‘বর্তমান পদ্ধতিতে প্রশ্ন ফাঁস রোধ সম্ভব নয়’
মোহাম্মদ নঈমুদ্দীন || রাইজিংবিডি.কম
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : বর্তমান পদ্ধতিতে প্রশ্ন ফাঁস ঠেকানো সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন শিক্ষা সচিব সোহরাব হোসাইন।
তিনি বলেন, বর্তমান প্রক্রিয়ায় কোনোভাবেই প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকানো সম্ভব নয়। আমাদের নতুন কোনো পদ্ধতি বের করতে হবে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের শিক্ষা সচিব এ কথা বলেন।
সোহরাব হোসাইন বলেন, ‘আমাদের এমন কোনো প্রক্রিয়ায় যেতে হবে, যেখানে প্রশ্নপত্র ফাঁসের সুযোগ থাকবে না। আর এটা নিয়ে আমরা কাজ করছি। ব্যক্তিগতভাবে আমি উদ্যোগ নিয়ে কাজ করছি। খুব দ্রুতই এই প্রক্রিয়া হয়তো আমরা উদ্ভাবন করতে পারবো।’
প্রশ্ন ফাঁস দ্রুত ছড়াতে ইন্টারনেটও কিছুটা দায়ী মন্তব্য করে সোহরাব হোসাইন বলেন, যদি নেট সিস্টেম না থাকতো তাহলে যারা প্রশ্ন ফাঁসের সাথে জড়িত তাদের জন্য এ কাজটা এতটা সহজ হতো না। একটি জায়গায় প্রশ্ন ফাঁস হলেই তা মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে।’
তিনি বলেন, ‘নেটের কারণে যে প্রশ্নপত্র ফাঁস হচ্ছে তা নয়, বরং যেখানেই প্রশ্ন ফাঁস হচ্ছে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। আর এই নেট যদি না থাকতো তাহলে এতো দ্রুত ফাঁস হওয়া প্রশ্ন ছড়িয়ে যেত না। হয়তো কেউ জানতেই না।’
‘আগে মানুষের নৈতিকতা ছিল উন্নত। তখন প্রশ্ন কোনো স্থানে ফাঁস হলেও তা একজন আরেকজনকে বলতো না। লজ্জা করতো। ভাবতো খারাপভাবে নেবে। এখন তা নয়। এখন নিজের থেকে অন্যকে প্রশ্ন অনলাইনে পাঠিয়ে দেয়,’ বলেন শিক্ষা সচিব।
তিনি বলেন, ‘এখন ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে প্রশ্ন ফাঁস জানান দিচ্ছে। এটা গার্ডিয়ান থেকে শুরু করে সবার মধ্যে এ প্রবণতা শুরু হয়েছে।’
সচিব বলেন, ‘প্রশ্নপত্র ফাঁসের পথ বের করতে ২০১৪ সালে একটি কমিটি হয়েছিল। সেখানে আমি কমিটির প্রধান ছিলাম। খুঁটিনাটি সবগুলো বিষয় দেখে আমরা নিজেরাই বলছিলাম বর্তমানে যে প্রক্রিয়ায় পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে এখানে প্রতিটি প্রশ্ন ফাঁস হওয়া স্বাভাবিক।’
সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, আমাদের একটি প্রক্রিয়া উদ্ভাবন করতে হবে; যে প্রক্রিয়ায় প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার অবকাশ থাকবে না। আর তাতে সকলে মিলে এগিয়ে আসতে হবে,’ যোগ করেন শিক্ষা সচিব।
সোহরাব হোসাইন বলেন, ‘পাবলিক পরীক্ষা যথাযথ পরিচালনা করা এককভাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দ্বারা সম্ভব নয়। আগেও কখনো সম্ভব হয়নি। এখানে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ আরো বিভিন্ন উইং যুক্ত।’
কোর্টের রায়ের প্রসঙ্গ সচিব বলেন, ‘আমরা আমাদের কর্মকর্তাদের কোর্টে পাঠিয়েছি। কোর্ট কী আদেশ দিয়েছে সেটি সংগ্রহ করার জন্য। অবশ্যই আদালত যে আদেশ দেবে সেটি আমরা পরিপূর্ণভাবে পালন করবো। কীভাবে প্রতিপালন করবো সেটা মন্ত্রীসহ বসে নির্ধারণ হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি আদালতের কোনো বিষয় না জেনে কোনো কথা বলার জন্য ক্ষমতাপ্রাপ্ত নই। আদালত যেকোনো সিদ্ধান্ত দিলে আমরা সেটা প্রতিপালন করতে বাধ্য। আপনারা বলছেন আমাদের নিস্ক্রিয়তা আছে, এটা থাকলে আমরা তা আদালতের কাছে তা বলবো।’
শিক্ষা সচিব আরো বলেন, ‘সারা দেশে এ পরীক্ষার সাথে ২৭ থেকে ২৮ হাজার মানুষের ইনভলভমেন্ট। এতগুলো মানুষের মধ্যে একজন লোকও যদি অসৎ হোন তাহলে বাকি সমস্ত সৎ মানুষের অবদান ভেস্তে যায়।’
রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/নঈমুদ্দীন/সাইফ
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন