আমরা আর কারো ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হবো না : রওশন এরশাদ
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান বেগম রওশন এরশাদ বলেছেন, ‘আমরা আর কারো ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হবো না। জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তনের জন্যই আমরা ক্ষমতায় যাব।’
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শনিবার দুপুরে জাতীয় পার্টির নেতৃত্বাধীন সম্মিলিত জাতীয় জোটের মহাসমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
বিরোধী দলের নেতা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু দেশ স্বাধীন করেছিলেন আর স্বাধীনতার প্রকৃত স্বাদ দেশের মানুষকে দিয়েছেন এরশাদ। কারণ আমাদের আমলে উন্নয়ন হয়েছে। মানুষ শান্তিতে ছিল। জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটেছে। কর্মসংস্থান হয়েছে। উপজেলা করে প্রশাসনকে মানুষের দোরগোড়ায় নিয়ে গিয়েছিল। গ্রাম বাংলার উন্নয়ন হয়েছিল। প্রত্যেক সেক্টরে উন্নয়ন সংস্কার হয়েছে।’
‘আমাদের আমলে দলীয়করণ সন্ত্রাস ছিল না। তাই মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ও দেশের উন্নয়নের জন্য এরশাদকে ক্ষমতায় বসাতে হবে,’ বলেন রওশন এরশাদ।
পার্টির কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেন, ‘দেশ এক অনিশ্চিত গন্তব্যের দিকে, অনিশ্চয়তার দিকে এগিয়ে চলছে। দেশে রাজনৈতিক সহিংসতা দেখা না গেলেও সাধারণ মানুষের ভিতরে এক ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে। অর্থনৈতিক মন্দা, বিনিয়োগ নেই, বেকারত্ব, শিক্ষিতরা মাদকাসক্তে জড়িয়ে পড়ছে। বেকারের সংখ্যা কোটি ছাড়িয়েছে। এই অবস্থা থেকে মানুষকে সঠিক মুক্তি দিতে পারেন এরশাদ। কারণ জাতীয় পার্টিই শান্তির দল। এরশাদই শান্তিতে ক্ষমতা গ্রহণ করেছেন, শান্তিতেই ক্ষমতা ছেড়েছেন।’
জাপা মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, ‘ক্ষমতায় আসলে অনেকের মামলা প্রত্যাহার করা হয়, কিন্তু পল্লিবন্ধু এরশাদসহ আমাদের মামলা প্রত্যাহার হয় না। আদালতে এখনো হাজিরা দিতে হয় আমাদের। এজন্যই জনগণের রায় নিতে হবে আমাদের। আপনারাই আমাদের শক্তি। আপনাদের রায় নিয়েই আমরা ক্ষমতায় যাব।’ মানুষকে মুক্তি দিতে এরশাদের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
জোটের শরিক ইসলামী ফ্রন্টের চেয়ারম্যান আল্লামা এম এ মান্নান বলেন, ‘দেশের যে ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা, এই অবস্থা থেকে উত্তরণ করতে পারেন এরশাদ। তার নেতৃত্বে গোটা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে আগামী নির্বাচনে বিজয় ছিনিয়ে আনতে হবে। তবেই মানুষ মুক্তি পাবে।’
মহাসমাবেশে সরকারের কঠোর সমালোচনা করে জাপা প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, ‘দেশের ব্যাংকিং সেক্টর, শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসের পথে। সন্ত্রাস চাঁদাবাজি চলছে। খুন, গুম বন্ধ নেই। এ অবস্থায় আগামীতে এরশাদকে ক্ষমতাসীন করা ছাড়া পরিবর্তন সম্ভব নয়।’
প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি বলেন, ‘যারা এতদিন এরশাদ ও জাতীয় পার্টিকে নিয়ে নেতিবাচক কথা বলত সেসব কথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা আজ সমাবেশ দেখে লজ্জায় মুখ ঢাকবে। আজকের মহাসমুদ্রই প্রমাণ করে পল্লিবন্ধু এরশাদই আগামী দিনের রাষ্ট্রপতি।’
প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন, ‘দুই দলের ব্যর্থতার কারণে জনগণের নাভিশ্বাস উঠেছে। আজকের মহাসমাবেশ প্রমাণ করে মানুষ ক্ষমতার পরিবর্তন চায়। দুটি দলকে মানুষ আর চায় না।’ জনগণকে মুক্তি দিতে তিনি এরশাদের লাঙলে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান।
এরশাদের সভাপতিত্বে প্রেসিডিয়াম সদস্য এস এম ফয়সল চিশতী, উপদেষ্টা রেজাউল ইসলাম ভূইয়া, ভাইস চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন রাজু, যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু ও ইসলামী ফ্রন্টের যুগ্ম মহাসচিব স ও ম আব্দুস সামাদের যৌথ পরিচালনায় মহাসমাবেশে উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য ফখরুল ইমাম এমপি, প্রফেসর এম মাসুদা রশীদ চৌধুরী, সাহিদুর রহমান টেপা, আবুল কাসেম, সোলায়মান আলম শেঠ, আব্দুল মান্নান, গোলাম কিবরিয়া টিপু, নূর ই হাসনা লিলি এমপি, মেজর অব. খালেদ আখতার, এ টি ইউ এম তাজ রহমান, লিয়াকত হোসেন খোকা এমপি, আমির হোসেন এমপি, এহয়্যা চৌধুরী এমপি, মাহজাবিন মোর্শেদ এমপি, উপদেষ্টা রিন্টু আনোয়ার, নাজমা আখতার, জহিরুল ইসলাম জহির, আরিফ খান, নুরুল ইসলাম নুরু, জহিরুল আলম রুবেল, আশরাফ সিদ্দিকী, সরদার শাহজাহান, আলমগীর সিকদার লোটন, ফখরুল আহসান শাহজাদা, মোবারক হোসেন আজাদ, বেলাল হোসেন, কারী হাবিবুল্লাহ বেলালী, ইসলামী ফ্রন্টের আল্লামা আবু সুফিয়ান কাদেরি, শাহ গোলাম আশরাফ, রেজাউল করিম তালুকদার, আবুল মোমেন, আব্দুল হাকিম, আব্দুল মতিন, মহিলা পার্টির সেক্রেটারি অনন্যা হোসেন মৌসুমী, হেনা খান, পারভিন তারেক, মানোয়ারা তাহের মানু, রিতু নূর, খালেদা আক্তার, মিনি খান, শাহনাজ পারভিন, জাপার সুলতান মাহমুদ, এম এ রাজ্জাক খান, সুজনদে, শেখ মাসুক, শ্রমিক পার্টির আশরাফুজ্জামান খান, দ্বীন মোহাম্মদ, ছাত্রসমাজের ইফতেখার আহসান ও মিজানুর রহমান মিরু প্রমুখ।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৪ মার্চ ২০১৮/নঈমুদ্দীন/সাইফুল
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন