ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ: অবশেষে মামলা, গ্রেপ্তার ৩

শাহরিয়ার সিফাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:১৯, ২৩ মে ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ: অবশেষে মামলা, গ্রেপ্তার ৩

নিজস্ব প্রতিবেদক, টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলায় স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় অবশেষে ধনবাড়ী থানায় ওই ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে আটজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন।

এ ঘটনায় গ্রেপ্তার অভিযুক্ত রফিকুল ও দুই মাতব্বরকে আজ বুধবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিন করে রিমান্ড চেয়ে টাঙ্গাইল আদালতে পাঠানো হয়েছে।

ধনবাড়ী থানা পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার সহকারী পুলিশ সুপার (মধুপুর  সার্কেল) কামরান হোসেনের নেতৃত্বে ধনবাড়ী থানা পুলিশ ওই স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করে এবং অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম, ঘটনা মীমাংসাকারী মাতব্বর মাহাতাব আলী ও কামরুজ্জামান তারাকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ ঘটনার সত্যতা পেয়েছে।

ধনবাড়ী থানার এসআই ফারুকুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার রাতে ওই স্কুলছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে রফিকুল ইসলামসহ দুইজন ধর্ষক ও সালিশি বৈঠকে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টাকারী ছয় মাতব্বরের নাম উল্লেখ করে ধনবাড়ী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন।

আজ বুধবার রফিকুল ইসলাম এবং দুই মাতব্বর মাহাতাব আলী ও কামরুজ্জামান তারাকে সাত দিন করে রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশি তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।

ধনবাড়ী পৌর শহরের রূপশান্তি পশ্চিমপাড়ার স্কুলছাত্রী (১৩) কে একই গ্রামের রফিকুল ইসলাম ও জিয়াউল হক ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এতে ধর্ষিতা স্কুলছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। ঘটনাটি জানাজানি হয়ে গেলে স্থানীয় কতিপয় মাতব্বর গত ১৬ এপ্রিল রাতে এলাকায় সালিশি বৈঠকের মাধ্যমে ওই দুইজনকে জুতাপেটা আর লাখ টাকা জরিমানা করে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। ওই বৈঠকে মেয়েটিকে ক্লিনিকে নিয়ে গর্ভপাত ঘটানোর সিদ্ধান্ত হয় এবং এ ব্যাপারে উচ্চবাচ্য না করতে পরিবারকে হুমকি দেওয়া হয়।

১৯ এপ্রিল বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিকে সংবাদটি প্রকাশিত হয়। সংবাদ প্রকাশের পর প্রভাবশালী ধর্ষক ও তাদের পরিবার নির্যাতিত ওই স্কুলছাত্রীসহ তার পরিবারকে এলাকা থেকে কৌশলে সরিয়ে ফেলে জিম্মি করে রাখে। থানায় মামলা না হওয়ায় পুলিশ বাদী না পাওয়ার কথা জানায়। এ অবস্থায় ২২ এপ্রিল নিখোঁজ নির্যাতিত ওই পরিবারের সন্ধান ও দায়ীদের শাস্তি দাবি করে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন বিক্ষোভ মিছিল করে ধনবাড়ী ইউএনও’র মাধ্যমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেয়। এই ঘটনার ১ মাস ৭ দিন পর পুলিশ মঙ্গলবার অভিযান চালিয়ে উল্লিখিত তিনজনকে গ্রেপ্তার করে।

সহকারী পুলিশ সুপার (মধুপুর সার্কেল) কামরান হোসেন এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, গ্রেপ্তার তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রাথমিকভাবে সত্যতা পেয়ে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে এবং বুধবার প্রত্যেকের ৭ দিন করে রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।

 

 

 

রাইজিংবিডি/টাঙ্গাইল/২৩ মে ২০১৮/শাহরিয়ার সিফাত/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়