ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

একুশের প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

আরিফ সাওন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:২৪, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
একুশের প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

নিজস্ব প্রতিবেদক : মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস আজ। পূর্ণ হলো মাতৃভাষা আন্দোলনের ৬৬ বছর।

মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠায় যারা জীবন উৎসর্ করেছেন তাদের আজ ফুলেল শ্রদ্ধায় স্মরণ করছে দেশবাসী।

বুধবার একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে রাজধানীতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদীতে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা । পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন তারা।

এর আগে রাত ১১ টা ৫৩ মিনিটে শহীদ মিনারে আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১১টা ৫৫ মিনিটে আসেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এসময় প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আক্তারুজ্জামান এবং রাষ্ট্রপতিকে স্বাগত জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এরপর রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী শহীদ মিনারের মূলবেদিতে যান। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী শ্রদ্ধা জানানোর পর ১২ টা ৩ মিনিটে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন, জাতীয় সংসদের স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরি। এরপর আওয়ামী লীগের পক্ষে সভাপতি শেখ হাসিনা পুষ্পস্থবক অর্পণ করেন। এরপর দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

পর্যায়ক্রমে বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ, ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি, চৌদ্দ দলের নেতৃবৃদ্ধ, সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনার প্রধান, পুলিশের পক্ষ থেকে পুলিশ প্রধান জাবেদ পাটোয়ারি, অ্যাটর্ জেনারেল, হাই কমিশনার, মুক্তিযুদ্ধে সেক্টর কমান্ডারবৃন্দ, ভারত বাংলাদেশের মিডিয়া ডায়ালগের অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধি দল, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আক্তারুজানামের নেতৃত্বে শিক্ষকবৃন্দ, র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি, সেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান, সমাজতান্ত্রিক দলের পক্ষে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, ওয়ার্কাস পার্টির পক্ষে রাশেদ খান মেনন, সাম্যবাদী দলের নেতৃত্বে দিলিপ বড়ুয়া পুষ্পস্থবক অর্পণ করেন।

এরপরই বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সহযোগী সংগঠন, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ছাত্র, যুব, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ, শ্রমিক, কৃষক সংগঠনের নেতা-কর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষ একে একে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে শুরু করেন।

রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে ১৯৫২ সালের এদিনে ‘বাংলাকে’ বাংলার (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) ছাত্র ও যুবসমাজসহ সর্বস্তরের মানুষ সে সময়ের শাসকগোষ্ঠির চোখ-রাঙ্গানি ও প্রশাসনের ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাজপথে নেমে আসে।

মায়ের ভাষা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে দুর্বার গতি পাকিস্তানি শাসকদের শংকিত করে তোলায় সেদিন ছাত্র-জনতার মিছিলে পুলিশ গুলি চালালে সালাম, জব্বার, শফিক, বরকত ও রফিক গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন।

মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে ’৫২-এর একুশে ফেব্রুয়ারি ছিলো ঔপনিবেশিক শাসন-শোষণ ও শাসকগোষ্ঠির প্রভূসুলভ মনোভাবের বিরুদ্ধে বাঙালির প্রথম প্রতিরোধ এবং ভাষার ভিত্তিতে বাঙালির জাতীয় চেতনার প্রথম উন্মেষ।
জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা (ইউনেস্কো) ১৯৯৯ সালে মহান একুশের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি দেয়ার পর থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়েও গত কয়েক বছর ধরে দিবসটি পালিত হচ্ছে।

২১ ফেব্রুয়ারি জাতীয় ছুটির দিন । এ দিন সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি ভবনসমূহে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে। এছাড়া দিনব্যাপী সরকারী ও বেসরকারী ভাবে বিভিন্ন অনুষ্টানের আয়োজন করা হয়েছে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/সাওন/এনএ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়