ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

মহানায়িকা স্মরণে পাবনায় নানা আয়োজন

শাহীন রহমান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:২১, ১৭ জানুয়ারি ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
মহানায়িকা স্মরণে পাবনায় নানা আয়োজন

পাবনা প্রতিনিধি: বাংলা চলচ্চিত্রের মহানায়িকা খ্যাত পাবনার মেয়ে সুচিত্রা সেনের ৫ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০১৪ সালের ১৭ জানুয়ারি প্রয়াত হন এই মহানায়িকা।

মৃত্যুর আগে কলকাতার বালিগঞ্জে স্বেচ্ছা নির্বাসনে প্রায় তিন যুগ লোকচক্ষুর আড়ালে ছিলেন কিংবদন্তি এই অভিনেত্রী। এ সময়ে অসুস্থ হয়ে অনেকদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর তিনি মারা যান।

দিনটি স্মরণে  জেলা প্রশাসন ও সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদ যৌথভাবে তার পৈত্রিক ভিটা ও পাবনা টাউন গার্লস হাইস্কুল প্রাঙ্গনে আয়োজন করেছে স্মরণসভার।

স্বপ্নের নায়িকার প্রয়াণ দিবসে পাবনা জেলা প্রশাসন, সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদ, সুচিত্রা সেন চলচ্চিত্র সংসদ, সপ্তসুর ও নাট্য সংগঠন পাবনা ড্রামা সার্কেলসহ স্থানীয় সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।

এসব কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে সুচিত্রা সেনের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন, স্মরণ পদযাত্রা, জীবনীর উপর স্মরণসভা, সুচিত্রা অভিনীত বিভিন্ন ছবির গান নিয়ে সংগীতানুষ্ঠান।

এদিকে, সুচিত্রা সেনের পৈত্রিক বাড়ি সংস্কার করে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ছোট পরিসরে স্মৃতি সংগ্রহশালা করা হলেও তার অগ্রগতি নেই। সরকারের উদ্যোগে সুচিত্রা সেন স্মৃতি আর্কাইভ বা সংগ্রহশালা করার উদ্যোগ বাস্তবায়ন না হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন সুচিত্রাপ্রেমীরা। দ্রুত তার স্মৃতিবিজড়িত বাড়িটি আধুনিকায়নের দাবি জানিয়েছেন পাবনার সাংস্কৃতিককর্মীরা। সম্প্রতি বাড়িটিতে দর্শনার্থীদের দেখার জন্য ভিডিও প্রজেকশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাড়ির চত্বরে নির্মাণ করা হয়েছে সুচিত্রা সেনের ভাষ্কর্য।

সুচিত্রা সেনের জন্ম ১৯৩১ সালের ৬ এপ্রিল তৎকালীন পাবনা জেলার সিরাজগঞ্জ মহকুমার ভাঙাবাড়ি গ্রামে।

পাবনা শহরের গোপালপুর মহল্লার হেমসাগর লেনের একতলা পাকা পৈত্রিক বাড়িতে সুচিত্রা সেনের শিশুকাল, শৈশব ও কৈশোর কেটেছে। তার বাবা করুণাময় দাশগুপ্ত পাবনা মিউনিসিপ্যালিটির স্যানিটারি ইন্সপেক্টর পদে চাকরি করতেন। মা ইন্দিরা দাশগুপ্ত ছিলেন গৃহিণী। দুই বোনের মধ্যে সুচিত্রা সেন ছিলেন বড়। পাবনা শহরের মহাকালী পাঠশালায় পড়ালেখা শেষ করে সুচিত্রা সেন স্থানীয় পাবনা বালিকা বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছেন। গান, নাটক, অভিনয় পছন্দের ছিল তার। পাবনা শহরের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গান গাওয়া ও নাটক থিয়েটারে অভিনয়ে দক্ষতা দেখান তিনি।

১৯৪৭ সালে দেশভাগের ক’মাস আগে সুচিত্রার বাবা করুণাময় দাশগুপ্ত পাবনার বাড়িঘর, চাকরি সবকিছু রেখে সপরিবারে ভারতে পাড়ি জমান। কলকাতায় যাওয়ার বছর দু’য়েক পরেই সেখানকার বনেদি পরিবারের ছেলে দিবানাথ সেনের সঙ্গে রমা দাশগুপ্তের বিয়ে হয়। বিয়ের পর স্বামীর পদবীতে রমা দাশগুপ্ত হয়ে যান রমা সেন।

পাবনার উচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে রমা বনেদি পরিবারের বধূ হয়ে ঘর-সংসারের পাশাপাশি চলচ্চিত্রে সুচিত্রা সেন নামে অভিনয় শুরু করেন। ১৯৫৩ থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত টানা অভিনয় করেন সুচিত্রা সেন। ৫৬টি বাংলা ও হিন্দি ৭টি মিলিয়ে ৬৩টি ছবিতে নায়িকা হন এই স্বপ্নসুন্দরী। উত্তম কুমারের সঙ্গে জুটি হয়ে ব্যাপক আলোড়ন তোলেন তিনি।

১৯৬৩ সালে ‘সাত পাকে বাঁধা’ চলচ্চিত্রের জন্য মস্কো চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার জেতেন। তিনিই প্রথম ভারতীয় অভিনেত্রী যিনি কোনও আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কৃত হয়েছিলেন। ভারত সরকার তাকে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করে। ২০০৫ সালে তাকে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার দেওয়ার প্রস্তাব রাখলে তিনি জনসমক্ষে আসতে চাননি বলে তা গ্রহণ করেননি।




রাইজিংবিডি/ পাবনা/১৭ জানুয়ারি ২০১৯/ শাহীন রহমান/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়