ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

‘ইকোনমিক ক্যাডারের ৫০০ কর্মকর্তা কাজ করে যাচ্ছেন’

হাসিবুল ইসলাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৪৯, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘ইকোনমিক ক্যাডারের ৫০০ কর্মকর্তা কাজ করে যাচ্ছেন’

নিজস্ব প্রতিবেদক : পরিবর্তিত জলবায়ু অভিঘাত ইত্যাদি বিবেচনায় টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে পরিকল্পনা কমিশনসহ সব মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা অনুবিভাগ/উইংয়ের প্রায় ৫০০ বিসিএস ইকোনমিক ক্যাডারের কর্মকর্তা নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কক্ষে বিসিএস ইকোনমিক অ্যাসোসিয়েশনের বিশেষ সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এ কথা বলেন।

পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার পর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশকে পরিকল্পিতভাবে উন্নয়নের লক্ষ্যে পরিকল্পনা কমিশন গঠন করেন। গঠনের পর থেকেই পরিকল্পনা কমিশন থেকে দেশের সব উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়ে থাকে। বর্তমান সরকার দেশের অভূতপূর্ব উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় ২০২১ সালে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালে উন্নত দেশে পরিণত করতে বদ্ধপরিকর।’

তিনি বলেন, ‘সরকারের এই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন তথা পরিবর্তিত জলবায়ু অভিঘাত ইত্যাদি বিবেচনায় টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে পরিকল্পনা কমিশন তথা বিসিএস ইকোনমিক ক্যাডারের কর্মকর্তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। এজন্য পরিকল্পনা কমিশনসহ সব মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা অনুবিভাগ/উইংয়ের প্রায় ৫০০ বিসিএস ইকোনমিক ক্যাডারের কর্মকর্তা নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। দেশের বৃহত্তর উন্নয়নের স্বার্থে উন্নয়ন প্রকল্প ব্যবস্থা ও বাস্তবায়ন সহজীকরণ করা জরুরি। দেশ তথা জাতির বৃহত্তর কল্যাণে বিসিএস ইকোনমিক ক্যাডারে বিদ্যমান যে কোন ধরনের সমস্যা সমাধান এখন সময়োপযোগী ও কল্যাণমুখী কাজ। সে ক্ষেত্রে সরকারও আন্তরিক।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ। এদেশের উন্নয়ন সংক্রান্ত বিভিন্ন নীতিমালা, কৌশলপত্র ইত্যাদি মূলত ইকোনমিক ক্যাডারের কর্মকর্তারা করে থাকেন। যেমন সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা, পিআরএসপি, প্রেক্ষিত পরিকল্পনা, অর্থনৈতিক সমীক্ষা ইত্যাদি তৈরিতে বিসিএস (ইকোনমিক) ক্যাডারের কর্মকর্তারা সরাসরি অংশগ্রহণ করে থাকেন। তাই দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে এই ক্যাডারের অফিসারদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

বিসিএস (প্রশাসন) ও বিসিএস (ইকোনমিক) ক্যাডার দুটিকে একীভূত করতে ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন ও বিসিএস (ইকোনমিক) অ্যাসোসিয়েশন যে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করে সেটি দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়ে বিসিএস ইকোনমিক অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব পরিকল্পনামন্ত্রীর একান্ত সচিব ফরিদ আজিজ বলেন, ‘দেশের বৃহত্তর উন্নয়নের স্বার্থে অধিক ক্যাডারের প্রয়োজন নেই। মূলত আশির দশকে দেশের উন্নয়ন কার্যক্রমকে গতিশীল করার জন্য বিসিএস (ইকোনমিক) ক্যাডার নামে একটি পেশাগত ক্যাডার সৃষ্টি করা হয়েছিল। কিন্তু এ ক্যাডারের কাজগুলো টেকনিক্যাল না হওয়ায় পরে ২৮তম বিসিএস থেকে এটিকে সাধারণ ক্যাডারে রূপান্তর করা হয়। ফলে আগে যেখানে অর্থনীতি বা পরিসংখ্যানে ডিগ্রি না থাকলে ইকোনমিক ক্যাডারে আসা যেত না, এখন সেখানে বাংলা বা ইতিহাস পড়েও আসা যায়।’

তিনি বলেন, ‘ইকোনমিক ক্যাডারের কর্মকর্তারা মূলত কাজ করেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও পরিকল্পনা কমিশনে। কিন্তু ক্যাডারের বদলি ও প্রশাসনিক কাজকর্ম নিয়ন্ত্রিত হয় পরিকল্পনা বিভাগ কর্তৃক যেখানে সবাই প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা। ইকোনমিক ক্যাডারের কর্মকর্তারা মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প ব্যবস্থাপনার কাজ করেন। কিন্তু বর্তমানে অনেক প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা এ কাজে জড়িত ও অভিজ্ঞ। যেমন- অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ বা বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগে এখন গণহারে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের পদায়ন করা হচ্ছে। এ ছাড়া একজন ইকোনমিক ক্যাডারের কর্মকর্তা পরিকল্পনা কমিশনে কাজ করে সর্বোচ্চ প্রধান পদে যেতে পারেন, যেখানে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য কোনো প্রকার অভিজ্ঞতা ছাড়াই প্রশাসন ক্যাডার থেকে আসেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘ইকোনমিক ক্যাডারের কর্মকর্তারা বলে থাকেন যে, তারা প্রকল্প বিষয়ে দক্ষ। কিন্তু এ ক্ষেত্রে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা মনে করেন, তারাও দক্ষ কারণ প্রকল্প ব্যবস্থাপনা ও বাস্তবায়ন বিষয়ে তারা মাঠপর্যায়ে কাজ করে আসছেন। দেশের বৃহত্তর উন্নয়নের স্বার্থে উন্নয়ন প্রকল্প ব্যবস্থা ও বাস্তবায়ন সহজীকরণ করা জরুরি। এ ক্ষেত্রে একই কাজে দুটি ভিন্ন ভিন্ন ক্যাডার থাকলে বিভিন্ন মতবিরোধ ও দ্বন্দ্বে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন ব্যাহত হবে। সুতরাং, দেশ তথা জাতির বৃহত্তর কল্যাণে দুটি ক্যাডারকে একীভূত করে নামকরণ করাই হবে এখন সময়োপযোগী ও কল্যাণমুখী কাজ। সে ক্ষেত্রে সরকারের অর্থ সাশ্রয় ও কর্ম প্রক্রিয়াও সহজতর হবে।’ তিনি গ্রেড-১ পদের দাবীটিও উত্থাপন করেন।

বিসিএস ইকোনমিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কাজী জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মূখ্য সচিব নজিবুর রহমান, সাধারন অর্থনীতি বিভাগের সদস্য সিনিয়র সচিব ড. শামসুল আলম, পরিকল্পনা সচিব মো: জিয়াউল ইসলাম, বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও তথ্য সচিব আব্দুল মালেক, বিসিএস ইকোনমিক অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী কমিটির সকল সদস্য ও সাধারণ সদস্যরা।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১২ সেপ্টেম্বর ২০১৮/হাসিবুল/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়