ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

হস্তশিল্পে নগদ সহায়তা ২০২৫ সাল পর্যন্ত রাখার দাবি

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৩২, ২০ মার্চ ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
হস্তশিল্পে নগদ সহায়তা ২০২৫ সাল পর্যন্ত রাখার দাবি

কেএমএ হাসনাতঃ  দেশীয় হস্তশিল্পজাত পণ্য রপ্তানির বিপরীতে নগদ সহায়তা ২০২৫ সাল পর্যন্ত চলমান রাখার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ হস্তশিল্প প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বাংলাক্রাফট)।

সম্প্রতি সংগঠনটির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের কাছে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, সরকার দেশীয় হস্তশিল্পজাত পণ্যের বিকাশের জন্য এ খাতে পণ্য রপ্তানির বিপরীতে নগদ সহায়তা দিয়ে আসছে। এ খাতে দেওয়া নগদ সহায়তা সুবিধা চলতি ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরের ৩০ জুন শেষ হওয়ার কথা। বিষয়টিতে অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বাংলাক্রাফট এরই মধ্যে একটি আবেদন জানিয়েছে। এ বিষয়ে আগামী অর্থবছরের বাজেটেই করণীয় স্থির করা হবে।

অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বাংলাক্রাফট আবেদনে বলেছে, বাংলাদেশ হস্তশিল্প প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিরকারক সমিতি প্রথম শ্রেণীর মর্যাদাপ্রাপ্ত একটি জাতীয় ট্রেড বডি। স্বাধীনতার পর থেকে এই সমিতি দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ও গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের উন্নতিকল্পে দেশ-বিদেশে হস্তশিল্পজাত সামগ্রী রপ্তানির ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে আসছে।

মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক হানাদার বাহিনী এদেশে সামান্য যে কয়টি শিল্প কারখানা ছিল তা পুরোপুরি ধ্বংস করে দেয়। ফলে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর হস্তশিল্প দিয়েই প্রথম রপ্তানি শুরু হয়েছে।

হস্তশিল্পজাত পণ্য বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ রপ্তানি খাত। গ্রামীণ লাখ-লাখ মানুষ জীবিকার জন্য এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে। শতভাগ দেশীয় কাঁচামাল ব্যবহার করে তৈরি হয় হস্তশিল্পজাত পণ্য।

যেমন- খেঁজুরপাতা, তালপাতা, হোগলা, পাটজাত পণ্য, চামড়াজাত পণ্য, কাগজ, মাটি, সূচিকর্ম, বাঁশ ও বেত দ্বারা উৎপাদিত সামগ্রী রপ্তানির মাধ্যমে এই শিল্প বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে আসছে।

বাংলাদেশের কারুপণ্যের ইতিহাস হাজার বছরের প্রাচীণ এবং এর রয়েছে জগৎজোড়া খ্যাতি। সরকার এই শিল্পকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে ১৫ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশ নগদ সহায়তা দিয়ে আসছে।

সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, হস্তশিল্প অত্যন্ত উঁচুমানের শ্রমঘণ একটি অপ্রচলিত রপ্তানি খাত। দুটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যের কারণে হস্তশিল্পজাত পণ্য রপ্তানি আয়ের উপর নগদ সহায়তা বাড়ানোর প্রয়োজন। (এক) গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর একটি অংশ বিশেষত প্রান্তিক ও দারিদ্র সীমায় বসবাসকারী মহিলারা হস্তশিল্প উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত এবং সরাসরি উপকৃত। (দুই) হস্তশিল্প উদ্যোক্তারা সব কাঁচামাল সম্পূর্ণ দেশীয় অর্থাৎহস্তশিল্প রপ্তানির মাধ্যমে উপার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা শতভাগ দেশেই রয়ে যায়।

হোগলা একসময় জ্বালানী এবং বেড়া তৈরির কাজে ব্যবহৃত হতো। রপ্তানিকারকরা এই হোগলা দিয়ে হাতে তৈরি পণ্য রপ্তানি করে লাখ-লাখ গ্রামীণ নারীর কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে। বর্তমানে উৎপাদন পর্যায়ে হোগলা দিয়ে বানানো রশির দাম আগের চেয়ে ৪০ শতাংশ বেড়ে গেছে।

পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, চীন ও ভিয়েতনামের সঙ্গে প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকতে পারছে না এই শিল্পপণ্য। বর্তমানে প্রতিটি রপ্তানি পণ্যের কাঁচামালের দাম বাড়তি হওয়াতে বাংলাদেশি পণ্যের রপ্তানি বাজার হারানোর উপক্রমের পাশাপাশি সুযোগবঞ্চিত গ্রামীণ মহিলাদের কর্মসংস্থান বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়ে পড়বে।

এ অবস্থায় দেশীয় হস্তশিল্প এবং এর সঙ্গে লাখ লাখ গ্রামীণ মহিলার কর্মসংস্থানের সুযোগ অব্যাহত রাখতে বাংলাক্রাফট হস্তশিল্প রপ্তানির বিপরীতে বর্তমান নগদ সহায়তা ২০১৯ সালের ৩০ জুনের পরিবর্তে ২০২৫ সাল পর্যন্ত অব্যাহত রাখার দাবি জানিয়েছে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২০ মার্চ ২০১৯/কিসমত খন্দকার/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়