‘দেশকে অস্থিতিশীল করার চক্রান্ত চলছে’
নিজস্ব প্রতিবেদক : আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে নানা ষড়যন্ত্র চলছে। দেশকে অস্থিতিশীল করার চক্রান্ত চলছে। নির্বাচনের পরিবেশকে মেঘাচ্ছন্ন করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি দলের সংসদ সদস্যরা এসব কথা বলেন।
অপরদিকে বিরোধী দলের এমপিরা বলেছেন, প্রস্তাবিত বাজেটে কোনো রাজনৈতিক দর্শন নেই। আওয়ামী লীগের আদর্শেরও পরিপন্থী। প্রশাসনে এখন আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কাউকে খুঁজে পাওয়া যায় না। কে কত বড় আওয়ামী লীগার হবে তার একটা প্রতিযোগিতা চলছে। এটা একটা অশনিসংকেত।
আলোচনায় অংশ নেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুহাম্মদ ফারুক খান, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর ঊ শৈ সিং, প্রাক্তন চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ আবদুস শহীদ, মুক্তিযুদ্ধকালীন সেক্টর কমান্ডার অবসরপ্রাপ্ত মেজর রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম, এ কে এম এ আউয়াল, সাইদুর রহমান এবং বিরোধী দল জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ ও খোরশেদ আরা হক।
মতিয়া চৌধুরী বলেন, টানা ১০ বারের বাজেট দেওয়ার বিরল সম্মান পৃথিবীর খুব কম অর্থমন্ত্রীরই রয়েছে। সামনে আগামী নির্বাচন। তাই বাজেটে জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটবে, এটাই স্বাভাবিক। একটি সরকার শুরুর দিন থেকেই জনগণের আস্থা অর্জন করে, জনগণের রায় নেয়। চারটি বছর কিছু না করে একটি বছর কাজ করে কোনো দলই জনগণের আস্থা অর্জনের রসদ যোগাতে পারে না। বাংলাদেশের অর্থনীতির বিস্ময়কর সাফল্যে সারা বিশ্বের নেতারা স্বীকার করছেন, উন্নয়নের রোল মডেল হয়েছে।
তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে নানা ষড়যন্ত্র চলছে। দেশকে অস্থিতিশীল করার চক্রান্ত চলছে। নির্বাচনের পরিবেশকে মেঘাচ্ছন্ন করা হচ্ছে। খালেদা জিয়ার প্রিয়জনরাই তার বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে। ১১ বছর মামলা চলার পর রায়ে দণ্ডিত হয়ে সাজা ভোগ করছেন। এখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বা সরকারের কী করার আছে? সরকারের তো করার কিছু নেই। আবেদন করলে রাষ্ট্রপতি তাকে ক্ষমা করতে পারেন। আর খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়েও নানা বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। নানা বায়না ধরছে। আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের পথে চলে। অন্য কোনো বাঁকা পথে ক্ষমতায় আসেনি, আসার চিন্তাও নেই।
তিনি সঞ্চয়পত্রের ওপর থেকে সুদ না কমানোর জন্য অর্থমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান।
প্রস্তাবিত বাজেট ভেজালমিশ্রিত, এ দাবি করে জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে কোনো রাজনৈতিক দর্শন নেই। আওয়ামী লীগের আদর্শেরও পরিপন্থী। প্রশাসনে এখন আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কাউকে খুঁজে পাওয়া যায় না। কে কত বড় আওয়ামী লীগার হবে তার একটা প্রতিযোগিতা চলছে। এটা একটা অশনিসংকেত।
তিনি বলেন, আমরা পাকিস্তান আমলে ২২ ধনী পরিবারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি। এখন ১২২ পরিবার সৃষ্টি হয়েছে। যাদের হাতে দেশের ৮০ ভাগ সম্পদ। আর বাকি ২০ ভাগ সম্পদ অন্যদের হাতে। এই বৈষম্য কে বিলোপ করবে? বাজেটে তেমন কোনো উদ্যোগ নেই। বরং বৈষম্য বাড়াতে বাজেটে ধনীক শ্রেণির স্বার্থ রক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যারা ব্যাংক ডাকাতি করে জনগণের হাজার হাজার কোটি টাকা লুটে নিয়েছে, তাদেরকেই প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে।
অর্থমন্ত্রীর সমালোচনা করে বিরোধী দলীয় এই সংসদ সদস্য বলেন, তিনি (আবুল মাল আবদুল মুহিত) ৫০ বছর বয়সে সামরিক সরকারের বাজেট দিয়েছিলেন। তিনি জাতীয় পার্টি সরকারের বাজেট দেননি। জাতীয় পার্টির সরকারের কথা শুনলেই তিনি ক্ষেপে যান। কারণ, তিনি সামরিক শাসনকে বেশি ভালোবাসেন। এরশাদ সরকারের আমলেই দেশের প্রকৃত উন্নয়ন হয়েছে।
মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, বাংলাদেশ আজ সারা বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। বাংলাদেশ আজ সারা বিশ্বের সামনে অনন্য উচ্চতায় উঠে গেছে। টানা ১০টি বাজেট দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার জনগণকে দেওয়া প্রতিটি নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণ করেছে। অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় এবারের বাজেটে প্রতিটি ক্ষেত্রে বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হয়েছে, যাতে জনগণ উপকৃত হবে।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/২০ জুন ২০১৮/আসাদ/রফিক
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন