ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

হাঙ্কি-পাঙ্কি করে লাভ হবে না : ফখরুল

এসকে রেজা পারভেজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৪৮, ৬ ডিসেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
হাঙ্কি-পাঙ্কি করে লাভ হবে না : ফখরুল

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে ছাড়া অন্য কোনো উপায়ে নির্বাচন মেনে নেওয়া হবে না জানিয়ে সরকারকে এই বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যাপারে সতর্ক করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বুধবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির ‘সাগর-রুনি মিলনায়তনে’ এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, ‘এদেশের মানুষ নির্বাচন চায় কিন্তু সেই নির্বাচন হবে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে, নিরপেক্ষ ইসির মাধ্যমে। এখানে অন্য কোনো হাঙ্কি-পাঙ্কি করে লাভ হবে না। এই দেশের মানুষ সেটাকে মেনে নেবে না, গ্রহণও করবে না। দেশে এবং দেশের বাইরে কোথাও তা গ্রহণযোগ্যাতা পাবে না।’

সময় থাকতে সরকারকে আলোচনায় আসার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এখনো সময় আছে কথা বলুন, আলোচনা করুন। আলোচনা ছাড়া, কথা বলা ছাড়া গণতন্ত্রকে কখনো সফল করা যায় না। আলোচনার মাধ্যমে আমরা নিশ্চয়ই একটা পথ বের করতে পারবো, যা জনগণের আকাঙ্ক্ষা পুরণ করবে।’

৬ ডিসেম্বর গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষ্যে এই সভার আয়োজন করে ৯০’র ডাকসু সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য । এতে সভাপতিত্ব করেন ডাকসুর প্রাক্তন ভিপি ও বিএনপি নেতা আমান উল্লাহ আমান।

ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। আপনারা (আওয়ামী লীগ) যখন ’৯৬-তে তত্ত্বাবধায়ক সরকার চেয়েছেন তখন কি তা সংবিধানে ছিলো? কিন্তু আমরা মেনে নিয়েছিলাম। এই সরকার ব্যবস্থার অধীনেই নির্বাচন করে আমরা দু’বার আর আপনারা একবার সরকার গঠন করেছিলেন। তাহলে সমস্যাটা কোথায় ছিলো?’

‘আপনারা জেনে গেছেন যে, পায়ের নিচে মাটি নাই, জনসমর্থন নেই। যদি নিরেপক্ষ ভোট হয় তাহলে আপনাদের কোনো অস্তিত্ব থাকবে না। সেই জন্যই নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে এতো ভয়। কিন্তু আমরা সংঘাত চাই না। আমরা জনগণের মতামত প্রকাশের অধিকার চাই’, বলেন বিএনপির এই মুখপাত্র।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে করে তিনি বলেন, ‘দেশের সামনে বিরাট সংকট। এতো বড় সংকট আর আসে নি। আমাদের স্বাধীনতা, স্বার্বভৌমত্ব বিপন্ন, গণতন্ত্র বিপন্ন। মানুষের নিরাপত্তা নেই। আজকে যদি সবাই ঐক্যবদ্ধ না হই, একজোট হয়ে অপশাসন-দু:শাসনকে পরাজিত করতে না পারি, আমাদের কোনো অস্তিত্ব থাকবে না।’

‘তাই আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া, তারেক রহমানের দিকে তাকিয়ে, জনগণের দিকে তাকিয়ে সমস্ত দ্বিধা ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে অধিকার আদায়ের জন্যে কাজ করার এবং নির্বাচন দিতে সরকারকে বাধ্য করার জন্য অনুরোধ জানাতে চাই, বলেন মির্জা ফখরুল।

সরকার বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে কোর্টে নিয়ে হেনস্তা করছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কাকে ভয় দেখাচ্ছেন? খালেদা জিয়াকে? যিনি নয় বছর স্বৈরাচারের সঙ্গে কোনো আপোষ করেননি। ফখরুদ্দিন-মঈনুদ্দিনের সঙ্গে কোনো আপোষ করেননি। করলে এতোদিন প্রধানমন্ত্রী থাকতেন। যতই অত্যাচার নির্যাতন করবেন ততই জনগণের প্রতিরোধ আরো শক্তিশালী হবে।’

নব্বইয়ের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘ওই আন্দোলন আমাদের রাজনৈতিক জীবনে অনেক গভীর দাগ কেটেছিলো। দুর্ভাগ্যে আমাদের, তখন যে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে মানুষ বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছে, সেই স্বৈরাচারের পতন হয়নি। স্বৈরাচার এরশাদ নিজে টিকে আছেন, সেই সঙ্গে তাদের দোসর আওয়ামী লীগকে টিকে থাকতে সহায়তা করছে। এখানে স্বৈরাচার আর ফ্যাসিবাদী স্বৈরাচার এক হয়েছে। তারা এক হয়ে গণতন্ত্রেকে পায়ের তলায় পিষে মারার চেষ্টা করছে।’

নব্বইয়ের আন্দোলনকে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের পথের দিশারী অভিহিত করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানকে যদি সঠিকভাবে বিশ্লেষণ করতে পারি তাহলে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ভবিষ্যত পথ নির্ধারন করা অনেক সহজ হবে। এখনকার পরিপ্রেক্ষিতে নব্বইয়ের মুল বিষয়গুলোকে সামনে নিয়ে যদি আমরা এগোতে পারি তাহলে সাফল্যন অবশ্যম্ভাবী।’

আলোচনা সভায় তৎকালীন ছাত্রনেতাদের মধ্যে শামসুজ্জামান দুদু, খায়রুল কবির খোকন, হাবিবুর রহমান হাবিব, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, আসাদুর রহমান খান, খন্দকার লুৎফর রহমান, কামরুজ্জামান রতন, অ্যাডভোকেট রফিক শিকদার বক্তব্য রাখেন।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৬ ডিসেম্বর ২০১৭/রেজা/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়