নতুন লড়াইয়ে পুরনো উত্তাপ
ক্রীড়া ডেস্ক : ২০১৫ বিশ্বকাপের পর থেকে ভারত ও বাংলাদেশের ম্যাচ মানেই ভিন্ন আবহ, ভিন্ন উত্তেজনা।
ব্যাট-বলের সেই উত্তেজনা আজ উঠবে উত্তপ্ত মরুর বুকে। এশিয়া কাপের সুপার ফোরের ম্যাচে আজ দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মাঠে নামবে দুই দল। বাংলাদেশ সময় ম্যাচটি শুরু হবে বিকেল সাড়ে পাঁচটায়।
ভারতীয় দল যখন হোটেল হায়াতে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে গভীর ঘুমে মগ্ন তখন বাংলাদেশ দল আবু ধাবি থেকে দুবাইয়ের পথে। আবু ধাবি স্টেডিয়াম থেকে বাংলাদেশ দল হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালে পৌঁছেছে রাত ১টায়। সুপার ফোরের সুপার লড়াইয়ের আগে ভারতীয় দল বিশ্রামে। আর বাংলাদেশ ম্যাচ খেলেছে আফগানিস্তানের বিপক্ষে। ভারতের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে মাত্র ১০ ঘন্টার বিশ্রামে টিম বাংলাদেশ। ভাবা যায়, এশিয়া কাপের মঞ্চে এমন সিডিউলও হতে পারে?
আয়োজক ভারতকে ‘সুবিধা’ দিতেই এমন সিডিউল বাংলাদেশের। ছয় দিনে চার ম্যাচ খেলতে হবে বাংলাদেশকে। বৃহস্পতিবার যার শুরুটা হয়েছে আফগানিস্তানকে দিয়ে। শুক্রবার ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ বাংলাদেশের। ‘হযবরল’ সিডিউল করায় বিরক্ত বাংলাদেশ শিবির। অধিনায়ক ফুঁসে উঠেছেন একাধিক কারণে। এসিসির সমালোচনা করতেও পিছু পা হননি। তাইতো নতুন লড়াইয়ে পুরনো উত্তাপ ছড়িয়েছে।
২০১৫ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচের কথা ভোলার কথা না। একাধিক বিতর্কের কারণে ম্যাচটিকে মনে রেখেছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমও। ভারতের পক্ষে আম্পায়ারদের একাধিক পক্ষপাতিত্ব সিদ্ধান্তে অবাক হয়েছিল পুরো ক্রিকেট বিশ্ব। রুবেল হোসেনে নো বল বিতর্ক, মাশরাফির বলে রায়নাকে আউট না দেয়া, মাহমুদুল্লাহর ছক্কা না আউট; এসব বিতর্ক নিয়ে তোলপাড় হয় বিশ্ব ক্রিকেটও। এরপর থেকে বাংলাদেশ-ভারত লড়াই মানেই হচ্ছে যেন ক্রিকেট যুদ্ধ বেধে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি। দুই দেশের খেলা হলেই এখন উত্তেজনার পারদ ছড়িয়ে পড়ে। উত্তাপ ছড়ায় ২২ গজের ক্রিজে।
সেই পুরনো উত্তাপ আবার ছড়িয়ে পড়েছে এসিসির পক্ষপাতিত্ব আচরণে। ভারত বাদে এশিয়া কাপে অংশগ্রহণকারী প্রতিটি দল খেলেছে আবু ধাবিতে। কিন্তু সূচি অনুযায়ী ভারতের কোনো ম্যাচ নেই আবু ধাবিতে। দুবাইয়ে থেকে সেখানেই সবগুলো ম্যাচ খেলছে ভারত। পাশাপাশি আয়োজকরা সবগুলো দলকে রেখেছে এক হোটেলে। আর ভারত নিজেদের ইচ্ছায় উঠেছে আরেক হোটেলে। সব কিছুতেই তাদের পক্ষে ব্যাট ধরেছে এসিসি।
তাইতো এশিয়া কাপের মঞ্চে পুরনো উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে। নতুন ম্যাচে পুরনো ক্ষোভ ঝারার সূবর্ণ সুযোগ পেয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ এখন আরও পরিণত। আরও শানিত। তবে ক্লান্ত মাশরাফির দল নিজেদের শতভাগ দিয়ে খেলতে পারবে কিনা সেটাই বড় প্রশ্ন।
মুশফিকুর রহিম ও মুস্তাফিজকে বিশ্রামে রেখে আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলেছে বাংলাদেশ। তারা দুজনই আজ ফিরবেন। নিশ্চিতভাবেই মুমিনুল জায়গা হারাবেন। ওপেনিংয়ে লিটনের সঙ্গী হবেন তরুণ নাজমুল। বাদ পড়তে পারেন অভিষিক্ত হওয়া আবু হায়দার রনি। মুস্তাফিজ ফেরায় তাকে ডাগ আউটে দেখা যাবে। তবে প্রতিপক্ষ যখন ভারত তখন ক্লান্তি দূর করে তেতে উঠবে পুরো দল।
দুই দল এখন পর্যন্ত খেলেছে ৩৩ ম্যাচ। বাংলাদেশের জয় ৫টি এবং ভারতের ২৭টি। পরিত্যক্ত হয়েছে একটি। এশিয়া কাপের পরিসংখ্যানে ভারতের বেশ দাপট। ১০ মুখোমুখিতে বাংলাদেশের জয় একটি। ২০১২ সালে ২৯৫ রান তাড়া করে জিতেছিল মুশফিকের দল। ঘরের মাঠে পাওয়া ওই জয়ের পর রাতভর উৎসব করেছে পুরো দেশ। আজ মরুর বুকে এশিয়া কাপের মঞ্চে মাশরাফির দল পুরো দেশকে আরেকটি উৎসবের উপলক্ষ্য এনে দিতে পারেন কিনা সেটাই দেখার।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/২১ সেপ্টেম্বর ২০১৮/ইয়াসিন
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন