এমপিদের প্রচারণার সুযোগ বাতিল চায় বিএনপি
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সংসদ সদস্যদেরকে প্রচার-প্রচারণায় অংশগ্রহণের সুযোগ দিয়ে নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা সংশোধনকে গভীর ষড়যন্ত্রমূলক বলে অভিহিত করেছে বিএনপি।
দলটি বলছে, এর ফলে ভোটের মাঠে সমান সুযোগ থাকবে না। এটি ভোটারদের প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা। এতে নির্বাচনী রায়ের মধ্য দিয়ে জনগণের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেওয়ার ক্ষমতাকে আটকে ফেলা হলো।
নির্বাচনী আচরণ বিধিমালার এই সংশোধনীর ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে নতুন বিধিমালা বাতিলের জোর দাবি জানিয়েছে বিএনপি।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এই বিষয়ে কথা বলেন দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
ক্ষমতাসীনদের লাভবান করতেই নির্বাচন কমিশন (ইসি) নির্বাচনী এই আচরণবিধি সংশোধন করেছে দাবি করে তিনি বলেন, একজন নির্বাচন কমিশনার এই সংশোধনীর বিরুদ্ধে নোট অব ডিসেন্ট দিলেও প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা সরকারি দলের নুন খাওয়ার অমর্যাদা করেননি। তিনি সরকারের এই ইচ্ছা পূরণের মধ্য দিয়ে সাংবিধানিকভাবে স্বাধীন কমিশনকে শেখ হাসিনার আঁচলে বেঁধে দিলেন। তিনি বর্তমান নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ক্ষমতাসীন দলের একচেটিয়া মাঠে পরিণত করতেই নিরবে-নিভৃতে কাজ করে যাচ্ছেন।
রিজভী বলেন, সিইসি চান না দেশে কোনো অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হোক। এই নির্বাচনী আইন প্রণয়নের ফলে আইনের চোখে সবাই সমান থাকলো না। এটি সংবিধানের ২৬ অনুচ্ছেদের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
‘এর ফলে কোনো নির্বাচনই অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তো হবেই না, বরং সুষ্ঠু ভোটে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হবে। কারণ স্থানীয় সাংসদরা এমনিতেই নিজ সংসদীয় এলকায় প্রভাবশালী, সকল সরকারি ও স্থানীয় প্রশাসন থাকে তাদের প্রভাবাধীনে এবং সরকারি লোকজনদের এমপিদের ভয়ে তটস্থ থাকতে হয়। তারা যদি নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেয় তাহলে নির্বাচনী মাঠ সমতল থাকার প্রশ্নই ওঠে না। সরকারের ইচ্ছা পূরণে সিইসি বাংলাদেশে ভোটের ময়দানকে অসমতল করে দিলেন।’
মাদকবিরোধী অভিযানের নামে বিচার বহির্ভূতভাবে এখন পর্যন্ত প্রায় ৭৫ জনকে হত্যা করা হয়েছে জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, গোটা দেশকে হত্যার বধ্যভূমিতে পরিণত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দিয়ে মাদক নির্মূলের নামে এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরী করা হয়েছে। এভাবে নির্বিচারে মানুষ হত্যা সকলের জন্য রীতিমতো উদ্বেগ, ভয় ও বিপদের কারণ হতে পারে। এখন ক্রমান্বয়ে বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতা-কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে এবং নতুন করে টার্গেট করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, যদিও বলা হচ্ছে তালিকা করে প্রকৃত মাদক ব্যবসায়ীদের ধরা হচ্ছে, এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন কথা। আসলে মাদক ব্যবসায়ের যারা গডফাদার তারা মূলত আওয়ামী লীগেরই লোক, আর সেই কারণেই তারা থাকছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। আওয়ামী লীগ নেতা ও টেকনাফের এমপি বদিসহ আওয়ামী লীগের শত শত বড় বড় নেতা-কর্মীদের নাম গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার হলেও এখন পর্যন্ত তাদেরকে আইনের আওতায় নেওয়া হয়নি। দেশে মাদক বিস্তারের জন্য দায়ী আওয়ামী লীগ।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৬ মে ২০১৮/রেজা/ইভা
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন