ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

মুরাদনগরের আসন হারাতে চায় না আওয়ামী লীগ

জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ১২ ডিসেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
মুরাদনগরের আসন হারাতে চায় না আওয়ামী লীগ

কুমিল্লা প্রতিনিধি: কুমিল্লার সর্ববৃহৎ উপজেলা মুরাদনগর। এই উপজেলা নিয়েই গঠিত হয়েছে জাতীয় সংসদের কুমিল্লা-৩ আসন। এই আসনটি এবার কোনভাবেই হারাতে চায় না আওয়ামী লীগ।

সে হিসাব মাথায় নিয়ে দীর্ঘদিনের দলের অভ্যন্তরীণ বিবাদের অবসান ঘটিয়ে নৌকার বিজয়ের লক্ষ্যে ইতমধ্যে দুটি গ্রুপ এক হয়ে বৈঠকও করেছেন রাজধানীতে।

মুরাদনগর ২২টি ইউনিয়নের বিশাল উপজেলা। দু'টি থানায় বিভক্ত করা হয়ছে দু'বছর আগে। উপজেলার উত্তরে ৯টি উইনিয়ন নিয়ে গঠিত হয়েছে বাঙ্গরা বাজার থানা।

১৯৭৩ সালের পর অনুষ্ঠিত আটটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী কখনো জয়লাভ করতে পারেনি এ আসন থেকে। এখানে কখনও স্বতন্ত্র, কখনও জাতীয় পার্টি, আবার কখনও বিএনপির কাছে এভাবে বারবারই পরাজিত হতে হয়েছে নৌকার প্রার্থীকে।

আর এজন্য দায়ী দলীয় কোন্দল। সর্বশেষ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে বিজয়ী হন আওয়ামী লীগের সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনাবিষয়ক সম্পাদক ও এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন। তবে দলীয় প্রতীকে নয় বরং দল সমর্থিত প্রার্থীকে হারিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তিনি জয়লাভ করেন। নির্বাচনের পর পর আওয়ামী লীগ আবার তাকে দলে টানে।

আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে আবারও দুই শিবিরে বিভক্ত হয়েপড়ে দলটি। এ আসনে দলের পক্ষথেকে বর্তমান এমপি আলহাজ্ব ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুনকে মনোনয়ন দেওয়া হলে তা মেনে নেয়নি কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সরকার। তিনি এবং তার ছেলে আহসানুল আলম কিশোর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দেন। যদিও যাচাই বাছাইয়ে তারা দু'জনই বাদ পড়েন।

ইউসুফ হারুন ও জাহাঙ্গীর সরকার এ দুই নেতার দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্বের কারণে মুরাদনগর উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরাও দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েন। তারা দলীয় কর্মসূচি, জাতীয় দিবসের কর্মসূচিসহ পৃথকভাবে দলীয় সভা সমাবেশ করতেন। এক অংশের নেতা-কর্মীরা অন্য অংশের ডাকা কর্মসূচি বা তাদের সভা সমাবেশে অংশ নিতেন না।

এদিকে দীর্ঘসময় মাঠের বাইরে থাকা বিএনপির সাবেক এমপি কায়কোবাদের ভাই কেএম মুজিবুল হককে বিএনপি থেকে মনোনয়ন দেওয়ায় নড়েচড়ে বসে আওয়ামী লীগ। কারণ এ আসন থেকে কায়কোবাদ ৫ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এবার মুজিবুল হক আবার তাদের হারানো আসনটি পুনরুদ্ধারে মরিয়া। এসমস্ত সমীকরণ বিবেচনায় এবার তারা অতীতের সমস্ত অপবাদ ঘুচাতে চান। বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এ আসনে বিপুল ভোট বিপ্লবের মাধ্যমে জয়ী হতে চায় আওয়ামী লীগ। দীর্ঘদিনের দলীয় কোন্দলের অবসান ঘটিয়ে কুমিল্লা-৩ (মুরাদনগর) আসনে বিজয়ী হতে চায় আওয়ামী লীগ।

এ লক্ষ্যে নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর আগেই দলটির বিবাদমান দুটি গ্রুপের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় ঢাকার ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের একটি হোটেলে। সভা ডেকে নিজেদের অতীতের দ্বন্দ্ব কলহ ভুলে নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার লক্ষ্যে একজোট হয়ে নির্বাচনী মাঠে নামার অঙ্গীকার করেছেন ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন এমপি ও কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সরকার, কুমিল্লা উত্তর জেলা স্বেচ্ছসেবক লীগের সদস্য সচিব আহসানুল আলম সরকার কিশোর ও উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ আবদুল কাইয়ুম খসরুসহ বিভক্ত অনুসারীরা।




রাইজিংবিডি/ কুমিল্লা/ ১২ ডিসেম্বর ২০১৮ /জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়