ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

২৪ ডিসেম্বর থেকে ২ জানুয়ারি মাঠে থাকবে সেনাবাহিনী

হাসিবুল ইসলাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:১৯, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
২৪ ডিসেম্বর থেকে ২ জানুয়ারি মাঠে থাকবে সেনাবাহিনী

নিজস্ব প্রতিবেদক : নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ জানিয়েছেন, আগামী ২৪ ডিসেম্বর থেকে ২ জানুয়ারি পর্যন্ত সেনাবাহিনী মাঠে থাকবে। তারা স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করবে।

শুক্রবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান তিনি।

সেনা সদস্যদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া হবে কি না, এ প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, নির্বাচনী মাঠে বিচারিক ক্ষমতা প্রয়োগে তিন ধরনের কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করবেন। এর মধ্যে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন ৬৫২ জন, যুগ্ম জেলা জজ থাকবেন ২৪৪ জন, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন ৬৪০ জন। তারা নির্বাচনের দুই দিন আগে থেকে পরের দিন পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া, ১ হাজারের মতো নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বিজিবি, র‌্যাব, পুলিশ সদস্যদের নিয়ে দায়িত্ব পালন করবেন। এরাই মূলত ভোটের মাঠে বিচারিক দায়িত্ব পালন করবেন। ফলে আলাদা কোনো বাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, নির্বাচনী সব কাজ প্রায় শেষ। শুধু বাকি প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারদের প্রশিক্ষণ। আরেকটি বিষয়- আমাদের প্রস্তুতির ভেতরে আছে, সেটি ব্যালট পেপার তৈরি করা। আমরা আশা করছি, নির্বাচনের ৭ দিন আগে ব্যালট পেপার তৈরি ও তা নির্বাচনী ৩০০ আসনে পৌঁছাতে সক্ষম হব।

তিনি বলেন, আপনারা জানেন যে, কিছু কিছু নির্বাচনী এলাকায় মহামান্য হাইকোর্ট থেকে কিছু নির্দেশনা আসছে। এই নির্দেশনাগুলোকে সমন্বয় করে ব্যালট পেপার তৈরি করতে হবে। তারপরও নির্বাচনের ৭ দিন আগে ব্যালট পেপার পৌঁছে যাবে। এরই মধ্যে আমরা ব্যালট পেপার তৈরির কাজ শুরু করে দিয়েছি। আশা করছি, রিটার্নিং অফিসারদের কাছে ৭ দিন আগেই ব্যালট পেপার পৌঁছে দিতে সক্ষম হব।

সচিব বলেন, আগামীতে নির্বাচন  কমিশনারগণ মাঠপর্যায়ে গিয়ে কিছু কর্মকর্তাকে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ দেবেন। আগামী ১৮ ডিসেম্বর রাঙামাটিতে তিন পার্বত্য জেলার নির্বাচনী কর্মকর্তা ও নির্বাচনী দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমন্বয় সভা করবে ইসি। একই দিন বিকেলে চট্টগ্রামেও একই ধরনের সমন্বয় সভা হবে।

প্রার্থীদের তরফে ইসিতে এসে অভিযোগ দেওয়া হচ্ছে যে, তারা এলাকায় যেতে পারছেন না। এ ধরনের অভিযোগের বিষয়ে ইসি সচিব বলেন, প্রতিটি অভিযোগই আমরা গুরত্বসহকারে দেখছি, আমলে নিচ্ছি। এ বিষয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারদের কাছে বার্তা পাঠাচ্ছি। ইলেকটোরাল ইনকোয়ারি কমিটির কাছেও পাঠাচ্ছি। তারা এসব বিষয় তদন্ত করে দেখছে। বেশ কয়েকটি তদন্ত রিপোর্ট আমাদের হাতেও এসেছে। তাতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, অভিযোগগুলোর সত্যতা নেই। আর যে অভিযোগগুলোর সত্যতা পাওয়া গেছে সেগুলো নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

বিএনপির অভিযোগের সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল কি পাওয়া যাচ্ছে না? এ প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, কমিশন ওইভাবে সিদ্ধান্ত দিয়েছে যে, যদি কোনো পেন্ডিং ওয়ারেন্ট থাকে এবং তা তামিলে আদালতের কোনো তাগিদ থাকে, তাহলে তাদের গ্রেপ্তার করা যাবে। আসলে ওয়ারেন্টভুক্তরা অনেকেই আত্মগোপনে ছিলেন। এখন  ভোটের মাঠে তারা দৃশ্যমান হয়েছেন। এ কারণে হয়তো পুলিশ তাদের ধরছে বা ধরার চেষ্টা করছে।

সাংবাদিকদের ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালনের বিষয়ে ইসি সচিব বলেন, নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত পর্যবেক্ষকদের জন্য (স্থানীয় ও বিদেশি) আলাদা আলাদা নীতিমালা রয়েছে। তবে সাংবাদিকদের জন্য এ ধরনের কোনো নীতিমালা ইসির নেই।

বৃহস্পতিবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধিদের সঙ্গে সভা থেকে সাংবাদিকদের জন্যও একটা নীতিমালা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে কমিশনাররা বলেছেন, সাংবাদিকরা ভোটকেন্দ্রে যেতে পারবেন। ছবি তুলতে পারবেন। এমনকি ভোটারদের মতামতও নিতে পারবেন। এসব ব্যাপারে কোনা নিষেধাজ্ঞা নেই। তবে সরাসরি সম্প্রচারের ক্ষেত্রে কিছুটা বাধ্যবাধকতা রাখার বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে। আমরা এ ব্যাপারে পরে বিস্তারিত জানাব।

ড. কামাল হোসেনের ওপর হামলার বিষয়ে ইসি সচিব বলেন, এ বিষয়টি নিয়ে কমিশনে কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে ইসি বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।

ভোটের দিনে সাংবাদিকরা ভোটকেন্দ্রে মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবে কি না, এ প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, নির্বাচন কমিশন নির্দেশনা দিয়েছে যে, ভোটকেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসারদের কাছে ফোন থাকবে এবং পুলিশ ইনচার্জ ফোন ব্যবহার করতে পারবেন। অন্যদের কাছে ফোন থাকতে পারে, তবে তারা ভোটকক্ষে তা ব্যবহার করতে পারবেন না। এ ব্যাপারে একটা ভীতি আছে। সাংবাদিকরা মোবাইল ফোন নিয়ে যেতে পারবেন। তবে তা কেন্দ্রের ভেতরে ব্যবহার না করে বাইরে ব্যবহার করতে পারবেন। ভেতরে ব্যবহার করলে বিশৃঙ্খলা হতে পারে। যারা ভোট দিতে কেন্দ্রে আসবেন তারাও মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে উৎসাহী হতে পারে। এ ব্যাপারে একটা বিধি-নিষেধ থাকা প্রয়োজন।

মোবাইল ফোন ব্যবহার নিয়ে আসলে ভয়টা কোথায়? এমন প্রশ্নের উত্তরে সচিব বলেন, ভয়টা কোনো বিষয় নয়। এটা হলো যে, নির্বাচনকে যেন কেউ বানচাল না করতে পারে সে বিষয়ে সতর্ক থাকা। আপনি জানেন, এবার একটু ভিন্ন প্রেক্ষাপটে নির্বাচন হচ্ছে। সকল রাজনৈতিক দল এতে অংশ গ্রহণ করছে। একটি রাজনৈতিক সরকার আছে। সকল কিছু মাথায় রেখে আমাদের চিন্তা-ভাবনা করতে হবে।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৪ ডিসেম্বর ২০১৮/হাসিবুল/রফিক  

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়