ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

অর্থমন্ত্রীকে এখনই পদত্যাগের আহ্বান

আসাদ আল মাহমুদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৪৭, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
অর্থমন্ত্রীকে এখনই পদত্যাগের আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক, সংসদ থেকে : জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেছেন, ‘ব্যাংক ও আর্থিক খাত ধ্বংসের দাঁড়প্রান্তে। লুটপাটের মাধ্যমে টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। আজ অর্থনীতির রক্তক্ষরণ হচ্ছে। অর্থনীতির রক্তক্ষরণের কারণে জাতির রক্তক্ষরণ হচ্ছে। পানামা পেপার, প্যারাডাইস পেপার কেলেঙ্কারির মাধ্যমে অর্থনীতিকে দুর্বল করা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী বলেছেন ডিসেম্বরে অবসরে যাবেন। ডিসেম্বর পর্যন্ত কেন রক্তক্ষরণ কন্টিনিউ করবেন? আজকে এখনই পদত্যাগ করুন। মানুষকে বাঁচান, জাতিকে বাঁচান, দেশকে বাঁচান। আপনি এখনই অবসরে চলে যান। গিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে বাঁচান, আমাদের সবাইকে বাঁচান।’

রোববার জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে স্পিকার ড. শিরিন শারমীন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এ অধিবেশন শুরু হয়।

বাবলু বলেন, ‘পানামা পেপার, প্যারাডাইস প্যাপারে তো কোনো রাজনীতিবিদের নাম আসেনি। ভয় কীসের? আজ এখানে যারা ট্রেজারি বেঞ্চে (সরকারি দলের সদস্য) আছেন, আমরা বিরোধী দলে আছি। সুশীল সমাজের অনেকে অনেক কথা বলেন। আজ তো আমাদের নামে কোনো অ্যাকাউন্ট বের করেত পারেনি, তাদের নামেই বেরিয়ে এসেছে।’

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘যারা টাকা পাচার করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। প্যারাডাইস পেপার ও পানামা পেপারে যাদের নাম এসেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করুন, জাতি আপনাকে সাধুবাদ জানাবে।’

সম্প্রতি অর্থমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্য উল্লেখ করে বাবলু বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী বলেছেন, অর্থনীতির যে অবস্থা, সরকারি ব্যাংকের যে অবস্থা এর জন্য নাকি সরকার দায়ী? সরকার দায়ী মানে তো সরকারপ্রধান দায়ী। সরকারপ্রধান তো আপনাকে দায়িত্ব দিয়েছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের। সেই দায়িত্ব আপনাকেই নিতে হবে। আপনি সেই দায়িত্ব নিয়ে ডিসেম্বরে অবসরে না নিয়ে, এখনই অবসরে চলে যান। অবসরে গিয়ে দেশ-জাতিকে মুক্তি দেন।’

তিনি বলেন, ‘অর্থপাচারের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা চলে গেল। পানামা পেপারে অনেকের নাম আসলো কোনো ব্যবস্থা সরকার বা অর্থমন্ত্রী নিলেন না।’

এ সময় বাবলু পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘পানামা পেপার কেলেঙ্কারির ভিত্তিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হয়েছে। অথচ আমাদের দেশের ২৭ জনের নাম এসেছে কারো বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কত হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে তার কোনো হিসাব দেননি।’

ব্যাংকের মূলধন সংকট নিয়ে তিনি বলেন, ‘সরকারি ব্যাংকের মূলধন রিফর্ম করতে ২০ হাজার কোটি টাকা দেবেন। গত বাজেটে বলেছিলেন ২ হাজার কোটি টাকা দেবেন, সেটা দিয়েছিলেনও। গত কয়েক বছরে ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা দিয়েছেন। এই টাকা কার টাকা, জনগণের টাকা। গৌরি সেনের টাকা না।’

জনতা ব্যাংক কেলেঙ্কারি নিয়ে বাবলু বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী বলেন, এর জন্য চেয়ারম্যান আবুল বারকাত দায়ী। কে দায়ী আমাদের জানার দরকার নেই, আপনি ব্যবস্থা নিয়েছেন? সবগুলো ব্যাংকে এখন রক্তক্ষরণ হচ্ছে। কথা আছে যার হয় যক্ষা তার নাই রক্ষা। অর্থনীতির যক্ষা হয়েছে এর থেকে কোনো রক্ষা নেই।’

শেয়ার বাজার কেলেঙ্কারি নিয়ে কাজী ফিরোজ রশিদ বলেন, ‘শেয়ার বাজারে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় বিপর্যয় ঘটে গেছে। সূচক নেমে গেছে তলানিতে। প্রতিটি শেয়ার নিম্নমুখী। কী দুর্ভাগ্য! এই মুহূর্তে স্টক এক্সচেঞ্জ নিয়ে নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। এই মুহূর্তে কোনো কোম্পানি যদি ২৫ শতাংশ শেয়ার তুলে নেয় তাহলে মহাবিপর্যয় নেমে আসবে।’

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘আপনি সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে নির্দেশ দেন। যেন এভাবে শেয়ার বিক্রি করতে না পারে। এটা হলে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়ে যাবে।’



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/আসাদ/সাইফুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়