ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

সুইস ব‌্যাংকে বাংলাদেশিদের তালিকা চান খালেদা

এসকে রেজা পারভেজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:২৬, ২ জুলাই ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সুইস ব‌্যাংকে বাংলাদেশিদের তালিকা চান খালেদা

জ‌্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশি হিসাবকারীদের নামের তালিকা প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন খালেদা জিয়া।

শনিবার রাতে রাজধানীর গুলশানে দলের ‘প্রাথমিক সদস্য সংগ্রহ’ অভিযানের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

শনিবার থেকে শুরু হওয়া এ কর্মসূচি আগামী ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে এই কর্মসূচি চলবে।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ১০ টাকার বিনিময়ে সদস্য রশিদে স্বাক্ষর করে নিজে সদস্যপদ নবায়ন করেন। এরপর দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, তরিকুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম মিয়া, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী তাদের সদস্যপদ নবায়ন করেন এবং ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের নতুন ছয়জন সদস্যপদ সংগ্রহ করেন।

সর্বশেষ ২০১২ সালে সদস্য সংগ্রহ অভিযান হয়েছিলো। বিএনপি নেতারা জানান, আন্দোলনের কারণে পরবর্তিতে এই সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচি করতে পারেনি।

খালেদা জিয়া বলেন, ‘এই বছরই সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা পাঁচার হয়েছে। গত পরশু কাগজে ছিলো- সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের লোকের বহু টাকা। বাংলাদেশকে গরিব দেশ বলা হয় অথচ বাংলাদেশের মানুষ সেখানে টাকা রাখছে। এই টাকাগুলো কাদের, তাদের নাম আমাদের দরকার। আমরা নাম জানতে চাই, কারা সুইস ব্যাংকে কত টাকা রেখেছে।’

তিনি বলেন, ‘এই সরকার যদিও অবৈধ, তারা জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে। আমি তাদের কাছেই দাবি করছি, এই সুইস ব্যাংকে কারা টাকা রেখেছে, কত টাকা রেখেছে তাদের নাম-ধামসহ হিসাবপত্র প্রকাশ করুন।’

দেশ ১০ বছর গণতন্ত্রহীন অবস্থায় আছে দাবি করে বিএনপি নেত্রী বলেন, ‘সব প্রতিষ্ঠানকে তারা অচল করে দিয়েছে। প্রশাসন থেকে শুরু করে সর্বত্র দুর্নীতি। এই অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে দেশের মানুষ সরকার পরিবর্তনে এবার ভোট নিতে চায়। ১০ বছর তারা ভোট দিতে পারেনি, তারা এবার ভোট দেবে। সেজন্য প্রয়োজন একটি সহায়ক সরকার।’

একটা নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তাহলে জনগণ হয়তো  আপনাদেরকে কিছুটা হলেও ক্ষমা করতে পারে। নইলে আল্লাহর কাছে ও এই দেশের জনগণের কাছে আপনাদের জবাবদিহি করতে হবে। এতো করুণ পরিণতি হবে, যে পরিণতি খুব ভালো হবে না। মানুষ সেই পরিণতিতে চোখের পানি যেভাবে অতীতে ফেলেনি, এবারো ফেলবে না।’

ভয়ভীতি উপেক্ষা করে দলের নেতা-কর্মীদের কাজ করার আহ্বান জানান বিএনপি প্রধান।

আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন কোনোভাবেই সম্ভব নয় উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন পরিচালনা করতে পারে না। শুধু তাই নয়, পুলিশও নিরপেক্ষভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারে না। দেশের পুলিশ নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে চায় কিন্তু তাদের বাধ্য করা হয় ক্ষমতাসীনদের পক্ষে কাজ করতে, তাদের হয়রানি করা হয়।’

নির্বাচনের ৭ দিন আগে সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি জানিয়ে প্রাক্তন তিনি বলেন, ‘জনগণ যদি দেখে ভোটকেন্দ্রে সেনাবাহিনী আছে, তাহলে ভোটাররা সাহস করে ভোটকেন্দ্রে আসবে। এটাতে আপনাদের আপত্তি কেনো? সেনাবাহিনী ভোটকেন্দ্রে এর আগেও দায়িত্ব পালন করেছে। কারণ আপনারা নিরপেক্ষ নির্বাচন হোক এটা চান না সেজন্য এসব আপত্তি করছেন।’

ক্ষমতায় গেলে জনগণের চাহিদা বিবেচনায় নিয়ে বিএনপি দেশ পরিচালনা করবে বলেও এ সময় জানান খালেদা জিয়া।

দেশে ‘দুর্নীতির ব্যাপক’ বিস্তার ঘটেছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। আওয়ামী লীগ বাংলাদেশটাকে নিজের দেশ ভাবে না। সেজন্য কিন্তু তারা ভয়ে ও নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য বিভিন্ন দেশে সেকেন্ড হোম বানিয়ে তারা বসে আছে, টাকা বানিয়ে বসে আছে।’

খালেদা জিয়া নেতা-কর্মীদের সদস্য সংগ্রহ অভিযানে অংশ নিয়ে বলেন, ‘গতবার আমাদের সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৫০ লাখ। এবার আমাদের টার্গেট ১ কোটি। সদস্য হোন, দলের জন্য কাজ করুন।’

জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও প্রচার সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানির পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান, সেলিমা রহমান, খন্দকার মাহবুব হোসেন, জয়নাল আবেদীন, ইনাম আহমেদ চৌধুরী, শামসুজ্জামান দুদু, রুহুল আলম চৌধুরী, আহমেদ আজম খান, নিতাই রায় চৌধুরী, গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী, শওকত মাহমুদ, আবদুল মান্নান, আমানউল্লাহ আমান, জয়নুল আবদিন ফারুক, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, গোলাম আকবর খন্দকার, আবদুল কাইয়ুম, কবীর মুরাদ, অধ্যাপিকা সাহিদা রফিক, তাহমিনা রুশদীর লুনা, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, হারুনুর রশীদ, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, সানাউল্লাহ মিয়া, আজিজুল বারী হেলাল, অঙ্গসংগঠনের  সাইফুল ইসলাম নিরব, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, আফরোজা আব্বাস, সুলতানা আহমেদ, হেলেন জেরিন খান,শফিউল বারী বাবু, আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, রাজিব আহসান, আকরামুল হাসান, কাজী আবুল বাশার, আহসানউল্লাহ হাসান, আখতার হোসেন, হাবিবুর রশীদ হাবিব, রফিকুল ইসলাম রাসেল, শাইরুল কবির খানসহ আরো অনেক নেতা উপস্থিত ছিলেন।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২ জুলাই ২০১৭/রেজা/ইভা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়