ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

ঈদযাত্রায় বাড়তি চাপ নেই সদরঘাটে

এম এ রহমান মাসুম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ১৪ জুন ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ঈদযাত্রায় বাড়তি চাপ নেই সদরঘাটে

নিজস্ব প্রতিবেদক : যাত্রীদের বাড়তি চাপ ছাড়াই চলছে দক্ষিণাঞ্চলগামীদের ঈদযাত্রা। পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে এখন পর্যন্ত বেশ স্বাচ্ছন্দ্যেই বাড়ি ফিরতে পারছেন যাত্রীরা।

অতিরিক্ত যাত্রী সামাল দিতে গতকাল (১৩ জুন) থেকে বিশেষ লঞ্চ সার্ভিস প্রস্তুত থাকলেও যাত্রীর চাপ না থাকায় কোনো বিশেষ সার্ভিস রাজধানীর  সদরঘাট লঞ্চটার্মিনাল থেকে ছেড়ে যায়নি।

বিআইডব্লিউটিএ এবং লঞ্চ মালিক সমিতি বলছে গতবছরও এই সময় যাত্রীদের বেশ চাপ দেখা গেলেও আজকের সকাল পর্যন্ত ঈদের ছুটিতে বাড়ি যাওয়া যাত্রীদের বাড়তি ভিড় দেখা যাচ্ছে না। যা ভিড় দেখা যাচ্ছে সেটা স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশি বলা যায়। এখন পর্যন্ত নিয়মিত লঞ্চগুলোই বিভিন্ন রুটে ঢাকা থেকে ছেড়ে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে ঢাকা নদী বন্দরের যুগ্ম পরিচালক (ট্রাফিক) আলমগীর কবীর বলেন, ঈদে  সব সময় আমাদের অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করতে হয়। আমদের সে রকম প্রস্তুতিও রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত অতিরিক্ত যাত্রীদের চাপ দেখা যায়নি। বেলা ১১টা পর্যন্ত ঢাকা থেকে ৪০টির মতো লঞ্চ বিভিন্ন রুটে রাজধানী ছেড়েছে। নিয়মিত লঞ্চগুলোই ঢাকা ছাড়ছে। অতিরিক্ত চাপ বলতে যা বুঝায় তা দেখা যাচ্ছে না।

তিনি বলেন, গত বছর এমন সময় প্রতিদিন দেড় শতাধিক লঞ্চ ঢাকা থেকে ছেড়ে গেলেও এ বছর যাত্রীদের তেমন ভিড় দেখা যাচ্ছে না। বিভিন্ন রুটে একশোর মতো লঞ্চ চলছে। কোনো মালিকই স্পেশাল সার্ভিসের জন্য আবেদন করেনি। যদিও আমাদের সিডিউলে স্পেশাল সার্ভিসের ব্যবস্থা রয়েছে। তবে আজ বিকেলে ভিড় বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

লঞ্চ টার্মিনাল সূত্রে জানা যায়, অতিরিক্ত যাত্রীর কথা বিবেচনা করে এবার ৫টি বিশালকার লঞ্চ  নামানো হয়েছে। সেগুলো প্রত্যেকটি প্রায় দেড় হাজার যাত্রী পরিবহনে সক্ষম। নতুন লঞ্চগুলো হলো অ্যাডভাঞ্চার-৫, অ্যাডভাঞ্চার-৯, মিতালী-৭, রফরফ-৭, পারাবাত-১১। যাত্রীদের নিরাপত্তার দিক বিবেচনায় টার্মিনালে যাতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য ২৫০ জন নৌ পুলিশ, ১৫০ জন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি), র‌্যাবের আটজন করে ১৬ জনের দুটি টিম, বিএনসিসি ক্যাডেটদের ৬০ জন সদস্য, ডিপিডিসি ৩৬ জন সদস্য কাজ করবে। এছাড়া ৬০ জন বিএনসিসি ক্যাডেট থাকবেন যাত্রীদের তথ্য সহায়তার জন্য।

এছাড়া বিএনসিসি ও ডিপিডিসি সদস্যরা অসুস্থ যাত্রীদের হুইল চেয়ার বা যেভাবে প্রয়োজন সেভাবে সহায়তায় নিজেদের নিয়োজিত করবেন। অত্যাধিক যাত্রী চাপ বেড়ে গেলে বিভিন্ন গেট বন্ধ ও খোলার কাজও করবেন সকল নিরাপত্তা কর্মী ও ক্যাডেটরা। আর আইন অমান্যকারীদের জন্য শাস্তির ব্যবস্থা করতে তিনজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে সার্বক্ষণিক মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে। যারা আইন বা নির্দেশ মানবে না তাদের জেল ও জরিমানা করবে এসব কোর্ট।

প্রথম শ্রেণির টিকিটের (কেবিন) ব্যাপক চাহিদা থাকলেও ইতিমধ্যে সকল টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। তবে ঈদকে ঘিরে ব্যাপকভাবে কালোবাজারে টিকিট ক্রয়-বিক্রয় হয়। সেক্ষেত্রে ভাড়া অনেক সময়ে দ্বিগুণ কিংবা তিনগুণও হয়ে থাকে।

এ বিষয়ে পিরোজপুরগামী যাত্রী হাসিবুল ইসলাম বলেন, ঈদ উপলক্ষে কালোবাজরে অনেক বেশি টিকিট বিক্রি হয়। ফলে আমাদের মতো সাধারণ যাত্রীদের কাউন্টার থেকে টিকিট সংগ্রহ সম্ভব হয় না। অনেক কষ্টে একটি কেবিনের টিকিট সংগ্রহ করতে পেরেছি। এখন নিরাপদে বাড়ি যেতে পারলেই বাঁচি।

লঞ্চে ভাড়ার বিষয়ে বিআইডব্লিউটিসি সূত্রে জানা যায়, আসন ব্যবস্থাপনা অনুসারে ছোট-বড় লঞ্চসমূহে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। বড় আকারের লঞ্চগুলোতে ডুপ্লেক্স ও ভিআইপি কেবিনের ভাড়া ৩৫০০ টাকা থেকে ৭০০০ টাকা হয়ে থাকে। যেখানে দুটো বেড, এসি, রেফ্রিজারেটর, টিভি, ডাইনিং সুবিধা রয়েছে।

দুই বেড সুবিধায় ডাবল কেবিনের ভাড়া ১৮০০ থেকে ২৫০০ টাকা, এক বেডের সুবিধায় সিঙ্গেল কেবিন ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা, সোফা-কাম-বেডের ক্ষেত্রে ৫০০ থেকে থেকে ৭০০ টাকা ভাড়া নেওয়া হয়ে থাকে। এখানেও এসি কিংবা ফ্যান ও টিভির সুবিধা রয়েছে। এ ছাড়া লঞ্চের ডেকেও (লঞ্চের খোলা স্থান) যাত্রা করা যায়। অনেক বড় লঞ্চে কার্পেট দেওয়া রয়েছে। তবে চাদর বালিশ যাত্রীকে সঙ্গে বহন করতে হয়। এখানে ভাড়া ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৪ জুন ২০১৮/এম এ রহমান/ইভা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়