিরের পক্ষে অবশিষ্ট যুক্তি উপস্থাপন করেন অ্যাডভোকেট মো. মাঈনুদ্দিন মিয়া। তিনি এদিন প্রায় দেড় ঘণ্টা যুক্তি উপস্থাপনের পর তা শেষ হয়।

যুক্তি উপস্থাপনে তিনি বলেন, মামলাটিতে জজ মিয়া, আব্দুল হাসেম রানার স্বীকারোক্তি রয়েছে। যা পরবর্তীতে নাটক হিসেবে উল্লেখ করা হয়। প্রকৃত পক্ষে জজ মিয়ার স্বীকারোক্তি অনুযায়ীই ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটেছিল। যা এজাহারকারীর বক্তব্যের সঙ্গে মিলে যায়। সেটাকে নাটক হিসেবে উল্লেখ করে মুফতি হান্নানকে দিয়ে আরেকটি নাটক সাজিয়ে তার আসামিকেও অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে।

তিনি বলেন, তার আসামির নাম শুধু আব্দুল হান্নান, আব্দুল হান্নান ওরফে সাব্বির নয়। ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তার নামের সঙ্গে সাব্বির নাম জুড়ে দিয়ে আসামি করা হয়েছে। তাই তিনি তার আসামির বেকসুর খালাস দাবি করেন। এর আগেও এ আইনজীবী দুদিন যুক্তি উপস্থাপন করেন।

আসামি হান্নান সাব্বিরের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন শেষ হওয়ার পর বেলা পৌনে ২টায় আসামি তারেক রহমানের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন শুরু হয়।

তারেক রহমানের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপনে আইনজীবী আখতার হোসেন বলেন, মামলার এহাজারে তারেক রহমানের নাম ছিল না। কোনো সাক্ষীই তারেক রহমানের নাম বলেননি। তদন্ত কর্মকর্তা ফজলুল কবির প্রথম যে চার্জশিট দাখিল করেন সেখানেও তারেক রহমানের নাম নেই। ওই চার্জশিট দাখিলের আগে মুফতি হান্নান মামলাটিতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। সেখানেও তিনি তারেক রহমানের নাম বলেননি। মামলাটি অধিকতর তদন্তে যাওয়ার পর মুফতি হান্নানকে দিয়ে পুনরায় একটি স্বীকারোক্তি করানো হয়। যেখানে তারেক রহমানের নাম আসে। মুফতি হান্নানের প্রথম স্বীকারোক্তিতে যেখানে তিনি তারেক রহমানের নাম বলেননি তাই পুনরায় স্বীকারোক্তিতে তার নাম আসা যুক্তিসঙ্গত নয়।

সোমবার তারেক রহমানের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন অব্যাহত থাকা অবস্থায় বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন আগামীকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত যুক্তি উপস্থাপন মুলতবি করেন।

মামলাটিতে এর আগে পলাতক আসামি মাওলানা লিটন ওরফে জুবায়েরের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আবদুল বাতেন, পলাতক আসামি  মুফতি সফিকুর রহমানের পক্ষে আইনজীবী মাজহারুল কুদ্দুস, পলাতক আসামি মো. ইকবালের পক্ষে আইনজীবী মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম, পলাতক আসামি মাওলানা তাজউদ্দিনের পক্ষে আইনজীবী আশরাফুল আলম, পলাতক আসামি জাহাঙ্গীর আলম বদরের পক্ষে আইনজীবী সাইদুল হক, রাতুল আহমদ বাবুর পক্ষে অ্যাডভোকেট মশিউর রহমান, মহিবুল মোত্তাকিনের পক্ষে অ্যাডভোকেট হালিমা আক্তার, হানিফ পরিবহনের মালিক মো. হানিফের পক্ষে আইনজীবী চৈতন্য চন্দ্র হালদার, পলাতক মো. খলিলের পক্ষে অ্যাডভোকেট খলিলুর রহমান খান, বিএনপি নেতা প্রাক্তন সংসদ সদস্য শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদের পক্ষে অ্যাডভোকেট আশরাফ-উল আলম, বিএনপি নেতা পলাতক হারিছ চৌধুরীর পক্ষে অ্যাডভোকেট আবু তৈয়ব ও পলাতক আনিসুল মোরসালিনের পক্ষে অ্যাডভোকেট সাখাওয়াৎ হোসেন যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন।

গত ১ জানুয়ারি মামলার আসামিদের আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ সাজা দাবি করে রাষ্ট্রপক্ষ যুক্তিতর্ক পেশ শেষ করে।

প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জনসভায় গ্রেনেড হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদিকা ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জনের মৃত্যু হয়। গ্রেনেডের স্প্লিন্টারের আঘাতে আহত হন কয়েক শতাধিক। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেলেও শ্রবণশক্তি হারান।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/২২ জানুয়ারি ২০১৮/মামুন খান/মুশফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়