ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

শেষ ১৮ মুখোমুখিতে আবাহনী ১৩-৫ মোহামেডান

ইয়াসিন হাসান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৩০, ২৪ মার্চ ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
শেষ ১৮ মুখোমুখিতে আবাহনী ১৩-৫ মোহামেডান

ইয়াসিন হাসান : ক্রিকেট, ফুটবল বা হকি; ক্রীড়াঙ্গনে ঢাকা লিগ মানেই আবাহনী-মোহামেডান। এ দুই দলের খেলা হলে এক বিন্দুর ক্রিকেটপ্রেমিরাও দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। দুই দলের লড়াই মানেই টান-টান উত্তেজনা। মাঠের লড়াইয়ের পাশাপাশি মাঠের বাইরের লড়াইও বেশ জমজমাট।

অতীত আমেজ না থাকলেও এখনো আবাহনী-মোহামেডানে মানে তুমুল উত্তেজনা, চায়ের কাপে ঝড় আর হই-হুল্লোড়। ক্ষণে ক্ষণে এ ম্যাচে রঙ পাল্টায়। ক্ষণে ক্ষণে বেড়ে যায় চাপ। সমর্থকদের কাছে এ ম্যাচ আবেগের। এ ম্যাচ প্রতিদ্বন্দ্বীতার। সেই লড়াইয়ে সোমবার মাঠে নামছে দুই দল।

ওয়ালটন ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে সোমবার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হচ্ছে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী লিমিটেড ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। ম্যাচটি শুরু হবে সকাল ৯টায়।

কে জিতবে আবাহনী না মোহামেডান? প্রশ্নটা মিরপুরে গত কয়েকদিন ধরেই ঘুরপাক খাচ্ছে। গত এক যুগের ইতিহাস বলছে উত্তেজনা ও মর্যাদার লড়াইয়ে আবাহনী এগিয়ে। তবে দলবদল হওয়াতে দশ বছরে একেক জন খেলছেন একেক দলে। ২০০৭-০৮ মৌসুম থেকে ২০১৭-১৮ মৌসুম পর্যন্ত ১৮টি ম্যাচ খেলেছে দুই দল। এতে জয়ের পাল্লা ভারী আবাহনীর। মোহামেডানের ৫ জয়ের বিপরীতে আবাহনীর জয় ১৩টিতে।

এবারের লিগের পারফরম্যান্সে অবশ্য পিছিয়ে রাখা যাবে না মোহামেডানকে। ৫ ম্যাচে তারা জিতেছে ৩টিতে, হেরেছে ২টিতে। অন্যদিকে আবাহনী ৫ ম্যাচে জয় পেয়েছে ৪টিতে।

এক নজরে দুই দলের মুখোমুখি (২০০৭-০৮ থেকে ২০১৭-১৮)
২০১৭-১৮ :
শেষ মৌসুমে সুপার লিগ খেলতে পারেনি মোহামেডান। তাই দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বতী লিগ পর্বে মুখোমুখি হয়েছিল একবার। মিরপুরে দুই দলের ম্যাচে কোনো উত্তেজনাই ছড়ায়নি। এর দায়ভার অবশ্য মোহামেডানের ব্যাটসম্যানদের।  আবাহনীকে আগে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে মোহামেডানের বোলাররা ২৫৯ রানে তাদের আটকে দেয়।  জবাবে ব্যাটসম্যানরা ছিলেন অসহায়।  ১৪৭ রানে শেষ মোহামেডানের ইনিংস।  ১১২ রানের বিশাল জয়ে আবাহনী দাপট দেখায় মিরপুরে।

২০১৬-১৭ মৌসুম :
ওই মৌসুমে দুই ম্যাচেই জয় পেয়েছিল আবাহনী। প্রথম মুখোমুখিতে লড়াই করলেও সুপার লিগে দ্বিতীয় ম্যাচে উড়ে যায় মোহামেডান। প্রথম ম্যাচে ৮ মার্চ বিকেএসপিতে রেকর্ড রান করে দুই দল। লিটনের ১৩৫ ও শান্তর ১১০ রানে ৩৬৬ রান করে আবাহনী। জবাবে রকিবুল হাসানের ১৯০ রানের জবাবে ৩৩৯ রান করে মোহামেডান। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে রকিবুলের সর্বোচ্চ ১৯০ রানের পরও মোহামেডান ম্যাচ হেরেছিল ২৭ রানে। কিন্তু ২৭ মার্চ সুপার লিগে স্রেফ উড়ে যায় দলটি। মোহামেডান মাত্র ১০০ রানে অলআউট! ২০৭ বল হাতে রেখে ৫ উইকেটে জয় পায় আবাহনী।  

২০১৫-১৬ মৌসুম :
মৌসুমের প্রথম মুখোমুখিতে ১২ মে মোহামেডান জয় পায় ৫ উইকেটে। মিরপুরে অনুষ্ঠিত ম্যাচে আবাহনীকে প্রথমে ১৮৩ রানে আটকে দেয় মোহামেডান। বোলারদের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে জয়ের ভিত পায় শুরুতেই। পরবর্তীতে উপল থারাঙ্গার ৭৭ ও এজাজ আহমেদের ৪২ রানে জয় পায় মোহামেডান। মতিঝিল পাড়ার দলটির নায়ক ছিলেন শুভাশীষ রায়। কিন্তু ১৫ জুন সুপার লিগে আবাহনীর কাছে পাত্তা পায়নি মোহামেডান। বিকেএসপিতে লিটনের ১৩৯ ও দিনেশ কার্তিকের ১০৯ রানে অবাহানী ৩৭১ রানের বিশাল সংগ্রহ পায়। জবাবে মোহামেডান গুটিয়ে যায় ১১১ রানে। ২৬০ রানের বিশাল জয়ে মধুর প্রতিশোধ নেয় আবাহনী। সেবার আবাহনী চ্যাম্পিয়নও হয়েছিল।

 



২০১৪-১৫ মৌসুম :

লিগ পর্বের প্রথম রাউন্ডেই মুখোমুখি হয়েছিল দুই দল। মিরপুর শের-ই-বাংলায় অনুষ্ঠিত ম্যাচে মোহামেডানকে ৫ উইকেটে হারিয়েছিল ধানমন্ডি পাড়ার ক্লাবটি। এরপর সুপার লিগে জয়ের ব্যবধান নেমে আসে ৩ উইকেটে। ম্যাচটি হয়েছিল ফতুল্লায়। আবাহনীতে খেলেছিলেন নাসির হোসেন ও জিয়াউর রহমান। অন্যদিকে মোহামেডানের হয়ে খেলেছিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা।

২০১৩-১৪ মৌসুম :
২০১৩-১৪ মৌসুমে মাশরাফির নেতৃত্বে আবাহনীর বিপক্ষে জয়ের স্বাদ পেয়েছিল মোহামেডান। শামসুর রহমানের অপরাজিত ১০৫ রানের ইনিংসে আবাহনীর দেয়া ২৮২ রানের টার্গেট টপকে গিয়েছিল মতিঝিল পাড়ার ক্লাবটি। শামসুর শতরান উপহার দিলেও মোহামেডানের অধিনায়ক মাশরাফি নিয়েছিলেন ৪০ রানে ৪ উইকেট। ওই মৌসুমে আবাহনীর অবস্থা ছিল একেবারেই করুণ। রেলিগেশন এড়াতে লড়তে হয়েছিল তাদের। ১০ ম্যাচে ৬ জয়ের বিপরীতে ৪ হার তাদের।

২০১২-১৩ মৌসুম :
মৌসুমে লিগ আয়োজন করতে পারেনি সিসিডিএম।

২০১১-১২ মৌসুম :
এই মৌসুমে আবাহনীর জয়জয়কার। গ্রুপ পর্ব ও সুপার লিগ দুটোই জিতে নেয় তারা। প্রথমটিতে ৫ উইকেটে জয়ের পর দ্বিতীয়টিতে জয় পায় ৩ উইকেটের ব্যবধানে।

২০১০-১১ মৌসুম :
১-১ এ সময়তায় ছিল দুই দলের লড়াই। মোহামেডানকে উড়িয়ে আবাহনী ১০ উইকেটে জয় পেলেও সুপার লিগে মোহামেডান বেশ কষ্টে ১ উইকেটে জয় তুলে নেয়।

২০০৯-১০ মৌসুম :
২০০৯-১০ মৌসুমে গ্রুপ পর্ব ও সুপার লিগে জয় পায় মোহামেডান। শক্ত দল গড়েও মোহামেডানের সঙ্গে পারেনি আবাহনী। সেবার আবাহনীর হয়ে খেলেছিলেন সাকিব আল হাসান, মোহাম্মদ রফিক ও নাসির হোসেন। অন্যদিকে মোহামেডানে খেলেছিলেন শামসুর রহমান, মোহাম্মদ আশরাফুল ও আফতাব আহমেদের মত ক্রিকেটাররা। গ্রুপ পর্বের ৬ উইকেটে জয়ের পর সুপার লিগে ৩ উইকেটে জয় পায় আশরাফুলের দল।

২০০৮-০৯ মৌসুম :
এ মৌসুমে গ্রুপ পর্ব ও সুপার লিগে দুবারই মোহামেডান হেরেছে বড় ব্যবধানে। গ্রুপ পর্বে ৫ উইকেটে হারের পর সুপার লিগে মোহামেডান হেরে যায় ১২২ রানে। সেবার শ্রীলঙ্কার সনাৎ জয়াসুরিয়াকে এনেও মাশরাফির আবাহনীর কাছে হার ঠেকাতে পারেনি মোহামেডান।

২০০৭-০৮ মৌসুম :
২০০৭-০৮ মৌসুমে প্রথম মুখোমুখিতে মিরপুর শের-ই-বাংলায় আবাহনী ২ উইকেটে জয় পায়। মোহামেডান আগে ব্যাটিং করে মাত্র ১৬২ রানে অলআউট হয়ে যায়। জবাবে ৮ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে আবাহনী। সুপার লিগের মোহামেডানের ভাগ্য ফেরেনি। আগে ব্যাটিং করে মোহাম্মদ আশরাফুলের মোহামেডান মাত্র ১৩৩ রান করে। জবাবে সগির হোসেন পাভেল (৬৭) ও শাহরিয়ার নাফিসের (৬২) ব্যাটে ৯ উইকেটে জয় পায় আবাহনী। 



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৪ মার্চ ২০১৯/ইয়াসিন/আমিনুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়