ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

বাজার নিয়ন্ত্রণে কঠোর ব্যবস্থা নিন

আলী নওশের || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:০৮, ৪ মে ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বাজার নিয়ন্ত্রণে কঠোর  ব্যবস্থা নিন

আর কয়েকদিন পরেই শুরু হচ্ছে পবিত্র রমজান মাস। কিন্তু এ রমজান মাস এলেই পণ্যের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে। কিছু পণ্যের দাম বেড়ে যায় অনেক। বিশেষ করে রমজানে ডাল, ছোলা, চিনি, পেঁয়াজ, রসুন, খেজুর ও ভোজ্যতেলের চাহিদা বেশি থাকায় এসবের দাম বেশি বাড়ে। সাধারণত বাজারে পর্যাপ্ত পণ্য কিংবা সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলে দাম বাড়ে না। কিন্তু আমাদের দেশে দেখা যায় বাজারে পর্যাপ্ত পণ্য  থাকলেও দাম স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি।  জিনিসপত্রের দাম ভোক্তার ক্রয়সীমার বাইরে চলে যায়।

অনেক সময় বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেও পণ্যের দাম বাড়ানো হয়। এরই ধারাবাহিকতায় প্রতিবছর নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম ঊর্ধ্বমুখী হয় রোজা সামনে রেখে। অথচ বিশ্বের কোথাও এরকম দেখা যায় না। বরং তার উল্টোটা দেখা যায়। প্রায় সব মুসলিম দেশেই রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমে যায়। ভোক্তারা এতে স্বস্তিতে থাকেন । কিন্তু বাংলাদেশে তার ব্যতিক্রম চিত্র। নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের অজুহাতের অভাব থাকে না।

দেখা গেছে সিন্ডিকেট করে মূল্য বাড়িয়ে দেন এক শ্রেণির ব্যবসায়ী। আবার এই রমজান মাসে ভেজাল ও নিম্নমানের পণ্য বাজারে বিক্রি করা হয় দেদার।  রমজান সংযম পালনের মাস। অথচ এই  সংযমের মাসেই যেন  বেশি অসংযমী হয়ে ওঠেন ব্যবসায়ীরা।  মাহে রমজানের পর পবিত্র ঈদুল ফিতর। তাই  রোজা ও ঈদে  যাতে পণ্যমূল্য  ভোক্তাদের সাধ্যের মধ্যে থাকে সে জন্য সরকারকে এখনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। এ জন্য বাজার মনিটরিং জোরদার করতে হবে। মূল্যবৃদ্ধির অশুভ প্রবণতা বন্ধে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

সরকারের তরফে অবশ্য অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে।  বাজার নিয়ন্ত্রণে মাঠে থাকছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। পাইকারি ও খুচরা বাজার বিশেষ করে যারা পণ্যের অবৈধ মজুদ রেখে মূল্য বাড়িয়ে দেবে তাদের বিরুদ্ধে  বিশেষ অভিযান ও কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। দেশের বড় পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে অভিযান পরিচালনার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চলছে।

অবশ্য বাজারে পণ্যের দাম বাড়বে না, প্রতিবছর রোজার আগে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এমন নিশ্চয়তা দিলেও বাস্তবে তার প্রতিফলন কমই দেখা যায়। আমাদের প্রত্যাশা সরকার এ ক্ষেত্রে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। রমজানকে সামনে রেখে যেন অসাধু ব্যবসায়ীরা ফায়দু লুটতে না পারে সেজন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।  পণ্যমূল্য ক্রেতাদের সাধ্যের মধ্যে রাখতে সিন্ডিকেট চক্রের বিরুদ্ধে নিতে হবে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা। বাজারে টিসিবির মাধ্যমে পণ্যের সরবরাহও ঠিক রাখতে হবে।  অন্যদিকে ব্যবসায়ীদের মুনাফালোভী মানসিকতা ত্যাগ করতে হবে। নীতিনৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে শুধু মুনাফার লোভ কিছুতেই কাম্য হতে পারে না। এক্ষেত্রে সরকার, ব্যবসায়ীমহলসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ভোক্তাস্বার্থ রক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৪ মে ২০১৮/আলী নওশের

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়