ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

দলকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন বিএনপির নির্বাচিত সাংসদরা

এসকে রেজা পারভেজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:০৩, ২৪ এপ্রিল ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
দলকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন বিএনপির নির্বাচিত সাংসদরা

এসকে রেজা পারভেজ : সাংসদ হিসেবে শপথ নেওয়ার ক্ষেত্রে এলাকায় চাপ থাকলেও দলীয় স্বার্থে শেষ পর্যন্ত শপথ নিচ্ছেন না একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির নির্বাচিত প্রার্থীরা। শপথ নেওয়ার বিষয়ে দু’একজন ইতিবাচক থাকলেও দলীয় সতর্কতায় তারাও ওই ভাবনা থেকে সরে এসেছেন।

দলীয় সূত্র বলছে, ৩০ এপ্রিলের মধ্যে সাংসদ হিসেবে শপথ নেওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকায় শেষ পর্যায়ে এসে শপথ নেওয়ার বিষয়ে বিএনপির ভেতরে ও বাইরে পক্ষে-বিপক্ষে মত আসলেও আগের সিদ্ধান্তই বহাল রেখেছে বিএনপি। অর্থাৎ বিএনপি থেকে নির্বাচিত ৬ জন সংসদ সদস্য শপথ নিচ্ছেন না। এর পেছনে বিএনপির নীতি নির্ধারকদের পর্যবেক্ষণ হলো, এতো কম আসন নিয়ে সংসদে গিয়ে তেমন কোনো ভুমিকা রাখা যাবে না। তাছাড়া এর ফলে বিএনপির পুন:নির্বাচনের দাবিও আর থাকবে না। যদিও খালেদা জিয়ার মুক্তির বিনিময়ে শপথ নেওয়া হতে পারে- এমন একটি বিষয় রাজনৈতিক অঙ্গনকে বেশ কিছুদিন কানাঘুষার মধ্যে রেখেছিলো। তবে শেষ পর্যন্ত সেই বিষয়ে কোনো সমঝোতা হয়নি।

এর মধ্যে সোমবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খানসহ কমিটির সদস্যরা বৈঠক করেন। তাদের সঙ্গে স্কাইপিতে যুক্ত হন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক তারেক রহমান। দলের নির্বাচিত সাংসদদের নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে শপথ নেওয়া সংক্রান্ত যে বিষয়গুলো প্রকাশিত হয়েছে, সেগুলো নিয়ে নেতাদের মত জানতে চান তারেক রহমান। এ সময় স্থায়ী কমিটির সদস্যরা তাকে জানান নির্বাচিত কোনো সদস্যই শপথ নেবেন না। তাদের আগের সিদ্ধান্তই বহাল আছে।

বিএনপির সাংসদদের শপথের বিষয়ে জানতে চাইলে দলটির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারনী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘সংসদে না যাওয়ার বিষয়ে বিএনপি আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো। কারণ, প্রহসনের নির্বাচনে বৈধতা দেবে না বিএনপি। আমাদের সেই সিদ্ধান্তই আছে। এই নির্বাচন বিএনপির মতো দেশের মানুষও প্রত্যাখ্যান করেছে।’

বিএনপির নির্বাচিত সাংসদদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা শপথ নেওয়ার বিষয়ে ইতিবাচক তবে দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে যাবেন না। এক্ষত্রে এলাকায় চাপ থাকলে দলের স্বার্থ বিবেচনায় এই অবস্থান থেকে সরে আসবেন না তারা।

জানতে চাইলে বগুড়া-৪ আসনের নির্বাচিত সাংসদ মো: মোশাররফ হোসেন রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘শপথ নেওয়ার ক্ষেত্রে এলাকার জনগণের চাপ আছে কথাটি সত্য। তারা ভোট দিয়ে আমাদের নির্বাচিত করেছেন, সেহেতু তাদের চাপ থাকবেই। তবে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে সাংসদ হওয়ার কোনো ইচ্ছে আমার নেই।’

চাপাইনবাবগঞ্জ ৩ আসনের সাংসদ মো হারুনুর রশীদ রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘দলের সিদ্ধান্তের বিষয়ে আমরা একমত। মনে হয়না সাংসদ হিসেবে শপথ না নেওয়ার যে বিষয়টি রয়েছে সেটি পরিবর্তন হবে। তবে এখনো সময় আছে। দেখা যাক ৩০ তারিখের মধ্যে যেটি হবে সেটি তো হবেই। কাল কি হবে সেটি তো বলা যায় না। সুতরাং ওয়েট করুন।’

সাংসদ হিসেবে শপথ না নিলে এলাকায় বিএনপি সাংগঠনিকভাবে ভীষন ক্ষতিগ্রস্ত হবে জানিয়ে ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের সাংসদ মো. জাহিদুর রহমান বলেন, ‘তবুও দলের স্বার্থে শপথ না নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যদিও এলাকায় শপথ নেওয়ার বিষয়ে অনেক চাপ রয়েছে।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের নির্বাচিত সাংসদ উকিল আবদুস সাত্তার রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে সাংসদ হিসেবে শপথ নেওয়ার ইচ্ছে নেই। কিন্তু জনগণ চায় আমরা সংসদে গিয়ে তাদের কথা বলি, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই। সংসদে আমাদের যাওয়া উচিত তবে দল যদি সিদ্ধান্ত নেয় যাবে না তাহলে দলীয় স্বার্থকেই প্রধান্য দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৪ এপ্রিল ২০১৯/রেজা/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়