ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

গণতান্ত্রিক পরিবেশের জন্য চাই গণমাধ্যমের স্বাধীনতা

জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:১৮, ৩ মে ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
গণতান্ত্রিক পরিবেশের জন্য চাই গণমাধ্যমের স্বাধীনতা

জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল : আজ ৩ মে ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ডে বা বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশের সাংবাদিকরাও পেশাগত অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় এই দিবসটিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে থাকে।

সাংবাদিকতার স্বাধীনতা ও মুক্ত গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠার মৌলিক নীতিমালা অনুসরণ, বিশ্বব্যাপী গণমাধ্যমের স্বাধীনতার মূল্যায়ন, স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ প্রতিহত করার শপথ গ্রহণ এবং পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে ক্ষতিগ্রস্ত ও জীবনদানকারী সাংবাদিকদের স্মরণ ও তাদের স্মৃতির প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয় এই দিবসটিতে। ১৯৯১ সালে ইউনেস্কোর ২৬তম সাধারণ অধিবেশনের সুপারিশ অনুযায়ী ১৯৯৩ সালে জাতিসংঘের সাধারণ সভায় ৩ মে ‘ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ডে’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়। সেই থেকে প্রতি বছর বিশ্বে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।

বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস বাক্যটি শুনতে কতই না ভালো লাগে! কিন্তু বাস্তবতা কী আমরা যারা গণমাধ্যমের সাথে যুক্ত তারা এই বিশ্ব মুক্ত দিবসের স্বাধীনতার মর্মার্থ অনুধাবন করতে পারছি। আমরা সবাই কি মুক্তভাবে নিজের মনের ভাব প্রকাশ করতে পারছি? এরপরও সাংবাদিকদের ওপর হামলা-মামলা তো আছেই। নানাভাবে গণমাধ্যমকর্মীরা হচ্ছেন লাঞ্ছিত এবং নিগৃহীত। নিরাপত্তার অভাবে গণমাধ্যমকর্মীরা হয়ে পড়ছেন কোণঠাসা; আর দুর্নীতিবাজ ও চোরাকারবারীরা গণমাধ্যমকর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করছেন। হত্যার ঘটনা তো অহরহ ঘটছে। সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনির করুণ পরিণতির কথা সবাই জানেন। জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালাতে ৫৭ ধারার মতো কিছু কিছু ধারা সংযোজিত করে সাংবাদিকদের নিয়ন্ত্রণ করার পায়তারা করা হচ্ছে। যা গণমাধ্যম এবং ব্যক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের সাংবিধানিক অধিকার খর্ব করে।

এতোক্ষণ বললাম নিজ দেশের কথা। কিন্তু বিশ্বের গণমাধ্যম কতটা মুক্ত? প্রেস ফ্রিডম ডে উপলক্ষ্যে বিশ্বব্যাপী আয়োজনের কোনো অভাব নেই৷ অথচ বিশ্বময় পূঁজিপতিরাই কোনো না কোনোভাবে গণমাধ্যমের মালিকানা পাচ্ছেন। পূঁজিপতিদের মালিকানায় যখন গণমাধ্যম তখন এসব কথা আর ভাবনা অসার। পূঁজিপতিরা বেশিরভাগই কোনো না কোনো দল বা গোষ্ঠীর তাবেদার। ফলে তারা সাংবাদিকদের পরিচালনা করছেন যেভাবে,  সেভাবেই চলছে আমাদের গণমাধ্যম আর সাংবাদিকতা। আর এটাই হলো মুক্ত-গণমাধ্যম ও মুক্ত সাংবাদিকতা, বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসের বর্তমান বাস্তবতা!

অবশেষে বলতে চাই, মুক্তিযুদ্ধের বিনিময়ে আমাদের এ দেশ। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূলমন্ত্র ছিল মানবাধিকার, গণতন্ত্র ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা। মানবাধিকার ও গণতন্ত্র সুসংহত করতে গণমাধ্যমের ভূমিকার কোনো বিকল্প নেই। দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে হলে প্রথমেই গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।

লেখক: সাংবাদিক, মাছরাঙা টেলিভিশন

 

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩ মে ২০১৮/তারা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়