ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

৪০ পুশ-আপের বিস্ময়কর উপকারিতা

এস এম গল্প ইকবাল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:০৮, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
৪০ পুশ-আপের বিস্ময়কর উপকারিতা

প্রতীকী ছবি

এস এম গল্প ইকবাল : বাহু, বুক, কাঁধ ও পেটের মাংসপেশিকে শক্তিশালী করার জনপ্রিয় ব্যায়াম পুশ-আপ (বুক ডন) ব্যায়াম। হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতেও পুশ-আপের রয়েছে বিস্ময়কর উপকারিতা।

নতুন একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, যেসব মধ্যবয়স্ক পুরুষ ৪০টি বা এর বেশি পুশ-আপ করতে পারে তাদের হৃদরোগের ঝুঁকি যারা ১০টির কম পুশ-আপ করে তাদের তুলনায় ৯৬ শতাংশ কমে যেতে পারে।

গবেষণার আলোকে ধারণা হচ্ছে যে, ট্রেডমিল টেস্টের তুলনায় ‘আপনি কতবার পুশ-আপ করেন’ তার ওপর ভিত্তি করে আপনার কার্ডিওভাস্কুলার রোগ বা হৃদরোগের ঝুঁকি আরো ভালোভাবে মূল্যায়ন করা যেতে পারে।

বোস্টনে অবস্থিত হার্ভার্ড টিএইচ চ্যান স্কুল অব পাবলিক হেলথের মেডিসিন রেসিডেন্ট ডা. জাস্টিন ইয়াং বলেন, ‘আমাদের গবেষণার প্রমাণ বলছে যে, পুশ-আপ ক্যাপাসিটি (একজন লোক কতবার পুশ-আপ করেন বা করতে পারেন তার সামর্থ্য) হতে পারে প্রায় যেকোনো ক্ষেত্রে কার্ডিওভাস্কুলার রোগের ঝুঁকি মূল্যায়নের একটি সহজ ও ব্যয়বিহীন পদ্ধতি।’ তিনি যোগ করেন, ‘কার্ডিওভাস্কুলার রোগের ঝুঁকির সঙ্গে ম্যাক্সিমাল ট্রেডমিল টেস্টের ফলাফলের তুলনায় পুশ-আপ ক্যাপাসিটির আরো বেশি শক্তিশালী সম্পর্ক রয়েছে।’

নিরপেক্ষভাবে স্বাস্থ্য ঝুঁকি মূল্যায়নের জন্য কার্ডিওরেস্পিরেটরি ফিটনেসের পক্ষে (সিআরএফ) প্রমাণ থাকলেও গবেষকরা এটিকে উপেক্ষা করেন।

সিনিয়র গবেষণা লেখক অধ্যাপক স্টেফানোস কেলস বলেন, ‘শারীরিক সক্রিয়তা মূল্যায়নের জন্য সবচেয়ে বেশি বিবেচনা করা হয় রোগীর নিজের বলা সক্রিয়তার ইতিহাস এবং স্বাস্থ্য ও জীবনযাপন বিষয়ক প্রশ্নাবলীর উত্তর।’ তিনি যোগ করেন, ‘কিন্তু প্রায়ক্ষেত্রে ব্যক্তির বলা শারীরিক সক্রিয়তা নিরপেক্ষভাবে পরিমাপকৃত সিআরএফ মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি হয়ে থাকে। নির্ভুল ও নিরপেক্ষ সিআরএফ মূল্যায়নে ভালো পারফরম্যান্সের সঙ্গে কার্ডিওভাস্কুলার রোগের ব্যাপক ঝুঁকি কমার সম্পর্ক পাওয়া গেছে। সিআরএফ মূল্যায়নের পরীক্ষাগুলো ব্যয়বহুল, সময়বহুল এবং প্রায়শ প্রফেশনাল সুবিধা ও অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকের প্রয়োজন হয়। এসব পরীক্ষায় ব্যবহৃত যন্ত্রপাতিগুলো কিছু পেশার লোকজন এবং নির্দিষ্ট রোগীর জন্য সীমাবদ্ধ।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের জানামতে, এর আগে অন্য কোনো গবেষণাতে পুশ-আপ ক্যাপাসিটির সঙ্গে ভবিষ্যৎ কার্ডিওভাস্কুলার ইভেন্টের সম্পর্ক মূল্যায়ন করা হয়নি। এই গবেষণাতে আমরা কিছু কমন ফিজিক্যাল ফিটনেস (পুশ-আপ ক্যাপাসিটি এবং সাবম্যাক্সিমাল ট্রেডমিল টেস্ট) মূল্যায়নে বেইসলাইন পারফরম্যান্স বা গড় সক্রিয়তাকে বিবেচনা করেছি এবং আমরা এটাও জানতে চেয়েছি যে বিভিন্ন মাত্রার সক্রিয়তার সঙ্গে ভবিষ্যত কার্ডিওভাস্কুলার রোগের ঝুঁকির সম্পর্ক কেমন। আমরা সিদ্ধান্তে এসেছি যে ফিটনেসের উচ্চ মাত্রার সঙ্গে কার্ডিওভাস্কুলার রোগের হার কমার সম্পর্ক আছে।’

গবেষণাটিতে আঠারোর্ধ্ব ১,১০৪ জন দমকলকর্মী অংশগ্রহণ করেন, যাদের গড় বয়স ছিল ৩৯.৬ এবং গড় বডি মাস ইনডেক্স (বিএমআই) ছিল ২৮.৭। গবেষণাপত্রটি জেএএমএ ওপেন নেটওয়ার্ক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।

গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের পুশ-আপ ক্যাপাসিটি এবং ব্যায়াম সহনশীলতা মূল্যায়ন করা হয়। এ গবেষণায় পুশ-আপ ক্যাপাসিটির সঙ্গে কার্ডিওভাস্কুলার রোগের বিপরীতার্থক সম্পর্ক পাওয়া গেছে, অর্থাৎ পুশ-আপ ক্যাপাসিটি বাড়লে হৃদরোগের ঝুঁকি কমবে। গবেষণাটি ন্যূনতম পুশ-আপের উপকারিতাও বিবেচনা করেছে, উদাহরণস্বরূপ যারা গড়ে ১১/১২টি পুশ-আপ করেছে তাদের কার্ডিওভাস্কুলার রোগের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমে গেছে। গবেষণার সবগুলো দিক বিবেচনা করে গবেষকরা মত দিয়েছেন যে, যারা দিনে ৪০টির বেশি পুশ-আপ করতে পারবে তাদের ঝুঁকি প্রায় ৯৬ শতাংশ কমে যাবে। মধ্যবয়স্ক পুরুষদের হৃদরোগের ঝুঁকি কমানোর জন্য একটি সর্বোত্তম ব্যায়াম হলো পুশ-আপ।

তথ্যসূত্র : ডেইলি মেইল

পড়ুন



রাইজিংবিডির/ঢাকা/২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়