ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

জন্মদিনে আমি ও জাফর ইকবাল নেচেছি: ববিতা

রাহাত সাইফুল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০১:৪৪, ৩০ জুলাই ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
জন্মদিনে আমি ও জাফর ইকবাল নেচেছি: ববিতা

রাহাত সাইফুল: বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের জীবন্ত কিংবদন্তি ববিতা। পুরো নাম ফরিদা আক্তার পপি। তিনি অভিনয়ের পাশাপাশি চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেছেন। সত্যজিৎ রায়ের ‘অশনি সংকেত’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে এই অভিনেত্রী আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র অঙ্গনেও প্রশংসিত হন। ববিতা ২৫০টিরও বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। পরপর তিন বছর একটানা জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতে নিয়ে গড়েছেন রেকর্ড। এছাড়া ‘অনঙ্গ বউ’ চরিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি বেঙ্গল ফিল্ম জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সর্বভারতীয় শ্রেষ্ঠ নায়িকার পুরস্কার পান।

ববিতার জন্মস্থান বাগেরহাট। জন্ম তারিখ ৩০ জুলাই। সে হিসেবে আজ তার জন্মদিন। রাইজিংবিডির পক্ষ থেকে তাকে জানানো হয় জন্মদিনের শুভেচ্ছা। এ সময় এই প্রতিবেদক তার জন্মদিনসহ চলচ্চিত্রের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে কথা বলেন। রাইজিংবিডির পাঠকদের জন্য আলাপচারিতার চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো।

রাইজিংবিডি: শুভ জন্মদিন।
ববিতা: ধন্যবাদ।

রাইজিংবিডি: কেমন আছেন?
ববিতা: কয়েকদিন হলো ভাইরাস জ্বরে ভুগছি। এখন কিছুটা সুস্থ আছি।

রাইজিংবিডি: জন্মদিন উপলক্ষে এবার কী আয়োজন থাকছে?
ববিতা: ঘটা করে খুব বেশি জন্মদিন পালন করা কখনও হয়নি। যখন সিনেমায় কাজ করতাম তখন শিল্পীদের নিয়ে জন্মদিন পালন করেছি। এখন আর সেভাবে করা হয় না। আমার ছেলে বিদেশে। ওকে রেখে জন্মদিন পালন করতে খারাপ লাগে। ওকে রেখে আমি কোনো অনুষ্ঠানই করি না। এর মধ্যে শরীরটাও ভালো না। তাছাড়া বন্যা, পাহাড় ধস- এর মধ্যে পার্টি করলেও তো নিজের কাছে খারাপ লাগে।

রাইজিংবিডি: জন্মদিন কীভাবে পালন করেন?
ববিতা: প্রতিবছর ডিসিআইআই (ডিসট্রেস চিলড্রেন ইনফ্যান্ট ইন্টারন্যাশনাল) স্কুলের ছোট ছোট বাচ্চারা এসে আমাকে উইশ করে। সুবিধাবঞ্চিত ছেলেমেয়েরা আমাকে উইশ করে- আমার খুব ভালো লাগে। এই দিনটির জন্য ওরা সারা বছর অপেক্ষা করে। দিনটি এলে ওরা আমাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানায়। কেউ আবার আমার জন্য গান তৈরি করে, নাচে। ঘণ্টাদেড়েক আমাকে খুব আনন্দ দেয় ওরা। এটা আমি খুব উপভোগ করি। এবারও ওরা আসতে চেয়েছিলো। শরীর খারাপ থাকায় নিষেধ করেছি। বহু বছর ধরে আমি কোনো পার্টি করি না। সাধারণত পরিবারের সদস্যরা সবাই উইশ করে। কেউ ফুল নিয়ে আসে, কেক নিয়ে আসে, চলচ্চিত্রের লোকজন আসে। এগুলো প্রতিবছরই হয়।

রাইজিংবিডি: জন্মদিনে এই যে এতো মানুষের ভালোবাসা- কেমন লাগে?
ববিতা: অবশ্যই ভালো লাগে। তবে আমার কাছে জন্মদিনের ব্যাখ্যা ভিন্ন। জন্মদিনে সবাই উইশ করে, আনন্দ করে। কিন্তু আমার কাছে মনে হচ্ছে আমার জন্য পৃথিবীতে যে সময় বরাদ্দ করা আছে তার থেকে একটি বছর কমে যাচ্ছে। এজন্য আমি সবার কাছে ঠাট্টা করেই বলি, বার্থডেতে খুশি হবার কি আছে? বরং আমার জীবন থেকে একটি বছর কমে গেল!

রাইজিংবিডি: জন্মদিন নিয়ে মজার কোনো স্মৃতির কথা শুনতে চাচ্ছি…
ববিতা: চলচ্চিত্রে আমি তখন পপুলার। ‘টাকা আনা পাই’, ‘শেষ পর্যন্ত’ সিনেমাগুলো খুব চলছিলো। এই সময় তখনকার পূর্বাণী হোটেলে আমি ঘটা করে জন্মদিন পালন করেছি। তখন আমি গেন্ডারিয়া থাকতাম। বাসায় এতো মানুষকে ইনভাইট করা কঠিন ছিলো। তাই হোটেলে অনুষ্ঠান করতে হয়েছে। সেখানে চলচ্চিত্রশিল্পী, কলাকুশলী, সংবাদ মাধ্যমের লোকজন সবাই এসেছে। নাচ-গান হয়েছিল খুব। সেদিন আমি ও জাফর ইকবাল নেচেছি। তখন তো জাফর ইকবাল-ববিতা সুপার হিট! অনুষ্ঠান শেষে আমরা সবাই বসে উপহারগুলো খুলে দেখছিলাম। সে সময় আমার ‘রাতের পর দিন’ সিনেমাটি সুপার হিট হয়েছিলো। সিনেমায় আমার আর সাইফুদ্দিন ভাইয়ের একটা গান ছিলো। সেখানে তিনি নানা আর আমি নাতনি। দৃশ্যটিতে আমরা ডাব কেটে মানুষজনকে খাওয়াই আর গান করি। গানের কথাগুলো- কঁচি ডাবের পানি দু আনাতে খেয়ে নাও। তো একটি বাক্স খুলে দেখি দুটো কঁচি ডাব! এ নিয়ে বন্ধুবান্ধব সবাই খুব হাসাহাসি করেছি।

রাইজিংবিডি: বাংলাদেশ-ভারত যৌথভাবে সিনেমা নির্মাণ করছে। এ নিয়ে কিছু অভিযোগ উঠেছে। আপনার মন্তব্য জানতে চাচ্ছি।
ববিতা: এখন তো সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যৌথ প্রযোজনার সিনেমাগুলো সঠিক নিয়মে হবে। আসলে এটা হওয়া উচিৎ। এখান থেকে একটা শিল্পী নিয়েই সিনেমা নির্মাণ করা হয়। ওদের দেশে যখন সিনেমা মুক্তি দেয়া হয় তখন লেখা হয় না- এটা যৌথ প্রযোজনার সিনেমা। আমাদের দেশ থেকে যে শিল্পী নিয়ে কাজ করা হয় সেখানেও ওরা লেখে না- বাংলাদেশের শিল্পী। এটা তো যৌথ প্রযোজনা হয় না। যৌথ প্রযোজনার নিয়ম হলো- সমান সমান। এখানকার যৌথ প্রযোজনাগুলো সঠিক নিয়মে হয়নি। এভাবেই সেন্সর ছাড়পত্র পেয়েছে। এ নিয়ে আমাদের ছেলেমেয়েরা আন্দোলন করেছে। যেকোন ভাবেই হোক এটা মনে হচ্ছে ঠিক হয়ে যাবে।

 

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩০ জুলাই ২০১৭/রাহাত/তারা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়