সমৃদ্ধ আগামীর পথযাত্রায় বাংলাদেশ …

বিশেষ প্রতিনিধি : ‘সমৃদ্ধ আগামীর পথযাত্রায় বাংলাদেশ: সময় এখন আমাদের, সময় এখন বাংলাদেশের’ এই শিরোনামে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল আজ বিকেলে একাদশ জাতীয় সংসদের তৃতীয় অধিবেশনে ২০১৯-২০ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট ঘোষণা করবেন।

অর্থমন্ত্রী হিসেবে আ হ ম মুস্তফা কামালের এটি প্রথম বাজেট। আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকারের টানা একাদশ বাজেট।

এবারের বাজেটের সম্ভাব্য আকার ধরা হয়েছে ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। দেশের ৪৮ বছরের ইতিহাসে এটি সবচেয়ে বড় বাজেট। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটের চেয়ে আগামী বাজেট ১২ দশমিক ৬১ শতাংশ ও সংশোধিত বাজেটের চেয়ে ১৮ দশমিক ২২ শতাংশ বড়। আগামী ৩০ জুন এই বাজেট পাস হবে। ১ জুলাই থেকে শুরু হবে নতুন অর্থবছর।

এর আগে গতবছর  প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেছিলেন।  টানা ১০-বার জাতীয় বাজেট পেশ করে স্বাধীন বাংলাদেশে রেকর্ড গড়েন তিনি।

দেশের জনগনের ওপর নতুন কোন করচাপ তৈরি করতে চান না অর্থমন্ত্রী। এজন্য তিনি এবারের বাজেটে করজাল সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেবেন, যাতে করহার না বাড়িয়ে অতিরিক্ত রাজস্ব আহরণ করা যায়।

ভ্যাট আইন কার্যকর ও বেকারদের জন্য ঋণ তহবিল গঠনসহ বেশ কিছু নতুন বিষয় থাকতে পারে এবারের বাজেটে। ব্যাপক সংস্কারের প্রস্তাব করা হতে পারে ব্যাংকিংখাত, পুঁজিবাজার, সঞ্চয়পত্রসহ সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে। ঘোষণা থাকতে পারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভূক্তির।

বেকারদের জন্য প্রথমবারের মত ‘উদ্যোক্তা তহবিল’ গঠন করা হচ্ছে। এই তহবিল গঠনের উদ্দেশ্য হলো নতুন উদ্যোক্তা তৈরির মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। পুঁজিবাজারের ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশেষ ঋণ ব্যবস্থার প্রস্তাব থাকবে বাজেটে। এছাড়া রফতানি বহুমুখীকরণের লক্ষে আগামী বাজেটে বিশেষ উদ্যোগ থাকতে পারে।

প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আহরণের সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৮১০ কোটি টাকা, যা জিডিপির ১৩ দশমিক ১ শতাংশ। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) নিয়ন্ত্রিত কর ৩ লাখ ২৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা, এনবিআর-বহির্ভূত কর ১৪ হাজার ৫০০ কোটি,কর ব্যতীত প্রাপ্তি ৩৭ হাজার ৭১০ কোটি এবং বৈদেশিক অনুদানের পরিমাণ ধরা হচ্ছে ৪ হাজার ১৬৮ কোটি টাকা।

প্রস্তাবিত বাজেটের পরিচালন ব্যয় ধরা হচ্ছে ৩ লাখ ১০ হাজার ২৬২ কোটি টাকা। উন্নয়ন ব্যয় ধরা হচ্ছে ২ লাখ ১১ হাজার ৬৮৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) ২ লাখ ২ হাজার ৭২১ কোটি টাকা।

আসন্ন বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হচ্ছে ৮ দশমিক ২ শতাংশ। এছাড়া নতুন বাজেটে মূল্যস্ফীতির চাপ ৫ দশমিক ৫ শতাংশে রাখার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

নিয়ম অনুযায়ী মন্ত্রিপরিষদ থেকে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটের অনুমোদন নিতে হবে। বাজেট ঘোষণার আগে মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়ার কথা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আজ দুপুর সাড়ে ১২টায় জাতীয় সংসদ ভবনে মন্ত্রিসভার এ বিশেষ বৈঠক হবে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৩ জুন ২০১৯/হাসনাত/এনএ