ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ইলিশের উৎপাদন ৫ লাখ টন ছাড়াবে

মোহাম্মদ নঈমুদ্দীন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:২৪, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ইলিশের উৎপাদন ৫ লাখ টন ছাড়াবে

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ইলিশের উৎপাদন ৫ লাখ  টন ছাড়িয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ।

সোমবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান।

মন্ত্রী বলেন, বিশ্বে বাংলাদেশ একাই ৭০-৭৫ ভাগ ইলিশ উৎপাদন করে থাকে।  ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ইলিশের উৎপাদন ছিল ২.৯৮ লক্ষ মেট্রিক টন, যা বৃদ্ধি পেয়ে বিগত ৯ বছরে প্রায় ৫ লাখ মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে। যার বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ১৮০০০ কোটি টাকা।

তিনি বলেন, ২০১৬-১৭ সালের উৎপাদন-লক্ষ্যমাত্রা ৪০.৫০ লাখ  মেট্রিক টনের চেয়ে ৮৪ হাজার মেট্রিক টন বেশি। ২০১৭-১৮ সালে ইলিশের উৎপাদন ৫ লাখ টন ছাড়িয়ে যাবে। তেমনি মাছের উৎপাদনও বৃদ্ধি পেয়ে ৪২.৭৭ লাখ মেট্রিক টন হবে বলে আশা করছি।

মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের ব্যাপক উদ্যোগের ফলেই মৎস্য খাতে অভূতপূর্ব উন্নতি হওয়ায় দেশ আজ মাছে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পেরেছে। এক্ষেত্রে ইলিশ মাছের ভূমিকাও উল্লেখযোগ্য।

তিনি বলেন, প্রত্যক্ষভাবে দেশের প্রায় ৩১ শতাংশ মানুষ মৎস্য খাতে জড়িত এবং ১১ শতাংশের অধিক লোক প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে এর ওপর নির্ভরশীল। বাংলাদেশের মোট উৎপাদিত মাছের প্রায় ১২ শতাংশ আসে শুধু ইলিশ থেকে। দেশের জিডিপিতে ইলিশের অবদান এক শতাংশের অধিক। কাজেই একক প্রজাতি হিসেবে ইলিশের অবদান সর্বোচ্চ। ফলে মাত্র ৯ বছরের ব্যবধানে এ উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ৬৬ শতাংশ।

‘২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৬৮,৩০৫.৬৮ মেট্রিক টন মৎস্য ও মৎস্যপণ্য রপ্তানি করে ৪২৮৭.৬৪ কোটি টাকা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়েছে, যা ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ছিল ৩২৪৩.৪১ কোটি টাকা- উল্লেখ করেন নারায়ন চন্দ্র চন্দ।

এ খাতে সরকারি সহায়তার তথ্য তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় ২০১৬-১৭ অর্থবছরে জাটকা সমৃদ্ধ ১৭ জেলার ৮৫টি উপজেলায় জাটকা আহরণে বিরত রাখতে ২ লাখ ৩৮ হাজার ৬৭৩জন জেলে পরিবারকে মাসিক ৪০ কেজি হারে ৪ মাসের জন্য মোট ৩৮,১৮৭.৬৮ মেট্রিক টন এবং ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ২,৪৮,৬৭৪টি জেলে পরিবারের প্রতি পরিবারকে মোট ৩৯,৭৮৮.০০ টন চাল প্রদান করা হয়েছে। অথচ ২০০৪-০৫ থেকে ২০০৭-০৮ পযন্ত এ খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়েছে মাত্র ৬,৯০৬ টন। অপরপক্ষে ২০০৮-০৯ থেকে ২০১৬-১৭ অর্থবছর পর্যন্ত মোট ২,৭৪,৫৪৫ টন খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ২০০৪-০৫ থেকে ২০০৭-০৮ সাল পর্যন্ত জাটকা আহরণ নিষিদ্ধকালীন পরিবার প্রতি মাসিক ১০ কেজি হারে খাদ্য দেওয়া হলেও বর্তমানে ৪০ কেজি হারে খাদ্য সহায়তা প্রদান হচ্ছে। ২০০৭-০৮ সালে ১,৪৫,৩৩৫টি জেলে পরিবার এ কর্মসূচির অর্ন্তভুক্ত থাকলেও বর্তমানে পরিবার সংখ্যা ২,৪৮,৬৭৪টিতে উন্নীত হয়েছে।

‘২০০৮-০৯ সালে ক্ষমতাগ্রহণের পূর্বের ৭ বছরে জেলেদের জন্য খাদ্যশস্য বরাদ্দ ছিল মাত্র ৬,৯০৬ মেট্রিক টন। কিন্তু বিগত ২০১৬-১৭ সাল পর্যন্ত ৯ বছরে এ সহায়তা দেওয়া হয়েছে ২ লাখ  ৭৪ হাজার ৫৪৫ মেট্রিক টন। বর্তমান সরকারের আমলে প্রকৃত জেলেদের সনাক্ত করে নিবন্ধকরণ ও পরিচয়পত্র প্রদানের লক্ষ্যে জুন ২০১৭ পর্যন্ত ১৬ লাখ ২০ হাজার মৎস্যজীবী-জেলেদের নিবন্ধন ও ডাটাবেইজ প্রস্তুত এবং ১৪ লাখ ২০ হাজার জেলের পরিচয়পত্র বিতরণ সম্পন্ন করে সরকার ইলিশসহ মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিতে বাস্তবমুখী অবদান রেখে চলেছে। এর মধ্যে ইলিশ আহরণে জড়িত প্রায় ৭ লাখ জেলে এবং মা-ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধকালে ২২ দিনের জন্য ৩ লাখ ৯৫ হাজার জেলে পরিবারের প্রতি পরিবাকে ২০ কেজি হারে প্রায় ৭ হাজার টন খাদ্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে- বলেও জানান মন্ত্রী।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮/নঈমুদ্দীন/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়