ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

‘জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করতে না পারা সরকারের ব্যর্থতা’

এসকে রেজা পারভেজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৫৮, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করতে না পারা সরকারের ব্যর্থতা’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় বিএনপির জাতীয় ঐক্যের ডাকে আওয়ামী লীগ সাড়া না দেওয়ায় বিষয়টিকে ক্ষমতাসীনদের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শনিবার রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, এর আগেও রোহিঙ্গারা বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে দুইবার বাংলাদেশে প্রবেশ করেছিল। তৎকালীন সরকারপ্রধান হিসেবে জিয়াউর রহমান এবং পরবর্তীকালে খালেদা জিয়া তাদের আশ্রয় দিয়ে পরে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করেছিলেন।

তিনি আরো বলেন, এবারও বিএনপি চেয়ারপারসন লন্ডন থেকে দেওয়া বিবৃতিতে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে পরে ফেরত পাঠানোর কথা বলেছেন। দুর্ভাগ্য, আজকে এই জিনিসগুলো উপলব্ধি করতে এই সরকার ব্যর্থ হয়েছে। তাদের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা- এই বিষয়ে এখনো কোনো জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করতে পারেনি। আমরা এই কথাগুলো বললে বলেন বিএনপির সঙ্গে ঐক্য হবে না। বিএনপির সঙ্গে ঐক্য হবে কী করে? কারণ বিএনপি তো সত্যিকার অর্থের একটি জনপ্রিয় ও দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দল। কোনো কিছুর বিনিময়ে বিএনপি নিজের দেশের স্বার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দেবে না।

প্রয়াত কাজী জাফর আহমেদের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর)।

মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নির্যাতনকে গণহত্যা হিসেবে অভিহিত করে জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ভাষণে নিন্দা না জানানোয় ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিএনপি মহাসচিব।

তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত এই হত্যাকাণ্ডকে কেন গণহত্যা বলেননি, মিয়ানমারের কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানাননি? দেখেই বোঝা যায়, এখনো সেই বশংবদ রাজনীতিতে আছেন। এখনো আপনার ভয় পান যে মিয়ানমারকে যারা সমর্থন দিচ্ছে তারা যদি বিরাগভাজন হয়ে যান! এখানেই পার্থক্যটা।’

অন্য কোনো কারণে নয়, রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় বিএনপি জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছে, জানিয়ে দলটির মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা জনগণের সঙ্গে ঐক্য করেই এই সংকট মোকাবিলা করতে সমর্থ হব।’

রোহিঙ্গাদের জন্য বিএনপির ত্রাণ বিতরণে বাধা দেওয়ার প্রসঙ্গ তুলে সরকারের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এটি কোন ধরনের হীনমন্যতার রাজনীতি? ভয় পান বলেই এই ধরনের কাজ করেন। এই সংকীর্ণ রাজনীতি বাদ দিয়ে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এই সংকট মোকাবিলা করুন।’

গণহত্যা বন্ধে মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভারত ও চীনের অবস্থানের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘যে গণচীনের পাশে একসময় সারা বিশ্ব ছিল তারা এই সংকট বুঝতে পারছে না। যে ভারত একাত্তরে আমাদের আশ্রয় দিয়ে মানবতা দেখিয়েছে তারাও এই সংকট বুঝতে ব্যর্থ হচ্ছে।’

এ সময় জাতিসংঘ, তুরস্ক ও ইন্দোনেশিয়াসহ যেসব দেশ ও কূটনীতিকরা রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়ে সমর্থন জানিয়েছে, ত্রাণ নিয়ে আসছে তাদের ধন্যবাদ জানান মির্জা ফখরুল।

সরকার জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘চালের দাম বেড়েই চলেছে এদিকে কোনো পদক্ষেপ নেই। উন্নয়নের নামে মেগা প্রজেক্টের মাধ্যমে মেগা লুট চলছে। শেয়ারবাজার, ব্যাংকসহ অন্যান্য সেক্টর লুটের পর এখন ত্রাণ লুট করছে।’

পদ্মা সেতুর নকশায় ত্রুটির কারণে এই সেতু নির্মাণে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে বলেও দাবি করেন বিএনপি মহাসচিব।

নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে সরকারকে বাধ্য করতে নেতা-কর্মীদের প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল।

এ সময় প্রয়াত নেতা কাজী জাফরের রাজনীতি ও কর্মময় জীবনের স্মৃতিচারণ করেন বিএনপির এই নেতা।

সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ড. টি আই এম ফজলে রাব্বী চৌধুরীর সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমেদ, শিক্ষাবিদ ড. মাহবুব উল্লাহ, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপিকা রেহেনা প্রধান, জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা এস এম এ আলম, অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান, অ্যাডভোকেট হোসনে আরা আহসান, আহসান হাবিব লিংকন, মোস্তফা জামাল হায়দার ও কাজী জাফর আহমেদের বড় মেয়ে কাজী জয়া প্রমুখ।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭/রেজা/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়