ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

গণহত্যা দিবস পালন না করায় বিএনপির সমালোচনা

নৃপেন রায় || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:১০, ২৭ মার্চ ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
গণহত্যা দিবস পালন না করায় বিএনপির সমালোচনা

নিজস্ব প্রতিবেদক : ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস পালন না করায় বিএনপি-জামায়াতের কঠোর সমালোচনা করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেছেন, ‘গণহত্যা দিবস পালন না করে বিএনপি বুঝিয়ে দিলো, তারা বাংলার জনগণের সঙ্গে নয়, তারা আছে রাজাকার, আল বদর, আল শামস হানাদার বাহিনীর সঙ্গে।’

সোমবার বিকেলে রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দুর্ভাগ্যের বিষয়- একটি রাজনৈতিক দল বা গোষ্ঠী অর্থাৎ বিএনপি-জামায়াত গোষ্ঠী ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস পালন করল না। তাদের এই গণহত্যা দিবস পালন না করার মধ্য দিয়ে এটা স্পষ্ট- এরা একদিকে যেমন স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না, তেমনই তারা যুদ্ধাপরাধী, গণহত্যাকারী, লুণ্ঠনকারী, অগ্নিসংযোগকারীদের আপন মনে করে। আর সমগ্র বাংলার জনগণ, সাধারণ মানুষ, মুক্তিকামী মানুষ এদের পছন্দ না। তা যদি না হতো, তাহলে তারা নির্যাতিত মানুষের পাশে থাকত। মহান মুক্তিযুদ্ধে যারা শাহাদৎ বরণ করেছেন তাদের পাশে থাকত। কিন্তও তারা তাদের পাশে নাই। তাদের চরিত্র এখন স্পষ্ট। জাতির পিতার হত্যাকারীদের দূতাবাসে চাকরি দিয়ে তারা পুরস্কৃত করেছিল, আর যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী-উপদেষ্টা করে ক্ষমতায় বসিয়েছিল।’

তিনি আরো বলেন, ‘যারা যুদ্ধাপরাধীদের পুরস্কৃত করে, যারা গণহত্যা দিবস পালন করে না, তারা এ দেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। তারা এ দেশের মানুষের মঙ্গল চায় না। এটা জাতিকে মনে রাখতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পাকিস্তানি শাসকদের শোষণ এবং বাঙালির বঞ্চনার ইতিহাস যেন না জানতে পারে, পঁচাত্তরের পর সেভাবেই ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়েছে। পঁচাত্তরের পর ২১ বছর তারা মিথ্যা বয়ান গেয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এলে জাতি প্রকৃত সত্যটা জানতে শুরু করে। মাঝখানে আবারও খারাপ সময় গেছে। আমরা যখন ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসলাম, তখন থেকে ধারাবাহিকভাবে প্রকৃত কথা জানা যাচ্ছে। আজকে প্রযুক্তির যুগে সঠিক বিষয়টি জানা যায়। বাংলাদেশের ইতিহাস আন্তর্জাতিক টেলিভিশনের আর্কাইভে গিয়ে তথ্য সংগ্রহেরও সুযোগ আছে।’

আওয়ামী লীগ আসলে দেশের উন্নতি হয়, এ দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা নিজেদের ভাগ্য গড়তে আসি না, জনগণের ভাগ্য গড়তে আসি। ১৯৯৬ সালে বলেছিলাম, আমি শাসক নয় সেবক হতে এসেছি। সেবক হিসেবেই কাজ করে যাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের ঘরের শত্রু বিভীষণরাই সমস্যা। এ দেশের মাটি এতই উর্বর যে ক্ষেতভরা ফসলও হয়, আগাছা-পরগাছাও জন্মে। সেই আগাছাগুলো উপড়ে ফেলতে পারলে দেশ আরো সুন্দর হবে। শান্তির হবে।’

জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর মনোভাবের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যখন আমরা জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাই, তখন মনে বেদনা কারা পায় সেটা আপনারা নিজেরাই শুনতে পাচ্ছেন, দেখতে পাচ্ছেন। যখন আপনাদের নিরাপত্তা দিতে সব ধরনের ব্যবস্থা করি, যখন মানুষ একটু সুন্দরভাবে জীবনযাপন করে, যখন দেশ এগিয়ে যায়, তখনই যেন তাদের অন্তর্জ্বালা শুরু হয়। তারা দেশে-বিদেশে নানা ধরনের অপপ্রচার করে বাংলাদেশকে হেয় করার চেষ্টা করে।’

সম্প্রতি শ্রীলঙ্কার মাটিতে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের টেস্ট ও ওয়ানডে ম্যাচে জয়ের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শুধু অর্থনৈতিক উন্নয়নই নয়, খেলাধুলায়ও উন্নতি হচ্ছে। শ্রীলঙ্কার মতো দেশকে টেস্ট ম্যাচে হারালাম, ওয়ানডেতেও হারালাম। একদিকে সিলেটে জঙ্গিবিরোধী অভিযান, অন্যদিকে শ্রীলঙ্কায় ওয়ানডে গেম। দুটোই একসাথে দেখতে হচ্ছে, আর সারাক্ষণ টেনশন।’

আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন- প্রেসিডিয়াম সদস্য সাজেদা চৌধুরী, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, মাহবুব-উল-আলম হানিফ, সাদেক খান প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন ড. হাছান মাহমুদ ও আমিনুল ইসলাম আমিন।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৭ মার্চ ২০১৭/নৃপেন/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়