ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

বিদেশ ফেরত কর্মীদের ডাটাবেজ তৈরি করছে সরকার

হাসান মাহামুদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:১২, ১৩ মে ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বিদেশ ফেরত কর্মীদের ডাটাবেজ তৈরি করছে সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীর সঠিক সংখ্যা সরকারের জানা নেই। আবার, বিভিন্ন সময়ে কারা ফেরত আসছেন, তারও কোনো সঠিক তথ্য জানা নেই কারো। ফলে এসব বিদেশ ফেরত কর্মীদের অধিকার আদায়সহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। তাই বিদেশ ফেরত কর্মীদের তথ্য সংগ্রহ করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এজন্য দুই লাখ ডলার অর্থ সহায়তা দিচ্ছে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)।

সোমবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এ সংক্রান্ত একটি চুক্তিতে সই করেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সুলতানা আফরোজ এবং আইওএম এর ডেপুটি ও মিশন চিফ স্যারন ডিমান্স। কারিগরি সহায়তার এ প্রকল্পটি চলতি মাস থেকে ২০২১ সালের মার্চের মধ্যে বাস্তবায়ন করবে আইওএম।

স্যারন ডিমান্স বলেন, বাংলাদেশ থেকে মাঝে মাঝেই কিছুসংখ্যক অভিবাসন প্রত্যাশী মানুষ অনিয়মিত চ্যানেলের মাধ্যমে বিদেশে যান, যা খুব ঝুঁকিপূর্ণ এবং ব্যয়সাপেক্ষ। গরীব অভিবাসন প্রত্যাশী মানুষ সাধারণত: স্থানীয় মহাজন শ্রেণির লোকের কাছ থেকে উচ্চ সুদে ঋণ নিয়ে দালালের মাধ্যমে বিদেশে যান।

গন্তব্য দেশে যাওয়ার পর নানাবিধ আইনি জটিলতায় পড়ে অনেক সময় এসব লোক নিঃস্ব হয়ে দেশে ফেরত আসে এবং সহায় সম্পত্তি বিক্রি করে মহাজনের ঋণ পরিশোধ করতে ব্যস্ত থাকে। ফলে, তাদের পরিবারকে আরও দারিদ্র্য ও সামাজিক দূরবস্থার মধ্য পড়তে হয়। এ জন্য আইওএম বাংলাদেশ ডেবট ম্যাডিটেশন ফর রিটানি মাইগ্রান্টস শীর্ষক প্রকল্প প্রস্তাব করে।

এ প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিদেশ ফেরত ঋণগ্রস্ত অভিবাসীদের ওপর সমীক্ষা চালিয়ে সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও কর্মকর্তাদের নীতি নির্ধারণের সক্ষমতা বাড়িয়ে প্রয়োজনীয় নীতি ও কর্মসূচি প্রণয়নের সহায়তা দেওয়া হবে। যা ফেরত আসা অভিবাসীদেরকে আর্থ-সামাজিক কর্মকাণ্ডে টেকসই ভিত্তিতে অন্তর্ভুক্ত করতে সহায়ক হবে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) ছাড়পত্র নিয়ে চলতি বছর (জানুয়ারি-অক্টোবর) বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাড়ি দিয়েছেন মোট ৬ লাখ ১৪ হাজার ৫৮৫ জন। তবে একই সময় কতজন কর্মী দেশে ফেরত এসেছেন তার কোনো হিসাব সংস্থাটির কাছে নেই। একই অবস্থা বিগত বছরগুলোর ক্ষেত্রেও। এ কারণে বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীর সঠিক সংখ্যা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। ফলে বিদেশ ফেরত কর্মীদের পুনর্বাসন থেকে শুরু করে তাদের অধিকার আদায় বিঘ্নিত হচ্ছে। এ সংকট নিরসনে এবার বিদেশ ফেরত কর্মীদের ডাটাবেজ তৈরির উদ্যোগ নেয় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।

এদিকে, ‘জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য মতে, ২০১৭ সালে বিএমইটি থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে ১০ লাখ ৮ হাজার ৫২৫ জন কর্মী কাজ নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যান। আর চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত গেছেন ৬ লাখ ১৪ হাজার ৫৮৫ জন। ২০১৬ সালে পাড়ি দিয়েছেন মোট ৭ লাখ ৫৭ হাজার ৭৩১ জন। আর ২০১৫ সালে গেছেন ৫ লাখ ৫৫ হাজার ৮৮১ জন। প্রতি বছরই বিদেশগামী কর্মীর সংখ্যা বাড়ছে। একই সঙ্গে বিদেশ থেকে ফিরেও আসছেন বহু কর্মী।

কিন্তু বিদেশ ফেরত এসব কর্মীর বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য না থাকায় তাদের পুনর্বাসনে যথাযথ পরিকল্পনা গ্রহণ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। একই সঙ্গে এ তথ্য ঘাটতিকে নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিতের পথেও একটি বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৩ মে ২০১৯/হাসান/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়