ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

ঈদে জমজমাট নতুন টাকার হাট

আরিফ সাওন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৩৯, ১৪ জুন ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ঈদে জমজমাট নতুন টাকার হাট

ছবি : আরিফ সাওন

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঈদের পোশাক কেনার সাথে সাথে নতুন টাকা কেনাও একটা রেওয়াজ হয়ে গেছে। বছরের পর বছর ধরে চলে আসছে এই রেওয়াজ।

তবে সব জায়গায় টাকা কিনতে পাওয়া যায় না। রাজধানীর গুলিস্তান, মতিঝিলসহ কয়েক জায়গায় প্রতিদিন বসে টাকার হাট। যেখানে হয়-টাকা কেনা-বেচা। দোকানদাররা নতুন টাকা বিক্রি করেন। আর কেনেন পুরোনো ছেড়া টাকা। ঈদকে ঘিরে জমজমাট টাকার হাট। ব্যস্ত সময় পার করছেন বিক্রেতারা। একজন ক্রেতাকে তারা বেশি সময় দিচ্ছেন না।

ঈদ কাটাতে বাড়ি যাওয়ার আগে এসব টাকার হাট থেকে টাকা কিনে নিচ্ছেন অনেকে। যারা টাকা কিনছেন, তারা স্বজনদের নতুন টাকা উপহার দিয়ে খুশি করার জন্য নতুন টাকা কেনেন। সারা বছরই বিক্রি হয় নতুন টাকা। তবে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় ঈদের সময়।

মনোবিজ্ঞানীদের মতে, নতুন টাকা কেনা মানুষের শখের অংশ।

কারো শখ, আর কারো তা ব্যবসা। কেউ শখ করে কেনেন, আর তার কেনার ফলে বিক্রেতার উপার্জিত অর্থে চলে তার সংসার।

প্রতিদিন সকাল ৮টার দিকে নতুন টাকা ফুলের মতো সাজিয়ে নিয়ে বিক্রেতারা বসতে শুরু করেন। রাত ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত টাকার দোকান নিয়ে বসে থাকেন। তবে এখন ঈদের সময় হওয়ায় বিক্রেতারা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত দোকান নিয়ে বসেন।

জানা গেছে, গুলিস্তানে প্রতিদিন অন্তত ৪০টি টাকার দোকান বসে। এসব দোকানে নতুন টাকা বিক্রি হয়। আর ছেঁড়া টাকা কেনা হয়। তবে শুধু পুরুষ নয়, নারী বিক্রেতাও রয়েছেন।

টাকা বিক্রি হয় নোট হিসেবে। ২, ৫, ১০, ২০, ৫০ ও ১০০ টাকার নতুন নোট হাজার হিসেবে বিক্রি হয়।

বিক্রেতারা জানিয়েছেন, সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় ১০ টাকা ও ২০ টাকার নতুন নোট। তারা এক হাজার টাকার বান্ডিল বিক্রি করেন। দুই টাকা ও পাঁচ টাকার নোটের চাহিদা থাকলেও নতুন নোটের খুব সংকট। অন্য সময়ে চেয়ে ঈদের সময় হওয়ায় এখন টাকার হাজার দ্বিগুন দামে বিক্রি করছেন বিক্রিতারা। হাজারের নিচে তেমন একটা বিক্রি করছেন না। তবে কেউ কোনো নোট হাজারের কম নিতে চাইলে তাকে বেশি টাকা গুণতে হচ্ছে।

১০ টাকার হাজার ৮০ টাকা, ২০ টাকার হাজার ৬০ টাকা, ১০০ টাকার হাজার ৩০ টাকা এবং ৫ টাকার হাজার ২০০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি করছেন। এছাড়া যার কাছ থেকে যা নিতে পারেন, সেভাবে দরদাম করে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা।

বিক্রেতা মোবারক হোসেন জানান, সারা বছরের তুলনায় ঈদের সময়ে নতুন টাকা বিক্রি অনেক বেশি হয়। বিশেষ করে রাজধানী ছেড়ে পরিবার পরিজনের সাথে ঈদ উদযাপন করতে যারা গ্রামে ফেরেন, তাদের মধ্যে অনেকই নতুন টাকা কিনে নিয়ে যান। তাই ক্রেতা সামলাতেও হিমসিম খেতে হয়। সারা বছরের কম বিক্রির হিসেবটা ঈদের সময়ে পুষিয়ে যায়।

গুলিস্তানে টাকার হাট থেকে বিভিন্ন নোটের দুই হাজার টাকা কেনা এক ব্যক্তি বলেন। আমি দুই হাজার টাকা কিনেছি ২৬০ টাকা অতিরিক্ত দিয়ে। বাড়িতে নিয়ে যাবো। ছোটদের দেবো। তারা নতুন টাকা ফেলে অনেক খুশি হবে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ডা. এম এম এ সালাউদ্দীন কাউসার বলেন, এটা সাধারণ একটা বিষয়। মানুষের বিভিন্ন ধরনের শখ থাকে, নতুন টাকা কেনা-এটা সেই শখেরই একটা অংশ।

 

 

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৪ জুন ২০১৮/সাওন/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়