ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

কোরবানির পশুর চামড়ার দাম নির্ধারণ

হাসান মাহামুদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৪৫, ৯ আগস্ট ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
কোরবানির পশুর চামড়ার দাম নির্ধারণ

সচিবালয় প্রতিবেদক: আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির পশুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করেছে সরকার। এবার ঢাকায় প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম হবে ৪৫-৫০ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৩৫-৪০ টাকা। প্রতি বর্গফুট খাসির চামড়া ১৮-২০ টাকা, বকরির চামড়া ১৩-১৫ টাকা।

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ পশুর চামড়ার নতুন দাম ঘোষণা করেন।

সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী, গত বছরের তুলনায় এবার চামড়ার দাম কম। গত বছর প্রতি ফুট গরুর চামড়ার দাম নির্ধারিত হয়েছিল সর্বনিম্ন ৫০ থেকে সর্বোচ্চ ৫৫ টাকা। একইভাবে খাসির চামড়ার দাম গত বছরের চেয়ে প্রতি ফুটে কমেছে ২ টাকা করে। গত বছর এর দর ছিল ২০ থেকে ২২ টাকা। অন্যদিকে, বকরির চামড়াতেও এবার প্রতি ফুটে ২ টাকা করে দাম কমিয়েছে সরকার। গত বছর এই দর ছিল ১৫ থেকে ১৭ টাকা।

গত বছরের চেয়ে কোরবানির চামড়ার দাম কমার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘মূলত দুটি কারণে এবার কোরবানির চামড়ার দাম কমানো হয়েছে। প্রথম কারণ, আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়ার চাহিদা ব্যাপক হারে কমেছে। দ্বিতীয়ত সাভারে চামড়া শিল্পনগরী স্থাপিত হলেও এখনও তা পরিপূর্ণভাবে কাজ শুরু করতে পারেনি। নানা ধরনের ত্রুটি রয়েছে সেখানে। যে কারণে সেখানে এখনও ঠিকভাবে চামড়া প্রক্রিয়াজাত করা সম্ভব হচ্ছে না।’

এসময় সরকার চামড়া ব্যবসায়ীদের কাছে জিম্মি কিনা- এ প্রশ্নের জবাবে তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘আমরা ব্যবসায়ীদের বন্ধু। সবাই দেশকে ভালোবাসি। আসলেই আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চামড়ার সেক্টরটি মন্দার পর্যায়ে আছে। তাই ব্যবসায়ীদের উৎসাহিত করতেই দর কম করে নির্ধারণ করে দিয়েছি। ব্যবসায়ীদের উৎসাহিত করার অর্থ জিম্মি হওয়া নয়। দেশের এই ব্যাপক উন্নয়নে ব্যবসায়ীদের অবদান অনস্বীকার্য।’

আরেক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এবছর রপ্তানির অন্যান্য খাতে প্রবৃদ্ধি বাড়লেও চামড়া খাতে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ১২ শতাংশ কমেছে।’

চামড়ার দাম গত বছরের চেয়েও কমানোর কারণে চোরাচালানের মাধ্যমে তা দেশের বাইরে চলে যাবে কিনা- এ প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনী বিজিবি অত্যন্ত শক্তিশালী। তারা এ বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেবে।’

এসময় ট্যানার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন- এর সভাপতি শাহীন আহমেদের কাছে এবছর চামড়া কেনার লক্ষ্য কত জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কোনও লক্ষ্য এখনও আমরা নির্ধারণ করিনি। কারণ, গত বছরে কেনা চামড়ার ৪০ শতাংশ এখনও মজুত আছে। যার গুণগত মান অনেকটাই নষ্ট হয়ে গেছে। চামড়া কেনার জন্য ব্যাংক আমাদের ঋণ যে দেবে সেটাও অনিশ্চিত। কারণ, গত বছর পাওয়া ঋণ আমরা এখনও পরিশোধ করতে পারিনি।’

জানা গেছে, বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশন এবার গত বছরের তুলনায় পাঁচ টাকা বাড়িয়ে গরু-খাসি ও বকরির চামড়ার দর প্রস্তাব করেছিল। কিন্তু সরকার নির্ধারিত বর্তমান দর তার থেকে ১০ টাকা কম।

এদিকে, ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, বছরে বাংলাদেশ থেকে মোটামুটি ২২ কোটি বর্গফুট চামড়া পাওয়া যায়। এর মধ্যে ৬৪ দশমিক ৮৩ শতাংশ গরুর চামড়া, ৩১ দশমিক ৮২ শতাংশ ছাগলের, ২ দশমিক ২৫ শতাংশ মহিষের এবং ১ দশমিক ২ শতাংশ ভেড়ার। এর অর্ধেকের বেশি আসে কোরবানির ঈদের সময়।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর কোরবানি উপলক্ষে সারা দেশে এক কোটি পাঁচ লাখের মত গবাদিপশু বিক্রি হয়েছিল। আর এবার দেশের খামারগুলোতে কোরবানিযোগ্য পশু আছে প্রায় এক কোটি ১৬ লাখ।

উল্লেখ্য, চাঁদ দেখা সাপেক্ষে সরকার এবার কোরবানির ঈদের ছুটি রেখেছে ২১ থেকে ২৩ আগস্ট। অর্থাৎ ১২ আগস্ট জিলহজ মাসের চাঁদ উঠলে ২২ আগস্ট বাংলাদেশে কোরবানির ঈদ উদযাপন করা হবে।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/৯ আগস্ট ২০১৮/হাসান/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়