সরকার উগ্রপন্থার পৃষ্ঠপোষক : বিএনপি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : সরকার তদন্ত করে জঙ্গি ও উগ্রবাদীদের উৎস খুঁজে বের করার পরিবর্তে তাদের ‘পৃষ্ঠপোষকতা করছে’ বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রোববার দুপুরে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি মরহুম জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা জানানো শেষে তিনি এ কথা বলেন।

‘মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস’ উপলক্ষে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দলের প্রতিষ্ঠাতার কবরে শ্রদ্ধা জানান দলটির সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরা।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তারা (সরকার) আজকে সঠিকভাবে জঙ্গিবাদের উৎস খুঁজে বের করছে না, সত্য উৎঘাটন করছে না, নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করছে না। মূলত সরকার নিজে মিলিট্যান্সি (উগ্রপন্থা) এর পৃষ্ঠপোষকতা করছে।’

‘এখন গণতান্ত্রিক উদারপন্থি রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর এর দোষারোপ করা হয়। তার উদ্দেশ্য হচ্ছে- তারা এটা রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করতে চায়। যতদিন তারা এই জঙ্গিবাদকে জিইয়ে রাখবে, ততদিন তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল হবে,’ বলেন তিনি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বিএনপি প্রথমেই প্রস্তাব দিয়েছিল সকল রাজনৈতিক দল ও সমস্ত সুশীল সমাজকে এক করে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা প্রয়োজন এবং সেটাই হচ্ছে একমাত্র পথ। কিন্তু সরকার কোনো উদ্যোগ নেয়নি।’

সিলেটের জঙ্গি তৎপরতায় উদ্বেগ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সিলেটের ঘটনাকে আমি কখনো নাটক বলিনি। এটা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এমনকি এর আগেও যে সমস্ত ঘটনা ঘটেছে প্রতিটিই উদ্বেগজনক। বরং বিএনপি বলেছে, প্রতিটি ঘটনার সঠিক তদন্ত হওয়া দরকার। তা না হলে জনমনে প্রশ্ন থেকে যায়।’

জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান বিএনপির এই নেতা।

‘আজকে যে অবস্থায় গিয়ে পৌঁছাচ্ছে এর পরে দেখা যাবে, পয়েন্ট অব নোটে চলে যাচ্ছে। তাই সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, সকলকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে এই ভয়াবহ জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ও মোকাবিলা করুন।’

২৫ মার্চের গণহত্যা দিবসকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের বক্তব্যের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস এটা স্বীকৃত। ২৫ মার্চ গণহত্যা হয়েছে। এখন আমাদের পাল্টা প্রশ্ন, তাহলে আওয়ামী লীগ কি এতদিন পর উপলব্ধি করেছে যে, ২৫ মার্চ গণহত্যা হয়েছে? এবারই গণহত্যা দিবস হলো, নাকি আগেও ছিল?’

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ১৯৭২-৭৫ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিল। কিন্তু তখন এভাবে গণহত্যা দিবস পালন করে নাই। আবার ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকা অবস্থায়ও পালন করেনি। এমনকি ২০০৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রক্ষমতায় আছে। এই প্রথম সম্ভবত উপলব্ধি করেছে যে, গণহত্যা দিবস নামক একটি দিবস আছে। আর বিএনপি সবসময়েই গণহত্যা দিবসকে স্মরণ করে এবং পালন করে। এবার আওয়ামী লীগ ঘোষণা দিয়ে শুরু করেছে পরবর্তীকালে আমরাও দেখাব।’

যে চেতনা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে একটি স্বাধীন, সার্বভৌম ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ নির্মাণের স্বপ্ন ছিল স্বাধীনতার এত বছর পরও তা অর্জন করা সম্ভব হয়নি বলে মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব।

‘আমরা যে গণতন্ত্র অর্জন করেছিলাম, সেই গণতন্ত্র আজ ক্ষমতাসীন সরকার লুণ্ঠন করেছে। মানুষের মৌলিক অধিকার, ভোট দেওয়ার অধিকার, বাক স্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা তারা হরণ করেছে। ফলে আজ যে সমস্যা সবচেয়ে বড় হয়ে দেখা দিয়েছে, তা হলো মানুষের অধিকারের সমস্যা,’ বলেন মির্জা ফখরুল।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৬ মার্চ ২০১৭/রেজা/সাইফুল