ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

‘আমি চাই- কোনো পথশিশু থাকবে না’

বাদল সাহা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:০৭, ১৭ মার্চ ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘আমি চাই- কোনো পথশিশু থাকবে না’

বাদল সাহা, টুঙ্গিপাড়া থেকে : শিশুদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘‘আজকের শিশু আগামী দিনের কর্ণধার। তারাই দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। তাই আমি চাই- কোনো পথশিশু থা্কবে না। তারা পড়াশোনা করবে, খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেবে। মানুষের মতো মানুষ হবে।’’

শনিবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৯তম জন্মদিবস এবং জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধ কমপ্লেক্সে আয়োজিত শিশু সমাবেশে প্রধা্ন অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

এর আগে সকালে টুঙ্গীপাড়া পৌঁছে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর সেখানে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত শিশু সমাবেশে ভাষণ দেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন বাংলাদেশের জনগণ কখনো শোষিত-বঞ্চিত হবে না। তাই মানুষের অধিকার আদায় করতে গিয়ে জীবনের বেশির ভাগ সময় তাকে জেলে কাটাতে হয়েছে। আর বঙ্গবন্ধু অসমাপ্ত আত্নজীবনী পড়লে আপনারা বঙ্গবন্ধুর সম্পর্কে আরো বেশি বেশি জানতে পারবেন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ছোট বেলা থেকে বঙ্গবন্ধু ছিলেন অভাবি ও দুঃখী মানুষের। তাই তিনি ছোট বেলা থেকে নিজের জামা-কাপড়, বই-খাতা গরিব বন্ধুদের দিয়ে দিতেন। গরিব মানুষকে বাড়ির ধানের গোলা থেকে ধান দিয়ে দিতেন। তিনি এ দেশের মানুষকে ভালোবাসতেন।’

৭ মার্চের ভাষণ প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু সেই ৭ মার্চের ভাষণ আজ জাতিসংঘের প্রামাণ্য দলিলে স্থান পেয়েছে। সারা বিশ্বের আড়াই হাজার বিখ্যাত ব্যক্তির ভাষণের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শ্রেষ্ঠ বলে স্বীকৃতি পেয়েছে। মাত্র সাড়ে তিন বছরে তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে পুনর্গঠনে কাজ শুরু করেছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য ৭৫-র ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে নির্মমভাবে স্বপরিবারে হত্যা করা হয়। সেদিন আমরা দুই বোন বিদেশে থাকায় প্রাণে বেঁচে যায়। ছয় বছর আমাদের শরণার্থী জীবন কাটাতে হয়েছে।’



প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘আমার একমাত্র চাওয়া বাংলাদেশের মানুষ সুন্দর জীবন পাবে, তারা শান্তিতে ঘুমাতে পারবে, তিন বেলা পেটভরে খেতে পারবে। আজ আমাদের জন্য সুখবর আছে। জাতির পিতার জন্মদিনে এ সুখবরটা আপনাদের দিচ্ছি। আজ বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশগুলো আগেই উন্নয়নশীল দেশ ছিল। আমরা তাদের থেকে পিছিয়ে ছিলাম।’

অভিভাবক, শিক্ষক ও ধর্মীয় নেতাদের উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা শিশুদের খবর রাখবেন। তারা কোথায় যায়, কী করে- এ সব বিষয়ে কবর রাখতে হবে। যাতে শিশুরা খারাপ কাজে জড়িয়ে বিপথগামী না হতে পারে।’ 

শেখ হাসিনা বলেন, ‘শিশুদের মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করতে হবে। আমরা শিশুদের বিনামূল্যে বই, বৃত্তি দিচ্ছি। শিশুদের মায়েদের ভাতা দিচ্ছি। ৮০ হাজার প্রতিবন্ধীর বৃত্তি দেওয়া হচ্ছে, যাতে তারাও মূলধারায় থেকে পড়াশোনা করে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে।’

বিশেষ অতিথির ভাষণে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি এমপি শিশুদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমাদের শিশুরা জাতির পিতার আদর্শ নিয়ে বেড়ে উঠবে, দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে।’

অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন শহরের সোনালী স্বপ্ন একাডেমীর চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী প্রিয়ন্তী সাহা পিউ। সভাপতিত্ব করেন শহরের এস এম মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র আরাফেত হোসেন।

এ সময় মঞ্চে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রাণালয়ের সচিব নাছিমা বেগম, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার এম বজলুল করিম চৌধুরী ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোখলেসুর রহমান সরকার উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির ভাষণ শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চিত্রাংকন, ৭ মার্চের ভাষণ, গল্প বলা, রচনা প্রতিযোগিতা ও আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিশুদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।

পরে প্রধান অতিথি শেখ হাসিনা দর্শক সারিতে বসে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। দুপুর ১টায় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি সৌধ কমপ্লেক্সে ফিতা কেটে বইমেলা উদ্বোধন ও শিশুদের আঁকা ‘আমার ভাবনায় ৭ মার্চ’ শীর্ষক চিত্র প্রদর্শনী পরিদর্শন করেন।



রাইজিংবিডি/গোপালগঞ্জ/১৭ মার্চ ২০১৮/বাদল সাহা/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়